এই বোসিস্টোকে কি চিনতে পারছেন সৌম্য–তাসকিন
উইলিয়াম বোসিস্টোকে কি এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদরা চিনতে পেরেছেন? খুলনার হয়ে বিপিএলে গতকাল অপরাজিত ৭৫ রানের ইনিংস খেলা এই ক্রিকেটারকে অবশ্য ভুলে গেলেও অবাক হওয়ার সুযোগ নেই। অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার যে থমকেই ছিল বছরের পর বছর ধরে। আর ১৩ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা কজনই বা মনে রাখে।
গভীরভাবে নিয়মিত ক্রিকেটের খোঁজখবর না রাখলে এই ক্রিকেটারকে সাধারণ কোনো সমর্থকেরও চেনার কথা নয়। জানার কথা নয় এই বোসিস্টোর সঙ্গে সৌম্য, লিটন দাস, তাসকিন, এনামুল, নুরুল হাসানদের বাজে স্মৃতিও আছে!
২০১২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কথা। সেই বিশ্বকাপে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উইলিয়াম বোসিস্টো। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ইনিংসের ১২তম ওভারে সৌম্য সরকারের বলে ব্যাট করছিলেন বোসিস্টো। ওভারের পঞ্চম বলে নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটসম্যান জিমি পিয়ারসনকে মানকাডিং করেন সৌম্য।
১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৩ উইকেটে ৩৩। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক এনামুল হককে মানকাডিং আপিল তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন বোসিস্টো। এনামুল সেই অনুরোধ রাখেননি। যদিও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচটি জিততে পারেনি। ১০০ রানে ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার পরও অপরাজিত ৭১ রান করে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেন এই বোসিস্টো। সেই বিশ্বকাপে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া হেরে গেলেও টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার ওঠে বোসিস্টোরই হাতে।
২০১২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কথা। সেই বিশ্বকাপে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উইলিয়াম বোসিস্টো। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ইনিংসের ১২তম ওভারে সৌম্য সরকারের বলে ব্যাট করছিলেন বোসিস্টো। ওভারের পঞ্চম বলে নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটসম্যান জিমি পিয়ারসনকে মানকাডিং করেন সৌম্য।
২০১২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার বোটিস্টোর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ২০১৩ সালে। তবে এর পরের দিনগুলো তাঁর জন্য সুখকর হয়নি। ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন, সব মিলিয়ে মাত্র ২৮ ম্যাচের ক্যারিয়ার। কেন ৮ বছরে ২৮টি ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ পাননি, সেটা তাঁর ব্যাটিং গড়ই বলে দেয়—২২.৫৩।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে খেলেছেন সর্বশেষ ২০১৭ সালে। ৫০ ওভারের খেলায় ১৪ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৮৬, মোট রান ৩৮৯।
বিপিএলে খেলতে যেহেতু বাংলাদেশে এসেছেন, টি-টোয়েন্টির রেকর্ডই বোধ হয় আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এবারের বিপিএলে গতকাল খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলতে নামার আগে আগে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে তিনি সর্বশেষ খেলেছিলেন চার বছর আগে। সর্বসাকল্যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১২টি। এর ১১টি আবার বিগ ব্যাশ লিগে। যেখানে তাঁর সর্বোচ্চ রানের ইনিংস অপরাজিত ৩৬।
৪ বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে বোসিস্টোর কত রান করেছেন, মনে আছে নিশ্চয়! ৫০ বলে অপরাজিত ৭৫। টি-টোয়েন্টিতে যা তাঁর একমাত্র ফিফটি, সর্বোচ্চ ইনিংস তো বটেই। বিপিএলের আগে নেপালের লিগেও খেলেছেন। তবে সেই লিগ আইসিসির স্বীকৃতি পায়নি।
আরেকটি অবাক করা ব্যাপার হলো, ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কাউকেই বিপিএলে সতীর্থ হিসেবে পাননি বোসিস্টো। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে এনামুল, সৌম্য, তাসকিন, নুরুলদের সঙ্গে তাঁর শিগগিরই দেখা হবে।
তা বোসিস্টো বিপিএলে কীভাবে এলেন? সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে। এর জবাব গতকালই দিয়েছেন খুলনা টাইগার্সের কোচ তালহা জুবায়ের, ‘ মিচেল মার্শ ইমরুল কায়েসকে বসিস্টোর কথা সুপারিশ করেছিল। ও অনেক দিন ক্রিকেটের বাইরে ছিল। সেটা ব্যক্তিগত কারণে। ও এখন প্রমাণ করতে চায় ও আসলে কেমন প্লেয়ার।’