আহমেদাবাদে ড্র-ই মেনে নিল ভারত-অস্ট্রেলিয়া
দুই দলের মাঠ ছাড়তে যেন আর তর সইছিল না!
শেষ দিনে শেষ সেশনে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে লিড ততক্ষণে আড়াই শ পার। ভারতের আরও একটি ইনিংস বাকি। বোঝাই যাচ্ছিল, আহমেদাবাদ টেস্টের ভাগ্যে ড্র লেখা আছে। দুই দলের অধিনায়ক তাই আর দেরি করেননি।
ভারতকে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রায় ১৫–১৬ ওভারের মতো সময় হাতে রেখে ৮৪ রানের লিড নিয়ে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণার পরই ড্র মেনে নেয় দুই দল। হাত মেলান দুই দলের অধিনায়ক। এরপর বেশ দ্রুতই মাঠ ছেড়েছে দুই দল।
ছাড়বেই না কেন, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল অস্ট্রেলিয়ার নিশ্চিত হয়েছে আগেই। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রথম সেশনের শেষ দিকে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে মহাকাব্যিক টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ বলে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। তাতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের। তার পর থেকে ম্যাড়ম্যাড়ে এই টেস্টে রোহিত শর্মাদের আর মন টেকে!
অস্ট্রেলিয়া দুই সেশনের বেশি সময় ব্যাট করেছে ড্র নিশ্চিতের জন্য। অন্য টেস্টে ফল যা–ই হোক, ফাইনাল নিশ্চিতের জন্য এই বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজে তিন টেস্ট জিততে হতো ভারতকে। প্রথম দুই জয়ের পর তৃতীয় টেস্টটি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আহমেদাবাদে আজ শেষ দিনের খেলা শুরুর আগেই বোঝা যাচ্ছিল, অলৌকিক কিছু না ঘটলে টেস্ট ড্রয়ের দিকেই যাচ্ছে।
বিনা উইকেটে ৩ রান নিয়ে কাল চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। আজ শেষ দিনে ড্র নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল, যতটা সম্ভব ব্যাটিং করে ভারতকে ব্যাটিংয়ের জন্য যে সময়টুকু দেওয়া হবে, লক্ষ্যটা যেন ততক্ষণে মুঠোর বাইরে নেওয়া যায়।
মরা পিচে ট্রাভিস হেডের ১৬৩ বলে ৯০ ও মারনাস লাবুশেনের ২১৩ বলে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংস সেটাই নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যেই হ্যাগলি ওভালে ‘ক্ল্যাসিক’ টেস্ট ম্যাচ ভারতকে ফাইনালের নিশ্চয়তা পাইয়ে দেয়। তখনই একবার হাত মিলিয়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ২ উইকেটে ১৭৫ রানে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল। এর মধ্য দিয়ে ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল ভারত। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি ভারতের পক্ষে ২–১ স্কোরলাইনে শেষ হলো।
চতুর্থ দিনে উসমান খাজা পায়ে চোট পাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ওপেন করেন ম্যাথু কুনেমান (৬)। রবিচন্দ্রন অশ্বিন তাঁকে সকালের সেশনেই তুলে নেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে হেড ও লাবুশেন ২৯২ বলে ১৩৯ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে ড্রয়ের পথে নিয়ে যান।
হেডকে অক্ষর প্যাটেল তুলে নেওয়ার পর লাবুশেনের সঙ্গে ১১৪ বলের জুটিতে ২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন। ভারত অধিনায়ক রোহিত এরপর আর ব্যাটিংয়ে নামার প্রয়োজন মনে করেননি। আর অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথও বুঝেছিলেন, এখান থেকে হারের সম্ভাবনা নেই।