মুমিনুলের ব্যাটে ‘দুর্লভ’ সেঞ্চুরি

টেস্টে ১৩তম সেঞ্চুরি করার পথে এমন সুইপ অনেকবারই খেলেছেন মুমিনুল হকএএফপি

সেঞ্চুরিটা লাঞ্চের আগে হবে, না পরে-মুমিনুল হক যেভাবে খেলছিলেন, তাতে সংশয় ছিল এতটুকুই!

মুমিনুল অপেক্ষা বাড়ালেন না, টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরিটা করেই লাঞ্চে গেলেন। যে সেঞ্চুরিটাকে ‘দুর্লভ’ বলতেই হবে।  দেশের বাইরে এটি তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ভারতের বিপক্ষে প্রথম। মুমিনুল দেশের বাইরে প্রথম তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে। কানপুরে ১০ বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন কোনো সফরকারী দলের ব্যাটসম্যান। ২০০৪ সালে সর্বশেষ যা পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু হল।

শুক্রবার শুরু হওয়া কানপুর টেস্টের বৃষ্টি-বিঘ্নিত প্রথম দিনটায় ৪০ রান করেছিলেন মুমিনুল। দুই দিন বিরতির পর আজ আবার শুরু হওয়া ম্যাচে প্রথম ড্রিংকস-বিরতির আগেই ফিফটি পেয়ে যান মুমিনুল। তিন সঙ্গীকে হারিয়ে ফেললেও মুমিনুলের ব্যাটে রানের গতি শুধু বেড়েছে। ১১০ বলে ফিফটি ছোঁয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পরের ৫০ রান করেছেন ৬২ বলে। ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত যেতেই ৭টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন।

মুমিনুল সেঞ্চুরিটা পেয়েছেন লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা ওভারের দ্বিতীয় বলটাকে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরেই সেঞ্চুরি উদ্‌যাপনে মাতেন তিনি।

সেঞ্চুরির পর মুমিনুল
এএফপি

৪, ৪, ৬-তিনটি স্কোরিং শটেই ৭৮ থেকে ৯২-এ পৌঁছে যাওয়ার পরই যা একটু নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিলেন মুমিনুল। অশ্বিনের বলে একবার কাট করতে গিয়ে ক্যাচ তুললেও ঋষভ পন্ত নিতে পারেননি ক্যাচ। বল যে ব্যাটে লেগেছিল সেটি অবশ্য বোঝা গিয়েছিল আল্ট্রাএজ দেখার পর। মোহাম্মদ সিরাজের করা পরের ওভারে অবশ্য ভক্তদের ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন মুমিনুল । প্রথম স্লিপে অল্পের জন্য তাঁর ক্যাচ নিতে পারেননি বিরাট কোহলি। ওই বলে ১ রান নিয়ে ৯৬-এ পৌঁছানো মুমিনুল পরের ওভারেই পেয়ে যান সেঞ্চুরি। লাঞ্চে তিনি গেছেন ১০২ রান নিয়ে। বাংলাদেশের রান তখন ৬ উইকেটে ২০৫। মুমিনুল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১০৭ রানে।

১৩
টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরি মুশফিকুর রহিমের—১১টি।

ভারতে পঞ্চম টেস্ট খেলা মুমিনুল সে দেশে টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোরটা কানপুর টেস্টের প্রথম দিনেই পেয়ে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ইন্দোর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৭-ই ছিল তাঁর সর্বোচ্চ। সেই মুমিনুল আজ ফিফটির আগেই আউট দিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। সিরাজের বলে মুমিনুলের ক্যাচ নিয়েছিলেন যশস্বী জয়সোয়াল। আম্পায়ার আঙুল তোলার পর তাৎক্ষণিক রিভিউ নেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। স্নিকো মিটারে দেখা যায় বল ব্যাটে লাগেনি, প্যাডে লেগে গেছে যশস্বী জয়সোয়ালের হাতে। ৪৮ রানে দাঁড়ানো মুমিনুল পরের বলেই পুল করে চার মেরে পেয়ে যান ফিফটি। পুল ছাড়াও কাট-সুইপের ফুলঝুড়িও ছুটেছে মুমিনুলের ব্যাট থেকে।

আর তাতেই একপ্রান্ত ধরে রেখে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেলেন মুমিনুল।

আরও পড়ুন