শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব-পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ দুটি হওয়ার কথা ছিল গতকাল। সাভারে দুর্ঘটনায় তৈরি হওয়া যানজটে দলগুলো বিকেএসপিতে পৌঁছাতে পারেনি বলে ম্যাচ দুটি নিয়ে আসা হয় আজ। বিএসএসপির ৩ নম্বর মাঠে রূপগঞ্জকে ৬০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে শেখ জামাল, ৪ নম্বর মাঠে প্রাইম ব্যাংক ৪ উইকেটে হারায় পারটেক্সকে। দিনের অন্য ম্যাচে ফতুল্লায় গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে উড়িয়ে দিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটারস।
শেখ জামাল-রূপগঞ্জ
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই সাইফ হাসানকে হারায় শেখ জামাল, শিগগিরই তারা পরিণত হয় ২৬ রানে ২ উইকেটে। সেখান থেকে দলটিকে টানেন ওপেনার সৈকত আলী। ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি, আল-আমিন হোসেনের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ১০৬ বলে ৯৩ রানের ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে মারেন ৪টি ছক্কা।
সৈকতের ৯৩ রানের সঙ্গে ছয়ে নামা ইয়াসির আলীর ৪৩ বলে ৪০ ও আটে নামা জিয়াউর রহমানের ৩২ বলে ৪০ রানের ইনিংসে শেখ জামাল যায় ২৪৭ রান পর্যন্ত। টপ অর্ডারের তিনজনের পর ইয়াসিরকেও ফেরান রূপগঞ্জ পেসার আল-আমিন।
তবে আল-আমিনের দলের ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারেননি মোটেও। ৯৩ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপরও যে রূপগঞ্জ ১৮৭ রান পর্যন্ত গেছে, সেটি নবম উইকেটে আমিনুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান রানার ৮৮ রানের জুটিতে। ৪৪তম ওভারে গিয়ে ৮৫ বলে ৬৪ রান করে রিপন মণ্ডলের বলে এলবিডব্লু হন আমিনুল, যিনি এ নিয়ে টানা দুটি ফিফটি করলেন। তবে দুটিতেই হারল দল। আমিনুল আউট হওয়ার পরের ওভারে শফিকুল ইসলামের বলে ক্যাচ তোলেন ৫০ বলে ৪৯ রান করা মেহেদী।
৮ ম্যাচে শেখ জামালের এটি ষষ্ঠ জয়, পয়েন্ট তালিকার এখন ২ নম্বরে তারা। অন্যদিকে ৮ ম্যাচে ৫ জয়ে রূপগঞ্জ আছে ৫ নম্বরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৪৭/৯ (সৈকত ৯৩, জিয়াউর ৪০, ইয়াসির ৪০; আল-আমিন ৪/৪৪, আমিনুল ২/২০, শুভাগত ১/২৯)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৪৪.৪ ওভারে ১৮৭ (আমিনুল ৬৪, মেহেদী ৪৯, তৌফিক ২৯; টিপু ৩/২৬, সাইফ ৩/৪৪, রিপন ১/২৩)
ফল: শেখ জামাল ৬০ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৈকত আলী
পারটেক্স-প্রাইম ব্যাংক
পয়েন্ট তালিকার নিচের দিকে থাকা পারটেক্সের বিপক্ষে প্রাইম ব্যাংক পেয়েছে সহজ জয়ই। পারটেক্সের দেওয়া ২০৯ রানের লক্ষ্য প্রাইম ব্যাংক ৪ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়েছে অধিনায়ক ও ওপেনার তামিম ইকবালের ১০০ বলে ৭৪ ও পাঁচে নামা মোহাম্মদ মিঠুনের ৬৬ বলে ৫১ রানের ইনিংসে।
আগে ব্যাটিং করা পারটেক্স উইকেট হারায় নিয়মিত বিরতিতে। তিনে নামা অধিনায়ক মিজানুর রহমানের ৪৪ বলে ৪৭ রানের ইনিংসই তাদের সর্বোচ্চ। ৩টি করে উইকেট নেন প্রাইম ব্যাংকের মেহেদী হাসান ও রুবেল হোসেন। পুরো ৫০ ওভার খেলে ২০৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি পারটেক্স।
রানতাড়ায় ৯২ রানে ৩ উইকেট হারালেও এক প্রান্তে তামিমের ইনিংস এগিয়ে নেয় প্রাইম ব্যাংককে। সর্বশেষ ৫ ম্যাচে এ বাঁহাতির এটি চতুর্থ ফিফটি। সেঞ্চুরি নাগালে থাকলেও আসাদুজ্জামানের বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৭৪ রানে, ইনিংসে মারেন ৫টি চার। মিঠুন তাঁর ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছক্কা।
প্রাইম ব্যাংকেরও এখন ৮ ম্যাচ শেষে ৬টি জয়। তবে নেট রানরেটে তারা (০.৮৭৩) শীর্ষ দুইয়ে থাকা আবাহনী (২.৪৭৪) ও শেখ জামালের (০.৯৭৮) চেয়ে পিছিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২০৮/৯ (মিজানুর ৪৭, তানভীর ৪০, গাফফার ২৪, মেহেদী ৩/৩৬, রুবেল ৩/৩২, অলক ১/৪)
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ২১১/৬ (তামিম ৭৪, মিঠুন ৫১; রাকিবুল ২/২৮, আসাদুজ্জামান ১/৩১)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল
গাজী গ্রুপ-গাজী টায়ার্স
লড়াইটা বলা যায় ‘বড় ভাই-ছোট ভাই’-এর। সেখানে ‘বড় ভাই’ গাজী গ্রুপের কাছে উড়ে গেছে ‘ছোট ভাই’ গাজী টায়ার্স। পেসার রুয়েল মিয়ার তোপে ২৫.৪ ওভারে ৮৪ রানেই গুটিয়ে যায় গাজী টায়ার্স। তাদের চারজন আউট হয়েছেন শূন্য রানে, দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন মাত্র দুজন।
৬ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে রুয়েল নেন ৫ উইকেট। ১৭ ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে এটিই তাঁর সেরা বোলিং, ৫ উইকেট নিলেন দ্বিতীয়বার। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাহফুজুর রহমান ও শেখ পারভেজ।
রানতাড়ায় ১৩ রানে ওপেনার আনিসুল ইসলাম ফিরলেও পিনাক ঘোষ ও অধিনায়ক মেহেদী মারুফের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৯.৩ ওভারেই জয় নিশ্চিত হয় গাজী গ্রুপের। ৮ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে গাজী গ্রুপ এখন তালিকার ছয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ২৫.৪ অভারে ৮৪ (মহব্বত ৪১, শামীম ১৬; রুয়েল ৫/১৮, মাহফুজুর ২/১৮, পারভেজ ২/২৭)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১৯.৩ ওভারে ৮৬/১ (পিনাক ৪২*, মারুফ ৩০*; আরিদুল ১/১৫)
ফল: গাজী গ্রুপ ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রুয়েল মিয়া