‘বাবর ক্লাসের সেরা ছাত্র, কিন্তু ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ফেল’
বিশ্বকাপে সর্বশেষ দুই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজমও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন। কিউইদের রানপর্বত টপকাতে নেমে ৬৩ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে তাঁর সঙ্গে ফখর জামানের অবিচ্ছিন্ন ১৯৪ রানের জুটিতেই বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটি জেতে পাকিস্তান।
তবে বাবরের এমন ইনিংসও পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের মন ভরাতে পারছে না। সাবেক ফাস্ট বোলার সিকান্দার বখত যেমন বাবরের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর সাবেক অলরাউন্ডার আবদুল রাজ্জাকের মতে, বাবর বিশ্বমানের ক্রিকেটার নন। উদাহরণ হিসেবে রোহিত শর্মার প্রসঙ্গ সামনে এনেছেন এবং রোহিতকে অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত যেখানে ৫৫.২৫ গড়ে, ১২২.৭৭ স্ট্রাইক রেটে ৪৪২ রান করেছেন; পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর সেখানে ৪০.২৮ গড়ে, ৮২.৬৯ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৮২ রান। শীর্ষ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় রোহিত এ মুহূর্তে আছেন চারে, বাবর শীর্ষ পনেরোতেও নেই।
পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল ‘জিও সুপার’-এর এক অনুষ্ঠানে রোহিতের সঙ্গে বাবরের এই পার্থক্যের বিষয়টিই সামনে এনেছেন রাজ্জাক, ‘রোহিতকে দেখুন, সে প্রথম ওভারে ১০ রান নিতে প্রস্তুত, দ্বিতীয় ওভারে ১৫। কিন্তু আমাদের অধিনায়কের (বাবর আজম) খেলার ধরন আলাদা। ওর উচিত রোহিতকে দেখা, সে কী করছে।’
রাজ্জাকের চোখে বাবর নয়, ফখর জামান পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান, ‘ফখর জামান ১ নম্বর ব্যাটসম্যান। নিউজিল্যান্ডের সব ব্যাটসম্যান ওর প্রশংসা করেছে। আমাদের অধিনায়ক ওই মানের নয়। তারাই বিশ্বমানের খেলোয়াড়, যারা প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে পারে। আমাদের সময় ম্যাথু হেইডেন, সনাৎ জয়াসুরিয়া, শচীন টেন্ডুলকার, রিকি পন্টিংরা এ ধরনের ছিলেন।’
একই অনুষ্ঠানে সিকান্দার বখত বলেছেন, ‘আমরা এখনো বিশ্বের ১ নম্বর ব্যাটসম্যানকে নিয়ে কথা বলেই চলেছি। আমার প্রশ্ন হলো, এ ধরনের আলোচনা ভালো চুক্তি পেতে আদৌ সাহায্য করে কি না। মনে হচ্ছে, সে ক্লাসের সেরা ছাত্র, কিন্তু ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ফেল করছে।’
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল ভারত। সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দলও স্বাগতিকেরা। রাজ্জাক মনে করেন, ভারতীয় দলের একতা তাদের দাপট দেখাতে সাহায্য করছে, ‘ওরা সত্যিকার অর্থেই দেশের জন্য খেলছে। বিরাট কোহলিকে দেখুন, যখন ওর সতীর্থ ব্যাটসম্যানরা রান করে, ওর উদ্যাপন দেখে মনে হয় সে ওই রান করেছে। ওদের বোলিং–ব্যাটিং সবকিছুই আক্রমণাত্মক। ওরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে, সেটার কৃতিত্ব আমি রোহিত শর্মাকে দেব।’
ঘরের মাঠের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারাতেও ভারতের প্রশংসা করেছেন রাজ্জাক, ‘ওরা নিজেদের কন্ডিশন থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করছে। পিচও তাদের অনুকূলে। মনে হচ্ছে, ভারত জানে, পিচের আচরণ কেমন হতে চলেছে।’
তবে সিকান্দার বখত মনে করেন, ভারত দেশের বাইরের বেশ শক্তিশালী, ‘পাকিস্তান যদি নিজেদের মাটিতে খেলে, তাহলে তারাও কন্ডিশনের সর্বোচ্চ সুবিধা পাবে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না ভারতীয় পেসাররা এশিয়া কাপ ফাইনালে কী করেছিল। শ্রীলঙ্কাও তো নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনে খেলেছিল। কিন্তু এশিয়া কাপ ফাইনালে ওরা ভারতের কাছে ৫০ রানে অলআউট হয়েছিল। ওদের বোলিং শক্তিশালী, ব্যাটিয়েও ভালো। স্পিনাররাও ভালো করছে। (হার্দিক) পান্ডিয়া বিশ্বকাপ ছিটকে পড়েছে। তবু ভারত জিতেই চলেছে।’