ক্ষুব্ধ দিল্লি কোচ পন্টিং, কীভাবে পাঁচ বিদেশি খেলায় রাজস্থান
মাত্র রাজস্থান রয়্যালসের ১৮৫ রান তাড়া করতে নেমেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। কিন্তু দুই বল হতে না হতেই খেলা বন্ধ। কেন? ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে কথা বলছিলেন আম্পায়ার নিতিন মেনন। এগিয়ে এসে আলাপে যোগ দেন রাজস্থানের জস বাটলারও।
কিন্তু ঘটনার মূল চরিত্র আসলে তাঁদের কেউ নন। ডাগআউটের পাশে দিল্লি কোচ রিকি পন্টিং তখন ক্ষুব্ধ। তাঁকে কিছু একটা বোঝাচ্ছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার। কিছুক্ষণ পরে দেখা গেল আম্পায়ার পন্টিংকে একটা কাগজ দেখাচ্ছেন। পরে জানা গেছে, রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ এনেছিলেন পন্টিং। কিন্তু নিয়ম যে আসলে কী, রাজস্থান ভুল করেছে কি না, সেটাই তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার।
গতকাল আইপিএলে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজস্থান ও দিল্লি মুখোমুখি হয় জয়পুরে। দিল্লির ইনিংসের শুরুতেই খেলা থমকে যায় বিদেশি খেলোয়াড় নিয়ে তৈরি হওয়া ওই পরিস্থিতিতে। রাজস্থান প্রাথমিকভাবে একাদশে রেখেছিল তিন বিদেশি—জস বাটলার, শিমরন হেটমায়ার ও ট্রেন্ট বোল্ট। ফিল্ডিংয়ে নামার সময় তারা হেটমায়ারকে তুলে নিয়ে ইমপ্যাক্ট বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামায় দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার নান্দ্রে বার্গারকে। তবে ঝামেলাটা বাধে রিয়ান পরাগের জায়গায় এরপর রোভমান পাওয়েল ফিল্ডিংয়ে নামলে।
দিল্লির টিম ডিরেক্টর সৌরভ গাঙ্গুলী ও কোচ পন্টিংয়ের মতে, পাওয়েলকে ফিল্ডিংয়ে নামানো ঠিক হয়নি। এক ম্যাচে চারজন বিদেশি খেলতে পারেন। বার্গারকে ইমপ্যাক্ট বদলি করার মাধ্যমে রাজস্থানের সেই কোটা পূরণ হয়ে গেছে। পাওয়েল ম্যাচে পঞ্চম বিদেশি হিসেবে নেমেছেন, যা নিয়মবিরুদ্ধ।
দিল্লি ডাগআউটের এই অভিযোগই খণ্ডাতে গিয়েছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার মদনগোপাল কাপুরাজ। টিম শিটে খেলোয়াড়দের নাম দেখে বোঝাতে চেয়েছেন, নিয়মের বাইরে কিছু হয়নি। পন্টিংও একটা পর্যায়ে ক্ষান্ত দিয়ে ডাগআউটে ফেরেন। পাওয়েলও ফিল্ডিং চালিয়ে গেছেন। শেষ পর্যন্ত রাজস্থানের কাছে ম্যাচটি ১২ রানে হেরেছে দিল্লি।
কিন্তু কোন নিয়মের কারণে রাজস্থান পঞ্চম বিদেশিকে মাঠে নামাল? আইপিএলের প্লেয়িং কন্ডিশন কী বলে?
এ–সংক্রান্ত ধারা ১.২.৫ বলে, ‘একটি দল ম্যাচের শুরুর একাদশে চারজনের বেশি বিদেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না। আর ধারা ১.২.৬ বলে, একটি দল একই সময়ে চারজনের বেশি বিদেশিকে মাঠে রাখতে পারবে না। যদি কোনো দল চারজন বিদেশিকে দলে রাখে, সে ক্ষেত্রে বদলি হিসেবে আরেকজন বিদেশিকে ফিল্ডিংয়ে নামানো যাবে একজন বিদেশিরই জায়গায়। আর কোনো দল যদি চারজনের কম বিদেশিকে শুরুর একাদশে রাখে, তখন বিদেশি খেলোয়াড় বদলি করা যাবে, তবে একই সময়ে বিদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা চারের বেশি হতে পারবে না।’
পাওয়েল যখন বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন, তখন মাঠে দলটির বিদেশির সংখ্যা চারই হয়েছে। কারণ, হেটমায়ার ততক্ষণে বদলি হয়ে একাদশ থেকে বেরিয়ে গেছেন। বাটলার, বোল্ট, বার্গার, পাওয়েলসহ মাঠে বিদেশি খেলোয়াড় চারজনই—এটাই দিল্লি কোচ পন্টিংকে বুঝিয়েছেন চতুর্থ আম্পায়ার।