ফারুকের বিরুদ্ধে নাজমূলের অভিযোগ, ফারুক কী বলছেন

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, পাশে পরিচালক নাজমূল আবেদীনপ্রথম আলো

ভেতরে-ভেতরে মতবিরোধের একটা চাপা উত্তেজনা ছিলই। এই উত্তেজনা বিসিবির সাবেক দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকে সরিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত নতুন দুই পরিচালকের মধ্যে। একজন সভাপতি ফারুক আহমেদ ও অন্যজন নাজমূল আবেদীন।

দুজনের মধ্যে চলমান সমস্যাটা নাজমূল আবেদীন প্রকাশ্যে আনেন আজ একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত তাঁর এক সাক্ষাৎকারে। নাজমূল আবেদীন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বিসিবি সভাপতি সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে অনেকের সামনে এমন এক মন্তব্য করেছেন, যেটি তিনি আশা করেননি।

নাজমূল বলেন, ‘বলতে চাই না মন্তব্যটা কী ছিল। সেটা আমাকে খুবই হতাশ করেছে। সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে এই মুহূর্তে ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আমাকে সেভাবে তাঁর আস্থায় নিচ্ছেন না।’

আরও পড়ুন

নাজমূল এমনও মন্তব্য করেন, ‘অনেক সময় মনে হয় আমি বোর্ডে না থাকলেই ভালো। কারণ, আমি বোর্ডের বাইরে থেকে যেভাবে কাজ করতে পারি, যে ধরনের আলাপ-আলোচনা করতে পারি, সেটা বোর্ডে থেকে আমার পক্ষে করা সম্ভব না। বোর্ডে থাকলে আমাকে কাজ করতে হবে।’ বর্তমান বোর্ডে স্থায়ী কমিটিগুলো এখনো পুনর্গঠন না হওয়াতেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। নাজমূলের অভিযোগ, বোর্ডে তিনি যে রকম ভূমিকা রাখতে পারতেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা রাখতে পারছেন না।

একটা প্রতিষ্ঠানে মতের অমিল হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। এখানে দোষের কিছু দেখি না। এগুলো যখন আগে প্রেসে চলে আসে, তখন দোষের। এগুলো আগে নিজেরা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ

বিষয়টি নিয়ে নাজমূল আবেদীনের সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এ নিয়ে সিলেটে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিপিএল উপলক্ষে ফারুক ও নাজমূল দুজনই বর্তমানে সিলেটে আছেন।

প্রথমে দুটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলার পর সভাপতি কথা বলেছেন অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও। নাজমূল আবেদীন তখন উপস্থিত না থাকলেও প্রথম দুটি চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলার সময় ফারুক আহমেদের সঙ্গে তিনিও উপস্থিত ছিলেন।

নাজমূল আবেদীনের অভিযোগ নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘যখন কাজের মাত্রা বেশি ও লোকসংখ্যা কম থাকে, তখন অনেক দিকে নজর দিতে হয়। তখন ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। ওই জিনিস থেকেই উনি হয়তো চিন্তা করেছেন কাজ ঠিকমতো করতে পারছেন না।’

নাজমূল আবেদীন তাঁর যে মন্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়েছেন, তা নিয়ে ফারুকের ব্যাখ্যা, ‘সেদিন ওপেনিং সিরিমনি (বিপিএলের) ছিল, উপদেষ্টা মহোদয় আসতে পারেননি, টিকিটের চাপ ছিল। সব মিলে দিনটা আমার জন্য ভালো ছিল না। আপনারা জানেন প্রেসিডেন্ট বক্সেও একটা ঘটনা ঘটেছিল। এ নিয়ে আমি মন্তব্য করিনি, এখনো করছি না। তবে ঘটেছিল। তখন কার সঙ্গে কী বলেছি, হয়তো আমার মনেও নেই। তবে একটা প্রতিষ্ঠানে মতের অমিল হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। এখানে দোষের কিছু দেখি না। এগুলো যখন আগে প্রেসে চলে আসে, তখন দোষের। এগুলো আগে নিজেরা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।’

আরও পড়ুন

নাজমূল আবেদীনকে নিজের ‘সিনিয়র’ উল্লেখ করে ফারুক বলেছেন, সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, ‘ফাহিম ভাই আমার বয়োজ্যেষ্ঠ, সিনিয়র মানুষ। আমার সিনিয়র প্লেয়ার, অনেক সিনিয়র। সেদিক বিবেচনা করে উনি হয়তো মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘যেকোনো কিছুই কথা বলে ঠিক করে ফেলা যায়। মোটকথা, আমরা বিষয়টার সমাধান করে ফেলেছি।’

ফারুক বললেন, সমাধান হয়ে গেছে।
প্রথম আলো

অনেক সিদ্ধান্ত একাই নেন, অন্যদের ভূমিকা রাখতে দেন না—এসব অভিযোগ অবশ্য মেনে নেননি ফারুক। জানা গেছে, বিসিবির বর্তমান সক্রিয় পরিচালকদের মধ্যে বেশ কয়েক দিন আগেই কয়েকটি স্থায়ী কমিটির দায়িত্ব অলিখিতভাবে পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। অনেকে সেভাবে দায়িত্ব পালনও শুরু করেছেন। নাজমূল আবেদীনকে যেমন দেওয়া হয়েছে ক্রিকেট পরিচালনা ও মহিলা উইংয়ের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির দায়িত্ব।

আরও পড়ুন