২৩৬ করেও কি বাংলাদেশের জয়ের আশা করা যায়
নাজমুল হোসেন ছিলেন বলে…না, তিনি সেঞ্চুরি করে ফেলেননি। খুব যে বড় রান এনে দিয়েছেন দলকে, সেটাও নয়। তবে টপ–অর্ডারদের ব্যর্থতায় খাতায় আরও একবার নিজের নাম না লিখিয়ে, এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের ক্রিজে আসা ও যাওয়ার দৃশ্যটা তিনি দেখে গেছেন—এটাই–বা কম কী! নাজমুলের দাঁড়িয়ে থাকা এবং বাকিদের আসা–যাওয়া মিলিয়েই বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান তুলেছে।
নাজমুলকে আজ ইনিংস উদ্বোধনে নামতে হয়েছে। আগের ম্যাচের ওপেনার সৌম্য সরকার আজ একাদশে জায়গা পাননি— মাহমুদউল্লাহ নেন তাঁর জায়গা। কিন্তু তিনি তো আর ওপেনার নন, তাই সৌম্যের বদলে ওপেনিংয়ে নামেন নাজমুল। ওয়ানডেতেই নাজমুলের এমন অভিজ্ঞতা এর আগে ছিল ছয়বার।
শুরুতে তানজিদ হাসানকে নিয়ে ভালোই ব্যাট করছিলেন। তাঁদের ৪৫ রানের জুটি ভাঙে ব্রেসওয়েলের করা নবম ওভারে। ২৪ বলে ২৪ রান করা তানজিদ ভালো করেননি—তা বলাই যায় এবং সেটাই সত্যি।
কিন্তু পরের ব্যাটসম্যানরা যেন তানজিদকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশনেই নেমে গেলেন। পরের চারজনের মধ্যে কেবল একজনই রানসংখ্যা দুই অঙ্কে নিতে পারলেন— মেহেদী হাসান মিরাজ ১৪ বলে ১৩ রানের বেশি করেননি। বাকি তিনজন তাওহিদ হৃদয় ২৪ বলে ৭, মুশফিকুর রহিম ৫ বলে ২ ও মাহমুদউল্লাহ ১৪ বলে ৪ রান করে আউট। যাঁদের ঝুলিতে অভিজ্ঞতার কমতি নেই ও যাঁদের একাদশে ধরে রাখতে এত রদবদল— সেই মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর সম্মিলিত রান ১৯ বলে ৬!
তাঁদের দুজন ও হৃদয়কে আউট করেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। টানা ১০ ওভার করা এই বোলারের ফিগার—১০ ওভারে ২৬ রানে ৪ উইকেট। তাঁর এমন বোলিংয়ের পর বাংলাদেশ যে একদম গুঁড়িয়ে যায়নি, সেই কৃতিত্ব জাকের আলী ও নাজমুলের ৬৭ বলে ৪৫ রানের জুটির।
তাঁদের জুটিতে বাংলাদেশ এগোলেও বেশি দূর যেতে পারেনি। অধিনায়ক নাজমুলের ফেরাই তা হতে দেয়নি। ও’রুর্কের বল তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন, অনেকটুকু দৌড়ে ১১০ বলে ৯ চারে ৭৭ রান করা ব্যাটসম্যানের ক্যাচ নেন ব্রেসওয়েল।
এরপর আর গল্পের খুব একটা বাকি থাকার কথা নয়— তবে জাকের আলী লড়াইটা ছাড়েননি। সঙ্গী হিসেবে কিছুক্ষণ তিনি পেয়েছিলেন রিশাদ হোসেনকে। তাঁদের জুটি অবশ্য ৩৫ বলে ৩৩ রানেই থেমেছে, তাতে রিশাদ ২৫ বলে ২৬ রানের অবদান রেখে ম্যাট হেনরির বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন।
রিশাদের বিদায়ের পরও বাংলাদেশের আশা হয়ে ছিলেন জাকের। তাঁর ব্যাটিংয় যে ধরন—শেষ ওভারগুলোয় হাত খুলবেন, এই প্রত্যাশা করাই যায়। কিন্তু শেষদিকে তাঁর স্ট্রাইক পাওয়াই কঠিন হয়ে উঠেছিল। ৪৫তম ওভারের পুরোটাই যেমন স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টা করেও পারলেন না তাসকিন, ওভারটি হলো মেডেন।
ওই কথাটা মনে রেখেই হয়তো ৪৯তম ওভারের প্রথম বলেই উইকেটরক্ষক টম ল্যাথামের হাতে রেখেই দৌড় শুরু করেন জাকের— কিন্তু তিনি দৌড়ে আসার আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন ল্যাথাম। ৫৫ বলে ৪৫ রান করে জাকের ফেরার পর যা হওয়ার তা–ই হলো, বাংলাদেশের আড়াই শ ছাড়িয়ে যাওয়ার যে আশা ছিল, তা শেষ হয়ে যায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৩৬/৯ (নাজমুল ৭৭, জাকের ৪৫, রিশাদ ২৬, তানজিদ ২৪, মিরাজ ১৩; ব্রেসওয়েল ৪/২৬, ও’রুর্ক ২/৪৮, জেমিসন ১/৪৮)।