একদিন নাজমুল ইসলাম, আরেক দিন তৌহিদ হৃদয়। তাঁদের কেউ না হলে আছেন জাকির হাসান—এবারের বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের টপ অর্ডারে কেউ না কেউ উজ্জ্বল হয়ে উঠছেনই। গতকাল তো খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে একজন নয়, জ্বলে উঠলেন দুজন। ওপেনার নাজমুল দ্রুত আউট হয়ে গেলেও তিনে নামা জাকিরের সঙ্গে হৃদয়ের জুটিটা জমে যায়। তাতে সিলেটও পেয়ে যায় ৪ উইকেটে ১৯২ রান।
ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও সিলেট প্রায় প্রতি ম্যাচেই নতুন নতুন নায়কের খোঁজ পাচ্ছে। গতকালও যেমন এবারের আসরে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা রুবেল হোসেন ৩৭ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়ে খুলনার রানতাড়া কঠিন করে তোলেন। সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে বিপিএলে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করলেন রুবেল। তাতে ৯ উইকেটে ১৬১ রানে থামে খুলনার ইনিংস। ৩১ রানের জয়ে প্রথম দল হিসেবে ‘প্লে–অফ’ নিশ্চিত করে ফেলেছে সিলেট। খেলা শেষে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিভর্তি দর্শকের উদ্দেশে ল্যাপ অব অনার দিয়েছেন সিলেটের ক্রিকেটাররা।
বড় রান তাড়া করে সফল হতে খুলনার টপ অর্ডারকেও জ্বলে উঠতে হতো। তৃতীয় ওভারের মধ্যে অ্যান্ড্রু বলবার্নি ও তামিম ইকবালকে আউট করে সেটি হতে দেননি রুবেলই। শাই হোপ ও মাহমুদুল হাসান ধাক্কাটা সামলে নিলেও তাঁদের ৩৫ বলে ৫৪ রানের জুটি দীর্ঘ হয়নি। খুলনা তবু আশায় ছিল আজম খানের একটি বিস্ফোরক ইনিংসের। চার-ছক্কা মেরে আজম সিলেট দলে ভীতি ছড়ালেও সেটি দীর্ঘ হতে দেননি তাঁরই স্বদেশি ইমাদ ওয়াসিম। তাঁর আর্ম বলে মারতে গিয়ে ১৭ বলে ৩৩ রান করে আউট হন আজম। সিলেটের অষ্টম জয়ের দিন কুঁচকির চোটে পড়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২.১ ওভার বল করে মাঠ ছাড়েন তিনি। ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোটে পড়েন আরেক পেসার রেজাউর রহমানও।
সিলেট শুরুতে মন্থর ব্যাটিংই করেছে। প্রথম ৫ ওভারে রান ছিল মাত্র ২৬। পরে শিশিরে বল ভিজে যাবে বলে খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির পাওয়ারপ্লেতে পেসার না এনে স্পিন দিয়ে কাজ চালাচ্ছিলেন। তবে নাসুম আহমেদের করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১৬ রান তুলে ইনিংসের গতিপথ পাল্টে দেন জাকির-হৃদয় জুটি।
এরপর তো খুলনার অনভিজ্ঞ পেসার নাহিদ রানার ওপর রীতিমতো চড়ে বসেন হৃদয়। লেট কাট, পুল আর লফটেড ড্রাইভে খুঁজে নিতে থাকেন বাউন্ডারি। ওদিকে খুলনার বোলাররা নো বল, ফ্রি হিট আর বাই রান দিয়েও সিলেটের রান বাড়িয়েছেন। হৃদয় ৩৪ বলে বিপিএলে নিজের চতুর্থ ফিফটি করে এগোচ্ছিলেন আরও বড় রানের দিকে। ৩৬ বলে ফিফটি করা জাকিরও পরে চার-ছক্কায় রানের গতি বাড়ান। ১৬তম ওভারে রানার বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে আউট হন ৪৯ বলে ৭৪ রান করা হৃদয়। ১৫১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে চার ৯টি। পরের ওভারে আউট হওয়া জাকির শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে করেছেন ৫৩ রান।