চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের ম্যাচ আয়োজন করতে চায় বিসিবি
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কীভাবে হবে, এখনো তা পরিষ্কার নয়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম বলছে, দুই শর্তে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে রাজি হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। আইসিসির সাম্প্রতিক অনলাইন সভায় কী আলোচনা হয়েছে, সে ব্যাপারেও কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি এখনো।
তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে এই ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে যেতে পারে ৫ ডিসেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় আইসিসির সভায়। টুর্নামেন্টে ভারতের ম্যাচগুলো কোথায় হবে, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পিসিবি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ২৯ নভেম্বরের অনলাইন সভায়। এরপর ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দুই বোর্ডের মধ্যে কী আলোচনা হলো, বা আদৌ হলো কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
তবে এর মধ্যেই নতুন খবর—চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেলে হলে তার অংশ হতে চাইবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির একটি সূত্র কাল জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে হলে বাংলাদেশ চাইবে ভারতের ম্যাচগুলো ঢাকায় আয়োজন করতে। এ প্রসঙ্গে বিসিবির এক কর্মকর্তার মন্তব্য, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কয়েকটি ম্যাচ যদি আমরা আনতে পারি, এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে!’
পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভির সঙ্গে মুঠোফোনে এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের আলাপ–আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সূত্র। আলোচনায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছেন নাকভি। ফারুকও নাকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে হলে ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজন করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক আহমেদ সরাসরি কিছু না বললেও তাঁর কথায় বিসিবির আগ্রহের দিকটি পরিষ্কার, ‘এ ব্যাপারে এখনই মন্তব্য করতে পারছি না। তবে হ্যাঁ, কিছু একটা চেষ্টা তো হবেই।’ আইসিসির সভায় যোগ দিতে বিসিবি সভাপতির আজ দুবাই যাওয়ার কথা।
৫ ডিসেম্বরের আইসিসির সভায় বিসিবি ভারতের ম্যাচ বাংলাদেশে আয়োজনের প্রস্তাব দিলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আলোচনা নতুন মোড় নিতে পারে। তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সম্পর্ক যেমন শীতল, তাতে ভারত তাদের ম্যাচগুলো বাংলাদেশে খেলতে রাজি হবে; এমন ভাবাটা দুরাশাই। তাদের বরং পছন্দ দুবাইয়ে খেলা। বিসিবি যে এই দিকটি ভাবছে না, তা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই একটাই সমস্যা, ভারত এই মুহূর্তে বাংলাদেশে খেলতে আসতে রাজি হবে কি না। আমরা জানি এটা কঠিন। তারপরও চেষ্টা করে দেখতে তো অসুবিধা নেই। পাকিস্তান যেহেতু স্বাগতিক দেশ, তাদের মতামতও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।’
আইসিসির সর্বশেষ অনলাইন সভায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়নি, কারণ সভায় যোগ দেননি আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালার্ডাইসই। মাত্র ১০–১২ মিনিট স্থায়ী সভায় অন্য বোর্ডের প্রতিনিধিরা একরকম নিশ্চুপই ছিলেন। বিষয়টি যেহেতু পিসিবি ও বিসিসিআইয়ের, সভায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরই একটি সিদ্ধান্তে এসে তা আইসিসিকে জানাতে বলা হয়েছে। ৫ ডিসেম্বরের সভায় সেটিই জানানোর কথা তাদের।
তবে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর—হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে পিসিবি। এক, আইসিসির রাজস্ব আয় থেকে পিসিবির বরাদ্দ বাড়াতে হবে। দুই, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারত যতগুলো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব পেয়েছে, সেগুলোও হাইব্রিড মডেলে হতে হবে। সংবাদমাধ্যমে আরও এসেছে, হাইব্রিড মডেলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বেশির ভাগ ম্যাচ পাকিস্তানে হলেও ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে।