গরমে ক্লান্ত একাদশের ক্রিকেটার, বাধ্য হয়েই কোচ থেকে ফিল্ডার ডুমিনি
২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন জেপি ডুমিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার বর্তমানে দলের ব্যাটিং কোচ। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দলের সঙ্গে গিয়ে সেই ডুমিনি ক্ষণিকের জন্য কোচ থেকে হয়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেটার! বাধ্য হয়েই ফিল্ডিং করতে নামতে হয়েছিল তাঁকে।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে গতকাল আয়ারল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রচণ্ড গরমে কাহিল দশা হয়েছিল প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের। আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের এক পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চড়েছিল। স্কোয়াডে বিকল্প ফিল্ডার না থাকায় শেষদিকে তাই বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন কোচ ডুমিনি।
ফিল্ডিং করতে নেমে মাঠে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেননি চল্লিশোর্ধ্ব ডুমিনি। দুর্দান্ত এক ডাইভ দিয়ে বল ঠেকিয়ে দলের রানও বাঁচিয়েছেন। আইরিশ ইনিংসের শেষ ওভারে ডুমিনির সেই ডাইভ দেওয়ার ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ফিল্ডিংয়ের সময় একাদশের এক বা একাধিক খেলোয়াড় মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলে দ্বাদশ, ত্রয়োদশ এমনকি চতুর্দশ ফিল্ডারও নামানোর নিয়ম আছে। তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা সেটা না করে কোচ ডুমিনিকে ফিল্ডিংয়ে নামাল কেন?
প্রোটিয়া ক্রিকেটের নিয়মিত খোঁজখবর রাখলে উত্তরটা জানার কথা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এই সিরিজের স্কোয়াড থেকে চোটের কারণে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান টনি ডি জর্জি ও পেসার নান্দ্রে বার্গার। আর অলরাউন্ডার উইয়ার মুল্ডার ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরে গেছেন।
স্কোয়াডে শতভাগ ফিট ক্রিকেটার ছিলেন ১২ জন। দ্বাদশ ফিল্ডার হিসেবে ফিল্ডিং করতে নেমেছিলেন নাকাবা পিটার। কিন্তু একাদশের আরেকজন ক্রিকেটার তীব্র গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় ডুমিনি ফিল্ডিংয়ে নামতে বাধ্য হন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪৬ টেস্টে ২১০৩, ১৯৯ ওয়ানডেতে ৫১১৭ ও ৮১ টি-টোয়েন্টিতে ১৯৩৪ রান করেছেন ডুমিনি। পাশাপাশি টেস্টে ৪২, ওয়ানডেতে ৬৯ আর টি-টোয়েন্টিতে ২১ উইকেট নিয়েছেন। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হ্যাটট্রিকও আছে তাঁর।
ডুমিনির কোচ থেকে ফিল্ডার হওয়ার দিনটা ভালো কাটেনি দক্ষিণ আফ্রিকার। আয়ারল্যান্ডের কাছে শেষ ওয়ানডেতে ৬৯ রানে হেরে গেছে। তবে প্রথম দুই ওয়ানডে জেতায় সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। দলটির পরবর্তী সিরিজ বাংলাদেশে। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আওতাধীন দুটি টেস্ট খেলতে ১৬ অক্টোবর ঢাকায় পা রাখার কথা টেম্বা বাভুমা-কেশব মহারাজ-কাগিসো রাবাদাদের।
দলের প্রয়োজনে কোচদের ফিল্ডিংয়ে নামার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ইংল্যান্ডের কোচিং স্টাফের সদস্য পল কলিংউড বেশ কয়েকবার বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নেমেছেন। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে ধর্মশালা টেস্টে দুই সহকারী কোচ কলিংউড ও মার্কাস ট্রেথকোথিককে দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ ফিল্ডার হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছিল ইংল্যান্ড।
গত মে মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ফিল্ডিং করেছিলেন দলের প্রধান কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড, ফিল্ডিং কোচ অ্যান্ড্রে বোরোভেচ ও প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি।
মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, ট্রাভিস হেড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিন ও মার্কাস স্টয়নিস আইপিএলের প্লে অফ খেলে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দলের সঙ্গে যোগ দেন। কিন্তু ক্লান্ত থাকায় তাঁদের বিশ্রামে রাখা হয়েছিল। ফলে অস্ট্রেলিয়ার দলে খেলোয়াড় ছিলেন ৯ জন। মজার ব্যাপার হলো, সেই ৯ জনকে নিয়েই নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ৭ উইকেট আর ৬০ বল বাকি রেখে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।