সূচি
দল পরিচিতি
আফগানিস্তান : বড় স্বপ্ন দেখতেই পারেন রশিদ–নবীরা
বিশ্ব ক্রিকেটে আফগানিস্তানের উত্থান রূপকথার মতোই। ২০০১ সালে প্রথমবার জাতীয় ক্রিকেট দল গড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি ২০০৮ সালে ছিল আইসিসির পঞ্চম স্তরের লিগে। সেই দেশই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে ২০১০ সালে, প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০১৫ সালে, এখন তো তারা আইসিসির পূর্ণ সদস্যই।
২০১৫ বিশ্বকাপে আফগানিস্তান গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও সেবার হারিয়ে দিয়েছিল স্কটল্যান্ডকে। ওটাই এখন পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানদের একমাত্র জয়। চার বছর আগের বিশ্বকাপটা একেবারেই বাজে কেটেছে আফগানদের। ৯ ম্যাচের সব কটিতেই হার।
তবে এবার আফগানরা বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে ওয়ানডে সুপার লিগে পঞ্চম হয়ে, ভারত এবং দুই পরাশক্তি পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ওপরে থেকে!
ফলে এবার রশিদ-মুজিব-নবীদের নিয়ে আফগান সমর্থকদের প্রত্যাশাও বেশি। দলটা আগের দুবারের চেয়ে শক্তিশালী এবং বেশ পরিণত। কন্ডিশনও আফগানদের খুব চেনা। এবার ভারতের কন্ডিশন তো তাঁদের কাছে ঘরের মতোই। গত ৫ বছরে ভারতের তিনটি ভেন্যুতে (বৃহত্তর নয়ডা, দেরাদুন ও লক্ষ্ণৌ) হোম ম্যাচ খেলেছে আফগানিস্তান। এর আগে ছিল ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা। সব সংস্করণ মিলিয়ে ভারতে খেলা ৩৮ ম্যাচের মধ্যে ২৩ জয় আফগানদের পক্ষেই কথা বলছে। তা ছাড়া রশিদ, নবী, মুজিব, গুরবাজ, ফারুকি, নাভিনরা তো এখন আইপিএলেরও নিয়মিত মুখ।
গত কয়েক বছরে আফগান দলটা নিজেদের একটা ব্র্যান্ডও তৈরি করতে পেরেছে। সবার মধ্যেই যেন যোদ্ধা ভাব, দৃঢ় মনোবল, হারার আগে হাল না ছাড়ার মানসিকতা।
আফগানিস্তানের মূল শক্তি বরাবরই ছিল স্পিন বোলিং। তবে এখন এর সঙ্গে তাদের ব্যাটিংটাও ভরসা করার মতো। ইব্রাহিম জাদরানের মতো একজন ‘সলিড ওপেনার’ পেয়েছে তারা, যেকোনো বোলিং লাইনআপের ওপর চড়াও হওয়ার সক্ষমতা আছে গুরবাজের। মাত্র ২৬ ওয়ানডে খেলেই পাঁচটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন গুরবাজ, আছে দুটি ফিফটিও। ফিফটির চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ২১ বছর বয়সেই তাঁর ইনিংস বড় করার সামর্থ্য কতটা। সঙ্গে অভিজ্ঞ নবী, হার্ড হিটার নজিবউল্লাহ, অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির কৌশলী মগজ তো আছেনই। রশিদ খান-আজমতউল্লাহ ওমরজাইরা তো বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও উপহার দিতে পারেন ‘ক্যামিও’।
সেই তুলনায় আফগানদের পেস আক্রমণ বেশ দুর্বলই মনে হবে। তবে নাভিন–উল–হক চোট থেকে সেরে উঠে দলে ফেরায় ডেথ ওভারের বোলিং নিয়ে দুর্ভাবনা কিছুটা হলেও কাটার কথা। নাভিনের সঙ্গে ফজলহক ফারুকির রসায়নটা জমে উঠলে এই দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবে আফগানিস্তান।
আফগান বোর্ডের দূরদর্শিতাও চোখে পড়ার মতো। ভারতে বিশ্বকাপ হওয়ায় গত ১০ মাসে দলটা সব ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে এই উপমহাদেশে। বাংলাদেশ সফরে এসে ওয়ানডে সিরিজও জিতে গেছে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সঙ্গে খুব কাছে গিয়ে হারলেও চোখে চোখ রেখে লড়েছে। হিসাবের গরমিল না করলে সর্বশেষ এশিয়া কাপের সুপার ফোরেও দেখা যেত। সব মিলিয়ে বছরখানেক ধরে আফগানরা যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে, তাতে বিশ্বকাপে চমকে দেওয়ার মতো কিছু করার আশা ওদের কাছ থেকে করাই যায়।...আরও