ব্রিসবেনে ‘সেভেন-সেভেনে’ পরিণত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার ৯৩ রানের জবাবে অলআউট হই-হই করেও শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৬৪ রান তুলে ২৯ রানে হারে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে আজ সিডনিতে দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে জিততেই হতো। সেই ম্যাচেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছে পাকিস্তান। ১৩ রানে হেরেছে তারা। তিন ম্যাচের সিরিজটা এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।
দুই পেসার হারিস রউফ (৪/২২) ও আব্বাস আফ্রিদি (৩/১৭) এবং স্পিনার সুফিয়ান মুকিমের (২/২১) দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১৪৭ রানে আটকে রেখেও শেষ পর্যন্ত হারল পাকিস্তান।
রান তাড়ায় স্পেনসার জনসনের করা ৮ বলের প্রথম ওভাবে ১২ রান তোলে পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে জেভিয়ার বার্টলেটকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে সীমানায় নাথান এলিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে বাবর আজমের (৩) বিদায়ের পর আর আস্কিং রেটের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি।
ইনিংস অর্ধেক পথ পাড়ি দেওয়ার সময় ৪ উইকেটে ৪৪ রান তুলতে পারে দলটি। দশম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে বাঁহাতি পেসার জনসন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আগাকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। সেই সুযোগ হারালেও সাত ম্যাচের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পেয়ে গেছেন ২৮ বছর বয়সী জনসন। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট জনসনের, পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলিং এখন তাঁরই। পেছনে পড়ল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জেমস ফকনারের (৫/২৭) রেকর্ড।
৪৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর কঠিন হয়ে যাওয়া সমীকরণের সামনে যা একটু চেষ্টা করেন উসমান খান ও ইরফান খান। দুই খান মিলে পঞ্চম উইকেটে ৩২ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়ে একটু আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ২৮ বলে ৫২ রান করে উসমান জনসনের চতুর্থ শিকার হওয়ার পর বাকিরা আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন। ফল, ২৮ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থেকে শুধু ব্যবধানই কমাতে পেরেছেন ইরফান। পাকিস্তানের ইনিংসে শেষ দিকে পরপর তিন ব্যাটসম্যান ফেরেন শূন্য রানে।
এ আগে সিডনিতে আজ টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে পথ হারানোর গল্পই বলতে হবে। ম্যাথু শর্ট ও জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্কের উদ্বোধনী জুটি ৩.৩ ওভারেই তুলে ফেলেছিল ৫২ রান। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে ফ্রেজার-ম্যাগার্কের (৯ বলে ২০ রান) বিদায়ের পরই রান তোলার গতি হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ১৬.২ ওভারে ১০০ রানও তুলতে পারেনি দলটি।
চতুর্থ ওভারের শেষ বলে জশ ইংলিসকেও ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরানোর কাজ শুরু করেন হারিস রউফ। পরের ওভারের শেষ বলে আব্বাস আফ্রিদি যখন বোল্ড করে দিলেন ম্যাথু শর্টকে (১৭ বলে ৩২), অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৫৬/৩।
এরপর মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩০ রানের জুটি গড়লেও দুজনে মিলে খেলে ফেলেন ২৯ বল। ১৫ বলে ১৪ রান করে বাঁহাতি স্পিনার সুফিয়ান মুকিমের প্রথম শিকার হন স্টয়নিস। ১০ বল পর ম্যাক্সওয়েলকেও (২০ বলে ২১) ফেরান সুফিয়ান। ৯৫ রানে ৫ উইকেট খোয়ানো অস্ট্রেলিয়া এরপর ১৪৭ পর্যন্ত যেতে পারে অ্যারন হার্ডি (২৩ বলে ২৮) ও টিম ডেভিডের (১৯ বলে ১৮) ব্যাটে। শেষ পর্যন্ত এই রানই যথেষ্ট হলে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৪৭/৯ (শর্ট ৩২, হার্ডি ২৮, ম্যাক্সওয়েল ২১, ফ্রেজার–ম্যাগার্ক ২০; হারিস ৪/২২, আব্বাস ৩/১৭, সুফিয়ান ২/২১)।
পাকিস্তান: ১৯.৪ ওভারে ১৩৪ (উসমান ৫২, ইরফান ৩৭*, রিজওয়ান ১৬; জনসন ৫/২৬, জাম্পা ২/১৯)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ১৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩–ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: স্পেনসার জনসন।