এক ম্যাচ নিষিদ্ধ তাওহিদ হৃদয় মুখ খোলার হুমকি দিলেন কেন
আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচে আবাহনী ইনিংসের অষ্টম ওভার। পেসার ইবাদত হোসেনের বল আঘাত করে মোহাম্মদ মিঠুনের প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে আবেদন করেন মোহামেডানের ক্রিকেটাররা। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। সিদ্ধান্তটা মনঃপূত হয়নি মোহামেডানের। অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়সহ মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা প্রতিবাদ করতে থাকেন।
মোহামেডানের ক্রিকেটারদের শান্ত করতে এগিয়ে যান স্ট্রাইকার্স প্রান্তে দাঁড়ানো আরেক আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। তবে মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা তর্কে জড়ান তাঁর সঙ্গেও। একপর্যায়ে টিভি সম্প্রচারে শরফুদ্দৌলাকে বলতে শোনা যায়, ‘তর্ক করতে চাইলে মাঠের বাইরে করবা। এখানে নয়।’
এরপর শরফুদ্দৌলার দিকে ছুটে যান মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়। আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন এগিয়ে আসেন মোহামেডানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
ওই ঘটনায় শাস্তি পেয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে লেভেল টু আচরণবিধি ভাঙায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে মোহামেডান অধিনায়ককে। আর দলটির বোলার ইবাদতের লেভেল ওয়ান মাত্রার বিধি ভঙের অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঘটনা এখানে থামবে কি না, কে জানে! ম্যাচের পর শাস্তি পাওয়ার আগে এ ঘটনা নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে হৃদয় বলেছিলেন, ‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশা আল্লাহ।’
কী হয়েছিল, তাঁর কাছে জানতে চাইলে হৃদয় বলেন, ‘যেটা ঘটেছে, সবকিছু ব্যাখ্যা করতে পারব না। কিন্তু হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হয়। তাঁরাও ভুল করেন, কিন্তু আমার কাছে যেটা মনে হয়, তাঁরা ভুল করতেই পারেন, মানুষমাত্রই ভুল করে, আমরাও করব! কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, ভুলটা স্বীকার করা উচিত, আমি যদি ভুল করি, আমিও স্বীকার করব। কিন্তু আপনি যদি ভুল স্বীকার না করে বলেন, এটা ভুল নয়, তাহলে হবে না। তিন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, তাঁকে আমরা সম্মান করি। আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এমন ম্যাচে দুই-একটা সিদ্ধান্ত অনেক বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়ানো নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একসময় এটা ছিল নিয়মিত দৃশ্য। তবে গত কয়েক বছরে তা অনেকটাই কমে এসেছিল, তা বিশ্বাস করেন হৃদয়ও।
তবে এসব ক্ষেত্রে দুই দিক দেখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো এমন অনেক দেখেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে তো এর চেয়ে আরও বাজে হতো, এখন তো সেটাও হয় না। ডে বাই ডে আমরা খেলোয়াড়রা তাঁদের অনেক সম্মান করি, শুধু আমাদের খেলোয়াড়দের দোষ দিলে হবে না। জাস্টিফাই করলে আমার কাছে মনে হয়, দুই পাশ থেকেই দেখা উচিত।’
ও বললে বলতে থাকুক। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। মুখ খুললে খুলুক। আমি এটা নিয়ে কিছু বলব না।
ম্যাচের পর ঘটনাটি নিয়ে জানতে চাইলে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এসব নিয়ে এই মুহূর্তে কথা বলতে চাচ্ছি না।’ হৃদয় মুখ খুলবেন, এমন হুমকি দিয়েছেন, এ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ ও বললে বলতে থাকুক। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। মুখ খুললে খুলুক। আমি এটা নিয়ে কিছু বলব না।’
সবকিছু থেমে যাওয়ার পরও হৃদয় কেন তর্কে জড়ালেন, তা জানতে চাইলে শরফুদ্দৌলা বলেন, ‘এটা মাঠের ভেতরের কথা, আমরা পাবলিক করি না।’