কানপুরে বৃষ্টি, ঢাকঢোল, ভুভুজেলা ও আড্ডার দিন

কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে মাঠ ঢেকে রাখা হয়এএফপি

খেলা শুরু হওয়ার কোনো নামগন্ধ নেই। কখনো ঝুমবৃষ্টি, কখনো ঝিরিঝিরি…থামার কোনো লক্ষণ নেই। থামলেও সে সময়টা কাভারের ওপরে পানি সরাতে সরাতেই আবার বৃষ্টি শুরু। কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকে এসবই চলছিল। অথচ এমন দিনেও ঢাকঢোল আর ভুভুজেলা বাঁশি নিয়ে ঠিকই মাঠে হাজির কানপুরের দর্শকেরা। এক শ-দুই শ নয়, প্রায় হাজার পাঁচেক দর্শক।

বৃষ্টির কারণে পুরো মাঠ ঢাকা। দুই দল মাঠে এসে হোটেলেও ফিরে গেছে। কিন্তু দর্শকদের ঢাকঢোল আর ভুভুজেলার আওয়াজ কিছুক্ষণ পর পর মনোযোগ কেড়ে নেয়। মনে হয়, বৃষ্টির মধ্যে যেখানে খেলাই হচ্ছে না, সেখানে তাঁদের কিসের এত আনন্দ!

আরও পড়ুন

এই শ্রাবণধারার মধ্যেই কানপুর টেস্টে প্রথম দিনে খেলা হয়েছিল মাত্র ৩৫ ওভার। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে করে ১০৭ রান, মুমিনুল হক ৪০ ও মুশফিকুর রহিম ৬ রানে খেলছেন। আজ তো সারাদিনে একটি বলও হলো না। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সময় বেলা ২টায় দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়

স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়
এএফপি

ততক্ষণ পর্যন্ত মাঠে দর্শক ছিল। ছবি তোলা আর আড্ডাবাজিতে সময় কাটছিল তাঁদের। ধারাভাষ্যকারদের কেউ মাঠের দিকে গেলেই হইচই শুরু হয় গ্যালারিতে। বৃষ্টি থামার পর মাঠের পানি সরানোর কাজ শুরু করলেই মাঠকর্মীরা পাচ্ছেন বিশাল হাততালি। স্টেডিয়ামের ডিজেও দর্শকদের জাগিয়ে রাখলেন আইপিএলের জিঙ্গেল ছেড়ে।

এমন দিনে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ দলকে পেয়ে বসেছে বৃষ্টির আলস্য। সকাল সকাল ঠিক সময়ে মাঠে এলেও ঘণ্টাখানেক থাকার পর হোটেলে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। অনেকে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। কয়েকজন টিভি খুলে কাভারে ঢাকা মাঠটা দেখে আবার বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

এদিকে প্রেসবক্সে আড্ডা, খুনসুটি তো ছিলই। হিন্দি ধারাভাষ্য দিতে আসা কানপুরের ঘরের ছেলে আর পি সিংকেও আড্ডায় যোগ দিতে দেখা গেল। কানপুরের গ্রিন পার্কের প্রেসবক্সে এসে স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিকদের আড্ডায় বসলেন, স্মৃতিচারণা করলেন। হাসিঠাট্টায় মাতলেন। এক ফাঁকে তামিম ইকবালও উঁকি দিলেন। বৃষ্টিতে ঝিমিয়ে পড়া প্রেসবক্সে তাতে কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হলো।

গ্রিন পার্কের প্রেসবক্স থেকে মাঠ যেভাবে দেখা যায়
প্রথম আলো

কানপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনের ভাগ্যটা ততক্ষণে সবাই অনুমান করতে পারছিলেন। ‘আজ আর খেলা হচ্ছে না’—এই কথাটা কিছুক্ষণ পর পর কাউকে না কাউকে বলতে শোনা যাচ্ছিল। শুধু আজ নয়, কানপুরের আকাশ যেভাবে কাঁদছে, তাতে টেস্টের আরও একটি দিন বৃষ্টির গর্ভে মিলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

আরও পড়ুন