সূচি
দল পরিচিতি
অস্ট্রেলিয়া : বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতেই তারা বিশ্বকাপে খেলে
সর্বশেষ ৬টি বিশ্বকাপের ৪টিতে চ্যাম্পিয়ন, একবার সেমিফাইনাল, একবার কোয়ার্টার ফাইনাল। বিশ্বকাপের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সফলতম দল, এ নিয়ে তর্কের সুযোগ নেই। ২০১৫ সালে যখন প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের হৃদয় ভেঙে মেলবোর্নের ফাইনাল জিতেছিল মাইকেল ক্লার্কের দল, তখনো তো বলা হয়েছিল—আদতে নিজেদের সম্পত্তিটাই ফিরে পেল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৯ সালে এখনকার ট্রফিটা চালু হওয়ার পর থেকে টানা তিন আসরে অন্য কোনো দল তো সেটি ছুঁয়ে দেখারও সুযোগ পায়নি।
কিন্তু গত ছয় আসরে অস্ট্রেলিয়ার ‘সর্বনিম্ন’ যে সাফল্য—কোয়ার্টার ফাইনাল, সেটিই হয়তো এবারের আসরে দলটির খচখচানি। সে ফলটি যে এসেছিল ভারতের মাটিতে (যৌথ আয়োজনে) হওয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপেই! এবারের টুর্নামেন্টের ফরম্যাট অবশ্য আলাদা। ভারতের মাটিতে সুখস্মৃতিও আছে তাদের, তবে সেটি গত শতাব্দীতে। ১৯৮৭ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
গতবার গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া ছিল দাপুটেই, ৯ ম্যাচের ৭টিতেই জিতে সেমিফাইনালে গিয়েছিল অ্যারন ফিঞ্চের দল। কিন্তু ব্যাটে-বলে নিজেদের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্সটি এসেছিল এজবাস্টনের ওই দিনে। গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারালেও ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল তারা। ফিঞ্চ অবসরে গেছেন, এবার অস্ট্রেলিয়ার ভার প্যাট কামিন্সের ওপর। এ ক্ষেত্রে একটা ইতিহাসই হতে যাচ্ছে। এর আগে কোনো বিশ্বকাপেই বিশেষজ্ঞ কোনো পেসার নেতৃত্ব দেননি অস্ট্রেলিয়াকে। কামিন্স আবার গত বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডেতে নিয়মিত ছিলেন না একেবারেই। এ সময়ে অস্ট্রেলিয়ার অর্ধেকের বেশি ম্যাচ খেলেননি। এই সংস্করণে কামিন্সের মতো এত কম ম্যাচ খেলেও এর আগে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেননি কোনো নিয়মিত অধিনায়ক।
টুর্নামেন্টের আগে চোটের সমস্যাও ভালোই ভুগিয়েছে। অধিনায়ক কামিন্স, স্মিথ, স্টার্ক ও ম্যাক্সওয়েলের কেউই ছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে। গত আসরে জশ হ্যাজলউডকে বাইরে বসিয়ে চমক দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, এবার সেই চমক বেশ কিছুদিন ধরেই ওয়ানডেতে নিয়মিত মারনাস লাবুশেনকে বাদ দেওয়ার মাধ্যমে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে অবশ্য নিজের দাবিটা জানিয়ে রেখেছিলেন ‘সুপার সাব’ লাবুশেন।
ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেডের বিস্ফোরক ওপেনিং জুটির সঙ্গে সর্বশেষ কয়েকটি সিরিজে ব্যাটিংয়ের ধরনে অস্ট্রেলিয়া জানান দিয়েছে, আগ্রাসী ব্যাটিংই লক্ষ্য তাদের। স্মিথের উপস্থিতিতে টেকসই মিডল অর্ডার, স্টয়নিস, ম্যাক্সওয়েল, গ্রিনদের মতো অলরাউন্ডাররা অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম ভরসার জায়গা। পেস আক্রমণেও অস্ট্রেলিয়া বেশ এগিয়ে। স্পিনে গতবার নাথান লায়নের ওপর ভরসা রাখা হলেও এবার ফেরানো হয়েছে অ্যাশটন অ্যাগারকে।
গতবারের বিশ্বকাপ দলের ৮ জন আছেন এবারও—অ্যালেক্স ক্যারি, স্মিথ, ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েল, স্টয়নিস, কামিন্স, মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জাম্পা। স্মিথ, ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েল, স্টার্কের সঙ্গে এবার ফেরা হ্যাজলউড ও মিচেল মার্শ ছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপজয়ী দলেও। এটিই বলে দেয়, বিশ্বকাপ-অভিজ্ঞতায় অস্ট্রেলিয়া বেশ এগিয়েই। দলের বেশ কয়েকজন সদস্য আইপিএলেও নিয়মিত। এ বছরই আবার ভারতের মাটিতে দুটি সিরিজ খেলে বিশ্বকাপে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
আর অস্ট্রেলিয়া যখন বিশ্বকাপে যায়, তা যেখানেই হোক না কেন, উত্তরাধিকারসূত্রে তাদের সঙ্গী হয় তো ‘চ্যাম্পিয়নশিপ ডিএনএ’ও।...আরও