যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের টেক্সাস-রূপকথা আর ‘আমেরিকান ড্রিম’
বেন স্টোকস গতকাল রাতে ছিলেন একটি ‘বিজনেস ইভেন্টে’। ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনাল জয়ের অন্যতম নায়কের সামনে সেখানেই ট্যাব বা ফোনের পর্দায় স্কাই স্পোর্টস। ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় ভিন্ন এক টাইম জোনে, নিউইয়র্কের সাবওয়েতে। সুপার ওভারে তাঁর ভরসা ইএসপিএনক্রিকইনফোর বল বাই বল কমেন্ট্রি।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র তখন পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে লিখছে টেক্সাস-রূপকথা। স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট বিশ্বে সেটি আলোড়ন তুলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হচ্ছে।
২০০৭ সালে একই দিনে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড কার্যত বিদায় করে দিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানকে। দুই দলের বিদায়ে যে আর্থিক লোকসান হয়েছিল আইসিসির, সেটি পোষাতেই কিনা বিশ্বকাপের ফরম্যাট বদলে ফেলে তারা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেখানে ২০ দলের, ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এক দিক থেকে ক্রিকেটের বিশ্বায়নের এখন পর্যন্ত শিখর এটিই। সে মঞ্চে গত আসরের রানার্সআপ, পরিসংখ্যানে এ টুর্নামেন্টের অন্যতম সফল দলকে হারিয়ে দিচ্ছে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে আসা দল। ক্রিকেটের দারুণ এক গল্প।
কিন্তু গল্পটা যারা লিখছে, তাদের কী অবস্থা?
ডালাসে দিন দুয়েক আগেই দেখা গিয়েছিল নেপালি সমুদ্র। কানাডার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ম্যাচেও ৭ হাজার ধারণক্ষমতার গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি ছিল দেখার মতোই, সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল স্বাগতিকদের সমর্থকেরাই। কিন্তু এ ম্যাচে পরিস্থিতি ভিন্ন।
ক্রিকেট খেলুড়ে ‘মূল’ যে দেশগুলো, সেগুলোর একটা ‘কমন’ ব্যাপার আছে। ব্রিটিশরা যেখানে যেখানে গেছে, নিয়ে গেছে ক্রিকেট। সেটি আর্জেন্টিনা হোক বা আমাদের এই অঞ্চল। কোথাও ক্রিকেট টিকেছে, কোথাও ফুটবল–জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে সেখানকার মানুষ। ক্রিকেটের ‘অভিজাত’ সত্তাও প্রভাব ফেলেছে তাতে।
যুক্তরাষ্ট্রেই যেমন খেলার ইতিহাসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রথম দিকের কোনো ম্যাচ হয়েছিল, যেটি ছিল ক্রিকেট। তবে আমেরিকানদের কাছে ক্রিকেট থাকেনি। শুধু ক্রিকেট কেন, সব বাদ দিয়ে তারা মজেছে ‘আমেরিকান স্পোর্টসে’। এমনকি প্রায় সর্বজনস্বীকৃত আরেকটি যে বৈশ্বিক ভাষা—সেই ফুটবলও সেখানে টিকে থাকে ভিন্ন নামে।
এমনিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট কর্তারা টেক্সাসে গড়তে চান এ খেলার ‘ঘাঁটি’। আবহাওয়া থেকে শুরু করে আরও কয়েকটি ব্যাপার আছে এর পেছনে। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরিকে ভবিষ্যতে আমেরিকান ক্রিকেটের ‘হোম’ হিসেবেও ভাবছেন তাঁরা।
সেই টেক্সাসে, যেখানে ফুটবল আছে কয়েক রকম। জনপ্রিয় সিটকম ‘বিগ ব্যাং থিওরি’র চরিত্র শেলডন কুপার যেমন বলেন, ‘প্রো ফুটবল, কলেজ ফুটবল, হাইস্কুল ফুটবল…আসলে সব রকমের ফুটবল খেলা হয় সেখানে, শুধু আসল যে ফুটবল—সেই ইউরোপিয়ান ফুটবল ছাড়া।’
যুক্তরাষ্ট্রের মতো এমন দেশে ক্রিকেট গেছে ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ হিসেবে। মানে হাত ঘুরে। ব্রিটিশরা উপমহাদেশে এনেছিল ক্রিকেট। সেই উপমহাদেশের মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গায় নিয়ে গেছে ক্রিকেট। গ্র্যান্ড প্রেইরিতে উপমহাদেশের একটি দলের বিপক্ষে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র তাই কার্যত ‘অ্যাওয়ে’ দল। এক দর্শকের মাথায় দেখা গেল পাকিস্তানের সবুজ হ্যাট, গায়ে জড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। পরিস্থিতিটা যেন ফুটে ওঠে তাতেই।
মোনাঙ্ক প্যাটেলরা জানতেন, দর্শকের সমর্থন তাঁদের পক্ষে থাকবে না। সেটিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলেন তাঁরা। এমনিতেই সহযোগী দেশগুলো এসব মঞ্চে খেলে ‘হারানোর কিছু নেই’ মন্ত্র নিয়ে। সেখানে এটিকে বাড়তি প্রেরণা হিসেবে নিলেন তাঁরা। নিজেদের দর্শকের সামনে ভালো করার একটা চাপ থাকবে পাকিস্তানের। সেটি করতে না পারলে চাপ বাড়বে আরও। টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তানের ওপর প্রথম চাপ বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র। সে চাপ ধরে রাখল ম্যাচের বেশির ভাগ সময়।
শুরুর চাপ সামলে পাকিস্তান এগিয়েছিল অনেকটা, তখন এমনকি তাদের নাগালে ছিল ১৮০ বা এর বেশি রানের স্কোরও। ১৩তম ওভারে শাদাব খান ও আজম খানকে পরপর দুই বলে আউট করে পাকিস্তানকে আবার ব্যাকফুটে ঠেলে দিলেন বাঁহাতি স্পিনার নশথুস কেনজিগে।
এ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে বোলিং ওপেনও করেছেন কেনজিগে। উপমহাদেশের কোনো দলের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের মাঠে বোলিং ওপেন করছেন কোনো বাঁহাতি স্পিনার—ক্রিকেট আসলেই ঘুরেছে অনেকটা পথ। কেনজিগের জন্ম আলাবামার অবার্নে। কিন্তু বড় হয়েছেন কর্ণাটকে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে কাজ শুরু করেন হাসপাতালের টেকনিশিয়ান হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আবার খেলার কথা যখন চিন্তা করলেন, কাজটি সহজ ছিল না মোটেও।
৯-৫টার চাকরি, এরপর ৬-১০টা ইনডোরে নেট সেশন। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কারও স্থানীয় ক্রিকেট সম্প্রদায়ের প্রতি নিবেদন প্রমাণ করতে ৮০০ ঘণ্টার কোচিং সেশন থাকতে হবে। কেনজিগের সেটি পূর্ণ করতে হতো।
ম্যাচটি ৪০ ওভারের মধ্যেই আসলে জিততে পারত যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তান পেসাররা ঘুরে দাঁড়ানোয় হয়নি সেটি। সে সময় ভুগছিলেন নিতীশ কুমার। ডাগআউটে বসে অভিজ্ঞ কোরি অ্যান্ডারসন, অথচ নিতীশ কিছু করতে পারছেন না তেমন। ম্যাচ বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাত থেকে।
নিতীশের একটা রেকর্ড আছে। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় তিনি। তবে সে রেকর্ড তিনি গড়েছিলেন কানাডার হয়ে। নিজের ক্রিকেট-স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে এসেছিল করোনাভাইরাস অতিমারি, টরন্টোর লকডাউন। ক্রিকেটের সেই স্বপ্নপূরণে নিতীশ পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
ডালাসে তাঁর সামনে শেষ বলে সমীকরণটা দাঁড়াল এমন—ছক্কা হলে জয়, চার হলে টাই আর এর কম কিছুতে হার। পাকিস্তান পেসাররা কাল ইয়র্কারকেই সবচেয়ে বড় অস্ত্র মনে করেছিলেন। সেটিই করতে গিয়ে রউফ করলেন লো ফুলটস। নিতীশ তুলে মারলেন। চার। সুপার ওভার। নিজেদের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের এটি দ্বিতীয় টাই ম্যাচ। আর পাকিস্তান যখন প্রথম ম্যাচ টাই করেছিল, তখন টাইব্রেকার ছিল ‘বোল আউট’ নামের অদ্ভুত এক নিয়ম!
ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এ ম্যাচ রোমাঞ্চকর। বাংলাদেশে বসে, সকালে অফিসের শিফটের ব্যাপারটি মাথায় রেখেও মাইগ্রেনের প্রকট ‘ঝামেলা’ সয়ে কেউ জোর করে চোখ রেখেছে টেলিভিশন পর্দায়।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, কোনো আমেরিকান টেলিভিশনে এ ম্যাচ দেখানো হয়নি। সেখানে ভরসা শুধু ক্রিকেট-ভিত্তিক সাবস্ক্রিপশন-নির্ভর উইলো টিভি। উইকিপিডিয়ায় প্রথম লাইনেই যাদের পরিচয় লেখা—তারা সম্পূর্ণ বিদেশি ক্রিকেট ম্যাচ দেখাতে নিয়োজিত।
যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক রেডিও পরে শ্রোতাদের সুপার ওভার বুঝিয়েছে এভাবে, ‘বেসবলে যেমন এক্সট্রা ইনিংস হয়।’
সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভরসা অ্যারন জোনস ও হারমিত সিং। জোনসের জন্ম নিউইয়র্কে। মা–বাবা বার্বাডোজের। ক্রিকেট তাই জোনসের অপরিচিত নয় মোটেও। বার্বাডোজে শাই হোপ, জেসন হোল্ডারদের সঙ্গে খেলেছেন। এরপর আবার ফেরেন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিকে ওয়ানডে মর্যাদা এনে দিয়েছিল মূলত জোনসের একটি সেঞ্চুরি। কদিন আগে কানাডার বিপক্ষে ৯৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে এনে দিয়েছেন স্মরণীয় এক জয়। তবে এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা তাঁর।
হারমিতের জন্ম মুম্বাইয়ে। আরও অনেকের মতো তাঁর মেধাও প্রথম ধরা দিয়েছিল সে শহরের শিবাজি পার্কে। তিনি ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন। আরও অনেকের মতো জাতীয় দল পর্যন্ত যাওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়নি।
হারমিত আর জোনস মিলে মোহাম্মদ আমিরের ওভারে তুললেন ১৮ রান। এর মধ্যে ৭ রানই অতিরিক্ত। ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী আমিরও সুপার ওভারে গুবলেট পাকিয়েছেন বারবার। পাকিস্তান স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারেনি। কোনো একভাবে যুক্তরাষ্ট্র নামটি যেন আতঙ্ক তৈরি করেছিল তাদের মধ্যে।
তবে সুপার ওভারে ১৮ রানের সম্বল যে খুব নিরাপদ, তা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কে বোলিং করবেন, ধারাভাষ্যকারেরা সে আলাপে আলী খানের নাম বলছিলেন। ইয়র্কার করার সামর্থ্যের কারণে পরিচিত পাকিস্তানে জন্ম পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া পেসার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল ছিল আলাদা। কন্ডিশনের কারণে তারা মনে করেছে, বাঁহাতি বোলারের যে সহজাত অ্যাঙ্গেল, সেটির সঙ্গে কাটার কার্যকরী হবে। অফ স্টাম্পের বাইরে পাকিস্তানিদের খেলাতে চেয়েছে তারা। সে কৌশলের কারণে এসেছেন সৌরভ নেত্রবালকার।
সৌরভও ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন। তবে ক্রিকেট-স্বপ্নটা সরিয়ে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন মাস্টার্স করতে। নিজের বোলিং জুতাও সঙ্গে নেননি তখন। এখনো তাঁর নামটা গুগল করলে লিংকডইনের প্রোফাইল আসে শুরুর দিকেই। ওরাকলের কম্পিউটার প্রকৌশলী তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে নতুন করে ক্রিকেট খুঁজে পেয়েছেন তিনি।
সৌরভ সুপার ওভারে প্রথম বলটি করলেন অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। আগে থেকেই সরে গিয়েছিলেন ইফতিখার। ওয়াইড হয়নি তাই। এরপর চার। ওয়াইড, উইকেট, লেগবাইয়ে চার, দুই, এক—সৌরভ বনে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট দলের রূপকথার জয়ের শেষের নায়ক।
যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক রেডিও যুক্তরাষ্ট্রের জয় ব্যাখ্যা করল এভাবে, ‘আমেরিকান খেলার হিসাবে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তানের হার হচ্ছে ডারহাম বুলসের কাছে বোস্টন রেড সক্সের হারার মতো।’ ডারহাম বুলস নর্থ ক্যারোলাইনার মাইনর লিগের দল। আর রেড সক্স নয়বারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দল।
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট নিয়ে যাওয়ার পেছনে আইসিসির নিশ্চয়ই বড় রকমের স্বপ্ন আছে। সে দেশের বাজার ধরতে চায় সব খেলাই। ফর্মুলা ওয়ান যেমন সম্প্রতি সেখানে নতুন করে লাস ভেগাস গ্রাঁ প্রিঁ আয়োজন করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সেই লোভনীয় বাজার ধরতে গিয়ে আইসিসি আবার ভারতের টেকসই বাজার হারাতে চায় না। এবারের বিশ্বকাপের অনেক ম্যাচই তাই হচ্ছে ভারতের সময় মাথায় রেখে। যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের ম্যাচও যেমন হয়েছে বৃহস্পতিবার দিন সকালে। সুযোগ-সুবিধা থেকে শুরু করে পিচ আর আউটফিল্ড—অনেক কিছু নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এরই মধ্যে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন জয়। ইএসপিএন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ক্যাপশনে লিখেছে, ‘এ স্টানার অ্যাট দ্য আইসিসি মেনস টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ! দ্য ইউএসএ হ্যাজ আপসেট ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার হাউস পাকিস্তান!’
খেলার জগতে ইএসপিএন বেশ বড় নাম। ক্রিকেট ওয়েবসাইটের পথপ্রদর্শক ক্রিকইনফোও এখন তাদের। তবে ইএসপিএনের যে মূল পেজ, তাতে মূলত প্রাধান্য পায় আমেরিকান খেলাগুলোই। গতকালের আগে ক্রিকেট নিয়ে তাদের শেষ পোস্টটি ছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেটিও দক্ষিণ আফ্রিকান এক ক্রিকেটারের জটিল রোগে আক্রান্ত ও সেটি থেকে সেরে ওঠার একটি ভিডিও। যুক্তরাষ্ট্রের জয় নিয়ে পোস্ট করে ব্লিচার রিপোর্টও।
অবশ্য ইএসপিএনের ওই পোস্টের নিচে এমন মন্তব্যও ছিল—‘আমরা ক্রিকেট খেলি কবে থেকে?’
সেদিন নিউইয়র্কে আইসিসির ‘ক্রিকেট বোলিং এক্সপেরিয়েন্স’ নামের এক জায়গায় ডেল স্টেইনকে না চিনতে পেরে তাঁকে বোলিং করানো শেখাচ্ছিলেন এক স্টাফ। ফলে এমন মন্তব্যও ঠিক ‘অস্বাভাবিক’ নয়।
আমেরিকান স্পোর্টসের ভিড়ে ক্রিকেট চেনাতে নিশ্চিতভাবেই অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে এখনো। তবে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দলের টেক্সাস-রূপকথা সে পথে বড় একটা লাফ—তা বলাই যায়। মোনাঙ্ক নিজেও যেমন বলেছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে এ জয়ে অনেক দুয়ারই খুলে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের।
তখন শুধু স্টোকস বা দ্রাবিড় নন, হয়তো যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট অনুসরণ করবেন ‘আমেরিকানরাও’। তাঁরা জানবেন, যুক্তরাষ্ট্রও ক্রিকেট খেলে।