আফগান বোলিং ডানা মেলতে দেয়নি তামিমদের
বৃষ্টির ভয় আগেই ছিল। আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণের ভয়ও ছিল। আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুটিই সত্যি হলো। দুই দফা বৃষ্টিতে সোয়া দুই ঘণ্টা খেলা হয়নি। তাতে ওভার কমে ম্যাচ হয়ে যায় ৪৩ ওভারের। বৃষ্টি–বিরতিতে যখন খেলা হয়েছে তখন দাপট দেখিয়েছে আফগানিস্তানের বোলাররা।
পেস, স্পিন—দুই ধরনের বোলিংয়েই ভুগতে হয়েছে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের। শেষ পর্যন্ত বাংলাদে ৯ উইকেটে করেছে ১৬৯ রান। তবে ডিএলএসের হিসাবে ম্যাচ জিততে আফগানদের ৪৩ ওভারে করতে হবে ১৬৪ রান। বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫১ রান এসেছে তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন পেসার ফজল হক ফারুকি। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুজিব উর রেহমান ও রশিদ খান।
মেঘলা আকাশের নিচে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর আমন্ত্রণ জানায় আফগানিস্তান। আফগান পেসার ফারুকির সঙ্গে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালের ‘ম্যাচ-আপ’ কোন দিকে যায়, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ফারুকির বলে টানা তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন তামিম।
আজও সেই ফারুকিই থামিয়েছেন তামিমের ইনিংস। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ফারুকির ভালো লেংথ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে কট বিহাইন্ড হন তামিম। ২১ বলে ১৩ রানের ইনিংসটি থামে এভাবেই। তবে তামিম আউট হলেও লিটন দাস তিনে নামা নাজমুল হোসেন কে নিয়ে দারুণ খেলছিলেন। প্রতি আক্রমণে দুজনই রান করছিলেন।
কিন্তু ইনিংসের ১২তম ওভারে এসে ভুল শট খেলে আউট হন লিটন। মুজিবের বলে স্কয়ার লেগে তুলে মারতে গিয়ে সেখানে থাকা একমাত্র ফিল্ডার রহমত শাহর কাছে ক্যাচ তোলেন তিনি। ৩৫ বল খেলে ২৬ রান করা লিটনের ইনিংসটা দীর্ঘ হয়নি সেই ভুলে। পরের ওভারে আরেক অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবীকে সুইপ শট খেলতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তোলেন নাজমুল। ফর্মে থাকা নাজমুল আউট হন ১৬ বলে ১২ রান করে।
তখন বাংলাদেশের রান ১২.১ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৩। সে সময় সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ ৩৭ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু সে জুটি লম্বা হতে দেননি আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২৩তম ওভারে ওমরজাইয়ের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ তোলেন ৩৮ বল খেলে ১৫ রান করা সাকিব। ঠিক পরের ওভারেই রশিদ খানের শর্ট বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম (৩ বলে ১ রান)।
ঘুরে দাঁড়াতে হলে তখন আরও একটি জুটির খুব দরকার। কিন্তু রশিদ সেটি হতে দেননি। তিনি আফিফ হোসেনকে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ব্যক্তিগত ৪ রানের সময়। মেহেদী হাসান মিরাজও এলবিডব্লিউ হন ফারুকি দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারে। টিকতে পারেননি তাসকিন আহমেদও। বোলারদের মধ্যে যা একটু ব্যাটিং করেন যেই তাসকিন, তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৭ রান।
এ সময়টা একা লড়াই করেছেন হৃদয়। ছোট ছোট জুটির গড়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর ওভারে কিছুই কার্যকরী হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৪১তম ওভারে ফারুকির তৃতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি করেন হৃদয়। ৬৯ বলে ৫১ রানের সে ইনিংসে ছিল ৩টি চার। তাতে ভর করেই বাংলাদেশের রান ১৫০ ছাড়ায়।