বিসিবির প্রস্তাবে পিসিবির সাড়া, জুলাইয়ে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলে পরদিনই দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল। এরপর বাংলাদেশ তাদের পরবর্তী বিদেশ সফরে মে মাসের শেষের দিকে আবার এই পাকিস্তানেই আসবে। এফটিপিতে থাকা সেই সফরে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের পরবর্তী সাক্ষাৎটিও হয়ে যেতে পারে এর পরপরই। সূত্র জানিয়েছে, বিসিবির প্রস্তাবে রাজি হয়ে জুন-জুলাইয়ে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের পর জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে গিয়ে আরেকটি তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে রাজি হয়েছে পাকিস্তান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাল দুবাই থেকে মুঠোফোনে বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বড় আসরে অন্যান্য বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যখন দেখা হয়, তখন অনেক কিছু নিয়েই কথা হয়। পিসিবির সঙ্গে আমাদেরও সে রকম কিছু আলোচনা হয়েছে। তারা ওই সময়ে বাংলাদেশে দল পাঠাতে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে।’
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে পিসিবির সভাপতি মহসিন নাকভির আলোচনা অনুযায়ী এফটিপির বাইরের এই সিরিজের জন্য সময় বের করতে প্রয়োজনে এফটিপিতে থাকা কোনো সিরিজের সময় পুনর্নির্ধারণ করবে পিসিবি। বর্তমান এফটিপি অনুযায়ী জুলাইয়ের শেষ দিকে পাকিস্তান দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কথা রয়েছে।
দুবাইয়ে গত রোববার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ উত্তেজনাও ছড়াতে না পারলেও সেই সন্ধ্যায় কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ আবহই নাকি ছিল দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের রয়্যাল লাউঞ্জে। অবশ্য এ উত্তেজনাও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেই।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বর্তমান প্রধান শ্রীলঙ্কার শাম্মী সিলভা দায়িত্ব নিয়েছেন গত বছরের ৬ ডিসেম্বর। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে এসিসির আগামী বার্ষিক সভায় নতুন প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার কথা পিসিবিপ্রধান মহসিন নাকভির।
তবে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী এখানেও একটা চাপা বিরোধিতা ছিল ভারতের। বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দুই দেশের শীর্ষ ক্রিকেট কর্তাদের মধ্যে সেটি প্রকাশ পেয়েছে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের রয়্যাল লাউঞ্জেও। তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের এসিসির দায়িত্ব নেওয়ার পথে ভারতের বাধা হয়তো টিকছে না। রীতি মেনে মহসিন নাকভিই আসছেন এসিসিপ্রধানের পদে। এসিসির আগামী বার্ষিক সভায় সেটি আনুষ্ঠানিকতা পাওয়ার কথা।
ভারতে ক্রিকেটের বিশাল বাজারের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সব দেশকেই ভারতীয় শক্তিকে ‘ম্যানেজ’ করে চলতে হয়। উপমহাদেশের দেশগুলোর ক্ষেত্রে সেটা আরও বেশি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে করা নিয়ে যেমন এবার পাকিস্তানকেও মানতে হয়েছে তাদের শর্ত। এক ভারত ছাড়া অন্য প্রায় সব দলকেই টুর্নামেন্টটা খেলতে হচ্ছে পাকিস্তান-আমিরাত উড়ে উড়ে।
এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কূটনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে পারলে তা হবে সেদিকে তাদের একটি বড় পদক্ষেপ। পিসিবি এসিসির দায়িত্ব নিলে সেটাও হবে একটা অগ্রগতি। পাশাপাশি ভারতের বাইরে অন্যান্য ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দিচ্ছে মহসিন নাকভির বোর্ড।
বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতায় বিসিবিকে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী মনে করছেন পিসিবিপ্রধান। বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় স্বার্থ হাসিল হলে তাতে বিসিবিরও সায় আছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে পিসিবিপ্রধান নাকভির অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে এ বিষয়টি। সে আলোচনার সূত্র ধরেই বিসিবির প্রস্তাব মেনে ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনার বাইরে (এফটিপি) জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে দল পাঠাতে রাজি হয়েছেন পিসিবিপ্রধান।