ঠাসা সূচিতেও ওয়ানডের ভবিষ্যৎ দেখেন ডি কক
ওয়ানডের পতন নিয়ে সুরটা ধীরে ধীরে চড়া হচ্ছে। ওয়াসিম আকরাম, রবি শাস্ত্রী ও উসমান খাজা এর আগে ওয়ানডের গুরুত্বহীন হয়ে পড়া নিয়ে কথা বলেছেন। ঠাসা সূচিতে কুলিয়ে উঠতে না পারায় বেন স্টোকস ওয়ানডে ছাড়ার পর থেকেই মূলত এই সংস্করণের গুরুত্ব নিয়ে পক্ষে–বিপক্ষে কথা চলছে।
কুইন্টন ডি কক ও জস বাটলার সরাসরি ওয়ানডের বিপক্ষে কিছু বলেননি। কিন্তু ঠাসা সূচিতে সব সংস্করণ খেলার যে সমস্যা—তা বুঝিয়ে বললেন।
গত বছর বাবা হওয়ার পর পরিবারকে বেশি করে সময় দিতে টেস্ট ক্রিকেট ছাড়েন ডি কক। একটি সংস্করণ ছাড়ার পরও তাঁর ব্যস্ততা কমেনি আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্য।
লিডসে কাল দক্ষিণ আফ্রিকা–ইংল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডে বৃস্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সূচির ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেন এই প্রোটিয়া ওপেনার। আগে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে ফেলেছিল। ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন কক। কিন্তু এরপর বেরসিক বৃস্টিতে খেলা আর হয়নি।
সংবাদমাধ্যমকে ডি কক জানিয়েছেন, টেস্ট ছাড়ার পর দুটি সংস্করণ খেলেই তিনি ঠাসা সূচির চাপে পড়েছেন, ‘অন্তত এ বছর আমার ক্যালেন্ডারে সূচির ব্যস্ততা বেশি।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে গত মার্চে সিরিজের পর থেকেই খেলার মধ্যে আছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
আইপিএলে খেলেছেন, ভারতের বিপক্ষে দেশের হয়ে সিরিজেও খেলেছেন, এখন আছেন ইংল্যান্ড সফরে এবং তারপর ‘দ্য হানড্রেড’ ও সিপিএলেও খেলবেন কক। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে ভারতের বিপক্ষে খেলবেন আরেকটি সিরিজও।
ডি কক বোঝালেন, এমন ঠাসা সূচিতে ক্রিকেটারদের আসলে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কোন কোন সংস্করণে খেলব আর কোনটি বাদ দিব। যেকোনো একটি সংস্করণ থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো রাস্তা থাকে না ক্রিকেটারদের সামনে, ‘খেলোয়াড়দের জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে উঠছে—তিন সংস্করণে অনেক খেলা এবং সূচি ম্যাচের সংখ্যা বাড়ছে। খেলোয়াড়দের তাই ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কেউ যদি তিন সংস্করণই চালিয়ে যেতে পারে, তাহলে ভালো। কিন্তু বাকিদের নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হয়।’
তবে ওয়ানডে ক্রিকেট ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে—তা এখনো মনে করেন না কক। ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ওপর আস্থাই রাখলেন তিনি, ‘ওয়ানডে তো ভালোই করছে। এর ভবিষ্যৎ আছে আর আমরাও এখনো ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিততে চাই। এই সংস্করণে এখনো অনেক কিছুই আছে।’
তরুণদের তিন সংস্করণেই খেলার পরামর্শ দিয়ে ২৯ বছর বয়সী কক বলেছেন, ‘ক্যারিয়ারকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে তরুণ বয়সে তিন সংস্করণেই খেলা উচিত। বয়স বাড়লে কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে কারণ শরীর সায় দেয় না।’
তিন সংস্করণ মিলিয়ে প্রচুরসংখ্যক ম্যাচের আরেকটি সমস্যার কথা বলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলার। অনুশীলনের জন্য সময়ের অভাব।
ঠিকমতো অনুশীলন করতে না পারলে তার প্রভাব নিয়েও কথা বলেছেন ইংলিশ তারকা, ‘দলীয় সমন্বয় ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটের জন্য অনুশীলনটা ঠিকমতো করা প্রয়োজন।’
গত ২৪ দিনে ১২টি সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড, এর মধ্যে মাত্র একদিন অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে তাঁরা।