কখনো মনে হলো তিনি দার্শনিক, কখনো মনে হলো তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন প্রশ্নের গুণমান বিচার করতে, কখনো মনে হলো তিনি একজন মনস্তাত্ত্বিক। তবে মুশতাক আহমেদ আজ যে পরিচয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন, সেটা হলো তিনি বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচ।
তাইজুল ইসলামের ৫ উইকেট পাওয়ার দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে স্পিন কোচের আসাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তাইজুলের ৫ উইকেট পাওয়ার ঘটনা তো সেই সকালে। আজ এরপর চট্টগ্রাম টেস্টে যা হয়েছে, বিশেষ করে দিনের শেষটা যে রকম ব্যাটিং বিপর্যয় দেখেছে; সকালের ঘটনা এরপর আর মূল আলোচ্য বিষয় হয় কী করে!
তাইজুলকে নিয়ে দু–একটি প্রশ্নে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রশংসা করেছেন মুশতাক। বলেছেন, ‘তাইজুল দুর্দান্ত বল করেছে। স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে আমি খুশি। মিরাজ আরও ভালো করতে পারত, ধারাবাহিকতা ছিল না। তবে তাইজুল খুব ভালো ছিল। তাই এ রকম ফ্ল্যাট উইকেটে উইকেটও পেয়েছে।’
তবে সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছিল আসলে দিনের শেষ ৪০ মিনিটে বাংলাদেশের ভঙ্গুর ব্যাটিং। এ নিয়ে করা প্রশ্নগুলোয় কখনো ‘খুব ভালো প্রশ্ন’, কখনো ‘মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন’ বলে মুশতাক প্রশংসাসূচক মন্তব্য করে গেলেন।
কে জানে, স্পিন কোচকে ব্যাটিং–ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে হলে হয়তো এভাবে বলেই উত্তর শুরু করতে হয়। এসব বলেটলে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন, ‘হয়তো ওরা আরেকটু ধৈর্যশীল হতে পারত। টেস্ট ক্রিকেট পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হয়। শেষের ৪০ মিনিট…টেস্ট ক্রিকেটে এই ধাপটা আপনাকে পার করতে হবে।’
যে উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ৫৭৫ করে ইনিংস ঘোষণা করল সেখানেই বাংলাদেশের ৪ উইকেটে ৩৮ রানে দিন শেষ করা নিয়ে মুশতাকের মন্তব্য, ‘ক্রিকেট অদ্ভুত খেলা। ওয়ানডে–টেস্ট, যা–ই হোক, মৌলিক কাজটা ঠিকঠাক করতে হবে। খেলাটা মূলত আত্মবিশ্বাসের।’
আর মুশতাকের নিজের বিশ্বাস, বাংলাদেশ যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো ভালো দল হয়ে উঠবে। কিন্তু সেটা কবে! এত কোচ, এত অনুশীলনের পরও তো এখনো উন্নতির পথে ধারাবাহিকতা নেই!
মুশতাক এবার পুরোই দার্শনিক, ‘একদিনে কি একটি গাছ বড় করতে পারবেন? পানি দিতে হবে, বিশ্বাস রাখতে হবে যে গাছটি বড় হবে। একজন মালি হিসেবে আমরা এটাই করতে পারি। কোচ হিসেবে আমরাও এটাই করি। এক দিনে গাছ বড় করতে পারবেন না। একদিন না একদিন, দ্রুত হোক অথবা দেরিতে, তারা ছায়াও দেবে, ফলও দেবে।’