টাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমস্যার সমাধান হবে না, মনে করেন লারা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ক্রিকেট ঘিরে যে সংকট, শুধু বেশি বেশি অর্থ বিনিয়োগ করলেই যে সেটি মিটবে, তা মনে করেন না ব্রায়ান লারা। ক্যারিবীয় কিংবদন্তির মতে, প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের যথাযথ পরিচর্যা ও সঠিকভাবে কাজে লাগানো দরকার। যা এখন দেখা যাচ্ছে না।
ক্রিকেট দুনিয়ায় এক সময়ের প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ বহু দিন ধরেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। বর্তমানে আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বরে অবস্থান করছে ক্যারিবীয় টেস্ট দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে তৃতীয় দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হারের মুখে দাঁড়িয়ে দলটি।
১৯৮০’র দশকে টানা ১১ টেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দিন কাটাচ্ছে। ২০২৩ সালে তিনটি টেস্ট সিরিজ খেলে একটিতেও জিততে পারেনি দলটি। অনেকের ধারণা, টেস্টের প্রতি খেলোয়াড়দের অনাগ্রহ এ ক্ষেত্রে বড় কারণ। নিকোলাস পুরান, শাই হোপসহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক ক্রিকেটারই শুধু সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে আগ্রহী। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য তাঁরা টেস্ট খেলতে চান না।
সাবেক অধিনায়ক জেসন হোল্ডারসহ অনেকে মনে করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো দরকার। তবে লন্ডনে থাকা লারা বিবিসির পডকাস্ট ‘স্টাম্পড’-এ বিষয়টি নিয়ে খানিকটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন, ‘আপনি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০-২০ কোটি ডলার দেন, এতে কি আমাদের খেলা বদলে যাবে? আমি নিশ্চিত নই। আমাদের যে সব প্রতিভা আছে, সে সবই তো কাজে লাগানো হয় না।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের অন্যতম সংকট ক্রিকেটের প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহ কমে যাওয়া। অ্যাথলেটিকসের মতো খেলার জনপ্রিয়তার প্রসারে ক্রিকেটে উঠতি প্রতিভার জোগান কমেছে। এ বিষয়ে লারা বলেন, ‘এটা সত্য যে, শিশুদের জন্য অন্যান্য খেলা এবং বিভিন্ন সুবিধার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে। তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি ওয়েস্ট ইন্ডিজের করপোরেট জগতের এগিয়ে আসা হওয়া দরকার। পৃষ্ঠপোষকদের আকৃষ্ট করার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট যথেষ্ট কাজ করছে বলে আমি মনে করি না। অথচ এর মাধ্যমে অন্তত তৃণমূল ক্রিকেট, একাডেমি এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করা যেত। আমার মতে এ বিষয়গুলো খুবই, খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে দলটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে খেলছে, সেটির প্রথম পাঁচজনের টেস্ট অভিজ্ঞতা মোটে ৯৬ টেস্টের। অথচ ইংল্যান্ডের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের মোট অভিজ্ঞতা ২৫৯ টেস্টের। লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৭৯ রান তুলতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।