কিংস্টন টেস্টের প্রথম দিনে ক্যাচ ছাড়ার মচ্ছবে মেতেছিল ক্যারিবীয়রা। ছেড়েছিল তিন–তিনটি ক্যাচ। পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে শুরু ম্যাচের প্রথম দিনটায় যে বাংলাদেশ মাত্র ২ উইকেট হারায় তাতে বড় অবদান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডারদের।
আজ দ্বিতীয় দিনে আর ক্যারিবীয় ফিল্ডারদের হাত ফসকায়নি কোনো ক্যাচ। বাংলাদেশও পারেনি ভালো স্কোর গড়তে। ২ উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা দলটি দ্বিতীয় সেশনে অলআউট হয়েছে ১৬৪ রানে। সেটিও বাংলাদেশ পেরেছে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ প্রতিরোধ গড়ায়। অ্যান্টিগায় টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকে দুই ইনিংসে ২৩ ও ৪৫ রান করা মিরাজ এবার করেছেন ৭৫ বলে ৩৬ রান। আর তাতেই মোটামুটি ভদ্রস্থ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস।
আগের দিন দুবার জীবন পেয়ে ৫০ রান করা সাদমান ইসলাম আজ বেশি দূর যেতে পারেননি। আর ১৪ রান যোগ করে পেসার শামার জোসেফের বলে উইকেটকিপার জশুয়া দা সিলভার চতুর্থ শিকার হয়ে ফিরেছেন বাংলাদেশের ওপেনার। সাদমান অবশ্য দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম শিকার নন, তাঁর আগেই ফিরে গেছেন আরও তিন ব্যাটসম্যান। তাঁর বিদায়ে সকালটা আরেকটু খারাপ হয়েছে আর কী! দিনের ১৫তম ওভারে সাদমান যখন ফিরলেন বাংলাদেশের স্কোর ৯৮/৬।
এর আগেই ফিরে গেছেন শাহাদাত হোসেন, লিটন দাস ও জাকের আলী। শামার জোসেফের সোজা এক লেংথ বল ভুল লাইনে খেলে বোল্ড হয়ে যান ৮৯ বলে ২২ রান করা শাহাদাত। তাতে ভাঙে সাদমানের সঙ্গে তাঁর ৭৩ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
শাহাদাত ফেরার ৭ বল পর আউট লিটন দাস। জেইডেন সিলসের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন লিটন। প্রথম দিনে একটি ক্যাচ ছাড়া কাভেম হজ এবার আর ভুল করেননি। লিটন ফিলেছেন ৬ বলে ১ রান করে দলকে ৮৮ রানে রেখে।
তিন ওভার ওভার পঞ্চম উইকেট নেই বাংলাদেশের। শামার জোসেফের বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন দা সিলভাকে। সাদমান ফিরেছেন শামার জোসেফের পরের ওভারেই।
৯৮ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশের রানটাকে এরপর ১৩৯ পর্যন্ত নিয়ে যান মিরাজ ও তাইজুল। আগের দিনের দুর্ভাগা বোলার আলজারি জোসেফের লাফিয়ে ওঠা বলে তাইজুল স্লিপে জাস্টিন গ্রিভসের হাতে ক্যাচ দিতেই ভাঙে জুটি।
মিরাজ তবু অবিচলই ছিলেন। তাঁকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। তবে জেইডেন সিলসকে পুল করার লোভ সামলাতে না পারার শাস্তি পেয়েছেন তাসকিন। বল তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটকিপারের দিকে। একটু বেশিই ওপরে উঠেছিল বলটি। দা সিলভা লাফিয়ে উঠে ক্যাচটি নিতে না পারলেও তাঁর গ্লাভসে লেগে দিক পরিবর্তন করা বলটি লুফে নেনে প্রথম দিন দুটি ক্যাচ ছাড়া অ্যালিক অ্যাথানেজ।
১৬ বলে ৮ রান করা তাসকিনের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি মিরাজও। সিলসের ওই ওভারের শেষ বলটা ছিল শর্ট। সেই বলে ফাইন লেগে শামার জোসেফের হাতে ক্যাচ তোলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
১৬০ রানে নবম উইকেট খোয়ানো বাংলাদেশ এরপর যোগ করতে পারে আর মাত্র ৪ রান। নাহিদ রানাকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন সিলস। ইনিংসে এটি ছিল তাঁর চতুর্থ উইকেট। ১৫.৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ৫ রান দিয়েই ৪ উইকেট নিয়েছেন পেসার, মেডেন পেয়েছেন ১০টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭১.৫ ওভারে ১৬৪ (মাহমুদুল ৩, সাদমান ৬৪, মুমিনুল ০, শাহাদাত ২২, লিটন ১, জাকের ১, মিরাজ ৩৬, তাইজুল ১৬, তাসকিন ৮, হাসান ৫*, রানা ০; রোচ ২/৪৫, সিলস ৪/৫, শামার ৩/৪৯, আলজারি ১/২৯, গ্রিভস ০/১৪, হজ ০/১৪, ব্রাফেট ০/১)।