এমন ‘দুর্বল’ তামিমকে দেখে হতাশ হয়েছিলেন মাশরাফি
যেমনটা হয় আরকি! একসঙ্গে সময় কাটালে, জানাশোনা ভালো থাকলে অন্যের সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়। তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজা শুধু একসঙ্গে অনেক বছর খেলেনইনি, জাতীয় দলে তামিমের ‘মেন্টর’ই ছিলেন মাশরাফি।
মাশরাফি এখন আর জাতীয় দলে নেই, তবে হয়তো এখনো তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ আছে বলেও ধরে নেওয়াই যায়। এমন জানাশোনা থেকেই হয়তো তামিমের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আগে থেকেই একটা ধারণা আছে মাশরাফির। অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তের সময় সেই ধারণার সঙ্গে হয়তো মিল খুঁজে পাননি মাশরাফি। যে কারণে তামিমের অমন ভেঙে পড়া হতাশ করেছে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে।
আজ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে তামিমের অবসর প্রসঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘তামিমের ওপর কী গিয়েছে, তামিম ঠিক ততটা আমার সঙ্গে শেয়ার করেনি। তবে আমি সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছি তামিমকে দুর্বল দেখে। ও একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, ওর পক্ষেও অনেকে কথা বলেছে। সাধারণভাবে তামিম এটুকু লড়াই করতে পারবে না, তা আমার কাছে মনে হয়নি। তবে কখনো কখনো মানুষ ভেঙে পড়ে, তখন মানুষের সহায়তা প্রয়োজন হয়।’
কীভাবে অবসর নেওয়া তামিম আবার মাঠে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা তো এখন সবার জানাই। অবসর নেওয়ার পরের দিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিদ্ধান্ত বদলান তামিম। প্রধানমন্ত্রীই নাকি চেয়েছিলেন তামিম বিশ্বকাপে খেলুক। সেই বিবেচনায় মাশরাফি মনে করছেন তামিম বেশ ভাগ্যবান এক ক্রিকেটার, ‘আমি এ ক্ষেত্রে বলব, তামিম খুব ভাগ্যবান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকেছেন, কথা বলেছেন এবং তাকে ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছেন। এই সৌভাগ্য সবার হয় না।’
অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পরেও তামিমকে নিয়ে আলোচনা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। তামিমের পিঠের চোট নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এশিয়া কাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে পুরো ফিট তামিমকে পাওয়া যাবে কি না, সেই শঙ্কাও আছে।
তামিমকে ক্রিকেটে ফেরাতে বড় ভূমিকা রাখা মাশরাফি বলছেন চোট থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠার পরই মাঠে ফেরা উচিত তামিমের, ‘এখন যে জিনিসটা হচ্ছে, ওর ইনজুরি ওকে ভোগাচ্ছে। তামিম পারফর্ম করছে না, কেন করছে না? তার কারণ হচ্ছে ইনজুরি। তাহলে কী করা উচিত? ওর ইনজুরিটা ঠিক করে আসা উচিত। ওর এখন উচিত, ইনজুরি নিয়ে চিন্তা করা। ফিট হয়ে এলে আমি নিশ্চিত ও অটোমেটিক রান করবে আর আগের পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে।’
আগামী বিশ্বকাপে মাশরাফিকে বাংলাদেশ দলের ‘মেন্টর’ হিসেবে দেখতে চান তামিম ইকবাল। সেই চাওয়ার কথা তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীও নাকি মাশরাফিকে বলে দেন প্রস্তুত থাকতে।
মাশরাফি তখনো কিছুই জানাননি। আজও এই প্রশ্নে নতুন কিছু জানাতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক, ‘(তামিমের চাওয়া মেন্টর হিসেবে) সেটা ভিন্ন জিনিস। আমার কোনো মাইন্ড সেটআপ নেই। আমি আগেও বলেছি, আমার এ রকম কোনো মাইন্ড সেটআপ নেই। আপনারা যে প্রশ্ন করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরও নেই আমার কাছে। আমি কোনো কিছু জানি না। আমার বর্তমানে কী কাজ, সেটা শুধু জানি। কালকে যেটা কাজ আসবে, সেটা করব। পরশু দিনের কথা বলা বা কালকের চিন্তা করার এখন আমার সময় নেই।’
একপর্যায়ে দলে মেন্টরের ভূমিকা কী হবে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মাশরাফি, ‘মেন্টরে কী লাভ হয়? আমাকে একটু বলতে পারবেন? আমি জানি না, ও (তামিম) কেন চাচ্ছে! মেন্টর জিনিসটা তো...অন্য জিনিস। মেন্টরের কাজটা কী আমি জানি না। (দলের প্রয়োজনে) সে রকম পরিস্থিতি এলে, সে রকম হলে তখন বলা যাবে। এখন এ মুহূর্তে আমাকে প্রশ্ন করলে, এর উত্তর নেই।’