পাকিস্তানের এই রেকর্ড কি ভাঙবে কখনো

অস্ট্রেলিয়ার টানা ১৬ টেস্টে হেরেছে পাকিস্তানএএফপি

‘এক-দুই-তিন-চার-অজস্র-অপার-’

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা টেস্ট হারার সংখ্যাটাকে অজস্র-অপারই বানিয়ে ফেলেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় আজ ভোরে শুরু সিডনি টেস্টেও হেরে গেলে অস্ট্রেলিয়ায় টানা ১৭তম টেস্ট হারের দেখা পেয়ে যাবে পাকিস্তানিরা।

প্রতিপক্ষের মাঠে টানা টেস্ট হারার রেকর্ড অবশ্য আরও আগেই হয়ে গেছে। যে রেকর্ড নিকট ভবিষ্যতে ভাঙার সম্ভাবনা নেই। রেকর্ডটি আদৌ ভাঙবে কি না, সেই প্রশ্নও আছে। প্রতিপক্ষের মাঠে টানা হারের রেকর্ডে পাকিস্তানের পরই যে দুটি দেশ, তার একটি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলা ৮ টেস্টের ৮টিতেই বাংলাদেশ হেরেছে। অন্য দেশটি জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কায় খেলা ৮টি টেস্টেই যারা মাঠ ছেড়েছে পরাজয়ের দুঃখ নিয়ে। সিডনিতে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়ায় হারের বৃত্ত থেকে যদি বেরিয়েও যায়, তারপরও বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের সেই রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা খুব কমই। বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকায় ও জিম্বাবুয়ের শ্রীলঙ্কায় টেস্ট খেলার সুযোগই তো সীমিত।

পাকিস্তান ক্রিকেট দল প্রতিপক্ষের মাঠে টানা হারের এই রেকর্ডের একক মালিকানা সেই ২০১৬ সাল থেকেই। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩৯ রানে হেরে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অগৌরবের এই রেকর্ড থেকে মুক্তি দিয়েছিল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ায় সেটি ছিল পাকিস্তানের টানা দশম টেস্ট হার।

২০১৬ সালে ব্রিসবেনে রান তাড়ায় ১৩৭ রান করে পাকিস্তানকে অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আসাদ শফিক
এএফপি

অথচ সেই ম্যাচটি গর্ব করার উপলক্ষই হতে পারত পাকিস্তানের। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচেরও মর্যাদা পেতে পারত ব্রিসবেনের সেই টেস্ট। পাকিস্তানের সামনে অস্ট্রেলিয়া যে লক্ষ্য দিয়েছিল, এত রান করে টেস্ট জয়ের উদাহরণ তো নেই এখনো। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ১৪২ রানে অলআউট করে ২৮৭ রানের লিড নেওয়া অস্ট্রেলিয়া আবার ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ২০২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৪৯০ রানের লক্ষ্য পায় পাকিস্তান। রান তাড়ায় ২২০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন আসাদ শফিক। ম্যাচের শেষ দিনে ১৩৭ রান করে শফিক যখন আউট হলেন, পাকিস্তানের স্কোর ৪৪৯/৯। এরপর আর ১ রানই যোগ করতে পারে দলটি। কাকতালীয়ই বলতে হবে, অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের টানা হারের এই ধারা শুরু হয়েছিল ব্রিসবেনেই, সেটি সেই ১৯৯৯ সালে।

পাকিস্তান যাদের রেকর্ড ভেঙেছিল, সেই ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও রেকর্ডটা উপহার দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারত ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় খেলা ৯টি টেস্টেই হারে। ১৯৭৭ সালের সফরেই অবশ্য ওই ধারা থেকে বের হয় ভারত। সিরিজের তৃতীয় টেস্টে মেলবোর্নে ২২২ রানে জেতে ভারতীয়রা। অস্ট্রেলিয়ায় ওটাই ছিল ভারতের প্রথম টেস্ট জয়। মেলবোর্নের সেই জয়ের পর সিডনি টেস্টেও জিতে গিয়েছিল বিষাণ সিং বেদির ভারত।

আরও পড়ুন

অনাকাঙ্ক্ষিত সেই রেকর্ডে ২০০৯ সালে ভারতের সঙ্গী হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্রিসবেনেই সিরিজের প্রথম টেস্ট হেরে অস্ট্রেলিয়ায় টানা নবম হারের স্বাদ পায় ক্যারিবীয়রা। অ্যাডিলেডে ঠিক পরের ম্যাচে ড্র করে হারের বৃত্ত থেকে বেরোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়ায় আর জয়ের দেখা পায়নি। গত ১৫ বছরে অস্ট্রেলিয়ায় খেলা ছয় টেস্টের পাঁচটিতে হারা ক্যারিবীয়রা ড্র করতে পারে মাত্র একটি টেস্টে।

একটা সময়ে নিউজিল্যান্ডে টেস্ট হারাটাই অনুমিত ফল ছিল বাংলাদেশের জন্য
এএফপি

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডে টানা নবম ম্যাচ হেরে রেকর্ডের দ্বিতীয় স্থানে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গী হয় বাংলাদেশ। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টটা জিতে বেরিয়ে আসে টানা হারের সেই বৃত্ত থেকে।

প্রতিপক্ষের মাঠে টানা টেস্ট হার

*চলমান

আরও পড়ুন