পাতিরানার গোলায় ভুপাতিত জাদরানের আফগানিস্তান
একমাত্র টেস্টে হার। এরপর ৩-ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই। শ্রীলঙ্কা সফরে শুধু হারের সঙ্গে দেখা হয়েছে আফগানিস্তানের। এবার সেই আফগানদের হিসাবে যোগ হলো আরেকটি হার। ডাম্বুলায় আজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে আফগানিস্তান।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা ১৯ ওভারে অলআউট ১৬০ রানে। রান তাড়ায় ৯ উইকেটে ১৫৬ রান করতে পারে আফগানিস্তান। ৪ রানের জয়ে ৩-ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকেরা।
রান তাড়ায় আফগানিস্তানের ইনিংস একাই টেনেছেন ইব্রাহিম জাদরান। ইনিংস ওপেন করা ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। ৫৫ বলে ৬৭ রান করা ব্যাটসম্যান শেষ ওভারটা শুরু করেন ১১ রানের সমীকরণ নিয়ে। সঙ্গী শেষ ব্যাটসম্যান, তাই বিনুরা ফার্নান্ডোর করা ওভারের প্রথম ৪ বলের অন্তত দুটিতে রান নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নেননি ইব্রাহিম।
তাতে ২ বলে ১১ রানের সমীকরণ হয়ে যায় আফগানিস্তানের। মরিয়া জাদরান পঞ্চম বলটিকে আকাশে তুলে দিলেও ডিপ থার্ডম্যান ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় বেঁচে যান। তবে ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে আফগানিস্তান। এরপর শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে শুধু ব্যবধানটাই কমিয়েছেন জাদরান।
শ্রীলঙ্কা অবশ্য ম্যাচটি জিতেছে ১৯তম ওভারে! ১২ বলে ১৪ রান দরকার ছিল আফগানিস্তানের। এমন সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে কী বোলিংটাই না করলেন মাতিশা পাতিরানা। বল তো নয়, যেন কামানের গোলা ছুড়েছেন পাতিরানা। ওভার তৃতীয় বলটা ইয়র্কার দিয়েছিলেন পাতিরানা। ১৫০ কিলোমিটার গতির সেই বলে ছত্রখান নুর আহমেদের স্টাম্প। পরের দুই বলে নাভিন-উল-হক ও জাদরান সিঙ্গেল নেওয়ার পর শেষ পাতিরানার আরেকটি ভয়ংকর ইয়র্কার, এবার বোল্ড নাভিন। শুধু আফগানিস্তানের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানকেই নয়, নতুন একটি স্টাম্পও মাঠে আনতে বাধ্য করেছিলেন পাতিরানা। এর আগেও ২ উইকেট নেওয়া পাতিরানাই হয়েছেন ম্যাচসেরা। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়েছেন তিনি।
এর আগে লঙ্কানদের রানটা ১৫০ পেরিয়েছে তাতে সবচেয়ে বড় অবদান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার। ছয়ে নামা হাসারাঙ্গা ৩২ বলে করেছেন ৬৭ রান, মেরেছেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। ৬২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে হাসারাঙ্গার ব্যাট হাতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।
হাসারাঙ্গা ব্যাটিংয়ে নামেন অষ্টম ওভারে শ্রীলঙ্কা ৫৫ রানে ৪ উইকেট খোয়ানোর পর। ১৬তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়া লঙ্কান অধিনায়ক পঞ্চম উইকেটে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে ৪০ বলে যোগ করেন ৭২ রান। সামারাবিক্রমার ব্যাটে অবশ্য টি-টোয়েন্টির তেজ ছিল না। রানআউট হওয়ার আগে ২৫ রান করতে খেলেছেন ২৪ বল। শ্রীলঙ্কার ইনিংসে এ ছাড়া বলার মতো রান শুধু ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার (১৭ বলে ২৪)।
আফগানিস্তানের তিন পেসার ফজলহক ফারুকি, নাভিন-উল-হক ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই মিলে নিয়েছেন ৭ উইকেট। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট বাঁহাতি পেসার ফারুকির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ১৯ ওভারে ১৬০ (হাসারাঙ্গা ৬৭, সামারাবিক্রমা ২৫, ডি সিলভা ২৪; ফারুকি ৩/২৫, নাভিন ২/২৫, ওমরজাই ২/৩০)।
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৫৬/৯ (ইব্রাহিম ৬৭*, জানাত ২০, নাইব ১৬; পাতিরানা ৪/২৪, শানাকা ২/১৭)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাতিশা পাতিরানা।