যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়ে বাবরকে আউট করেছেন, জানালেন নাহিদ রানা

আউট হওয়ার পর বাবরএএফপি

বাবর আজম তখনো একটি রানও করতে পারেননি। শরীফুল ইসলামের বলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাবরের ক্যাচ ছাড়েন লিটন দাস। তাতে জেগেছিল শঙ্কাও।

বাবর না আবার উইকেটে খুঁটি গেড়ে বসেন! বাবর শেষ পর্যন্ত বাধা হতে পারেননি। নাহিদ রানার বলে ২২ রান করে আউট হয়েছেন। ক্রিজে সেট থাকা বাবরকে কীভাবে আউট করেছেন মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা রানা? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে বিসিবি প্রকাশিত এক ভিডিওতে।

আরও পড়ুন

রানা জানিয়েছেন, পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হাসান। সেই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করেছেন, সেটিই বলেছেন রানা, ‘অধিনায়ক আমাকে সামনে সামনে বাউন্সার করার পরিকল্পনা দিয়েছিল। সে (বাবর) আগেই চাপে ছিল, কারণ অন্য দুজন (শরীফুল ও হাসান মাহমুদ) ভালো বোলিং করে গেছে। ব্যাকফুটে থাকতে থাকতে সামনের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে।’ নাহিদের করা ঘণ্টায় ১৪৬.৪ কিলোমিটার গতির বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন পাকিস্তানের সাদা বলের অধিনায়ক।

রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্টের প্রথম ইনিংসে বেশ খরুচে ছিলেন নাহিদ। ১৯ ওভারে রান দিয়েছিলেন ১০৫, উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ ওভারে ৩০ রান দেন। খরুচে মনে হলেও এই ইনিংসে একের পর এক বাউন্সারে ব্যাটসম্যানদের বেশ কয়েকবার বিপদে ফেলেন নাহিদ। তিনি তাঁর বোলিং সম্পর্কে বলেছেন, ‘উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিল। আমরা বোলাররা চেষ্টা করেছি ব্যাটসম্যানকে লাইন না দিয়ে লাইন টু লাইন বোলিং করা। বোলিংয়ে যখন আসি, তখন অধিনায়ক একটা পরিকল্পনা দেন। নিজের প্রতি আমার ভরসা ছিল, অধিনায়কেরও ভরসা—ওই অনুযায়ী বোলিং করা চেষ্টা করেছি।’

আরও পড়ুন

২১ বছর বয়সী এই পেসার কৃতিত্ব দিয়েছেন সতীর্থদেরও, ‘সাকিব ভাই–মুশফিক ভাইদের মতো লিজেন্ডদের সঙ্গে এক দলে খেলা অনেক বড় কিছু। যাঁদের খেলা টিভিতে দেখেছি, তাঁদের সঙ্গে মাঠে খেলছি, এই বিষয়টা আমাকে উৎসাহ দেয়। শুরুর দিকে বোলিং করার সময় ব্যাকফুটে ছিলাম—হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ভাই কামব্যাক করতে সহায়তা করেছেন। লাইন–লেংথ ঠিক করে বোলিং করতে বলেছেন। নতুন একটা স্পেল যখন শুরু করেছি, তখন তাঁরা বলেছেন, “এটা করলে ভালো হয়”, এভাবে অনেক সাহায্য করেছেন।’

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ভালো করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। অ্যাকশনে নাহিদ রানা।
এএফপি

রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ইনিংসেই ভালো বোলিং করেছেন হাসান। উইকেট নিয়েছেন ৩টি। হাসানের মুখেও শোনা গেছে রানার প্রশংসা, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপটাই অন্য রকম। নাহিদের বোলিং অ্যাফোর্ট দেখে বুঝতে পারি ও খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি ও মানিয়ে নিতে পারবে, ওর জন্যই ভালো। চেষ্টা করছি ওকে যত বোঝানো যায়। ওকে সাহস দেওয়া, উৎসাহ দেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে ও যাতে ভালো বোলিং করতে পারে এটাই চেষ্টা করি।’

বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে হাসান আরও বলেছেন, ‘ম্যাচের আগে যে অনুশীলন করেছিলাম, তখন ভালো জায়গায় বোলিংয়ের চেষ্টা করেছি, ওটার প্রভাবই ম্যাচে পড়েছে। আমি ও শরীফুল জুটি হিসেবে বোলিং করেছি, এরপর রানা এসেছে। ও ব্যাটসম্যানদের কঠিন সময় দিয়েছে, এটা আমাদের হেল্প করছে, সঙ্গে দলের জন্যও ওর অবদান ছিল।’

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশের জয়ে বল হাতে ভালো ভূমিকা রাখেন সাকিব
এএফপি

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের শেষ দিনে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন স্পিনাররা। সাকিব ও মিরাজ—দুজনে মিলে নিয়েছেন ৭ উইকেট। হাসান জানিয়েছেন, দলের সবার বিশ্বাস সাকিব-মিরাজের ওপর ছিল, ‘যেহেতু শেষ দিনে উইকেটে টার্ন ছিল। সাকিব-মিরাজ ভাই গুরুত্বপূর্ণ স্পেল করেছেন। সবার বিশ্বাস ছিল, স্পিনে ওদের আটকাতে পারব। এই হিসেবে ওনারা উইকেটগুলো নিয়েছেন, ওদের অলআউট করতে পেরেছি। খুব দারুণ সময় কাটিয়েছি মাঠে।’

আরও পড়ুন