ভারতের হার উদ্‌যাপন করে গ্রেপ্তার হওয়া ৭ কাশ্মীরির জামিন

গ্রেপ্তার হওয়া ৭ ছাত্রকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছেছবি : এএফপি

বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের হার উদ্‌যাপন করে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কাশ্মীরের সাত ছাত্র। স্থানীয় এক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সাত ছাত্রকে ভারতের আদালত আজ শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন।

স্থানীয় আদালতের বিচারক সাত ছাত্রের জামিন মঞ্জুরের সময় দুটি শর্ত আরোপ করেছেন—তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো সময় তলব করা হলে তাঁদের উপস্থিত থাকতে হবে এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে আর লিপ্ত হওয়া যাবে না।

গত ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফাইনালে ফেবারিট হয়েও অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় স্বাগতিক ভারত। এরপর ওই সাত ছাত্র রোহিত-কোহলিদের হার উদ্‌যাপন করতে শুরু করেন। এ সময় তাঁরা ভারতবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন এবং পাকিস্তানের প্রশংসা করে উল্লাস করতে থাকেন। যাঁরা ওই সাত ছাত্রের সঙ্গে উদ্‌যাপনে অংশ নেননি, তাঁদের ভয়ও দেখান।

বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
ছবি : এএফপি

এ ঘটনায় অন্য এক ছাত্র থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার সাত ছাত্র ভীতি প্রদর্শন করায় তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমনসংক্রান্ত বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট, সংক্ষেপে ইউএপিএ) পাশাপাশি অন্যান্য অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

নরেন্দ্র মোদির সরকার কাশ্মীরি অধিবাসী, সাংবাদিক, ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে এই ইউএপিএ আইন ব্যবহার করে আসছে। এ আইনের আওতায় কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই কাউকে ছয় মাস আটক করে রাখা যায়। জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে গতকাল পুলিশ ইউএপিএ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলে আদালত আজ ওই সাত ছাত্রের জামিন মঞ্জুর করেন। তাঁদের আইনজীবী শফিক ভাট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই দেশই ওই অঞ্চলের পূর্ণ দখল দাবি করে। এতে করে অঞ্চলটি বিভক্ত হয়ে যায়। তবে দুই দেশই আলাদা আলাদা ভাগ শাসন করে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে স্বাধীনতা অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একত্র হওয়ার দাবিতে আন্দোলন হয়ে আসছে। এ নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও যুদ্ধে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক, সৈনিক ও আন্দোলনকারী মারা গেছেন।

নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের এই নীল সমুদ্র স্তব্ধ করে দিয়েছে
ছবি : এএফপি

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বহু মানুষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানসহ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিপক্ষে খেলা যেকোনো দলকে সমর্থন করে আসছে। ভারতশাসিত কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পর আতশবাজি ফোটাতেও দেখা গেছে।

এর আগে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় উদ্‌যাপন করায় ৭ জনকে ইউএপিএ আইনের আওতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেখানকার কয়েক শ ছাত্রের বিরুদ্ধে তদন্তও করা হয়েছিল।