কুমির-হাঙরের হাত থেকে বোথামকে বাঁচালেন ‘চিরশত্রু’ হিউজ
অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলের ময়েল নদীতে প্রচুর কুমির ও হাঙরের বাস। গত সপ্তাহে মাছ ধরতে গিয়ে এই নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথাম।
তাঁকে বাঁচিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এমন এক ব্যক্তি, ক্রিকেট মাঠে যাঁর সঙ্গে বোথামের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে কয়েকবার। বোথাম নিজেই জানিয়েছেন এ ঘটনা।
৬৮ বছর বয়সী বোথাম মাছ ধরতে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার মার্ভ হিউজের সঙ্গে। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে দুজনে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এখন তাঁরা বন্ধুস্থানীয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মেইল অনলাইন’ জানিয়েছে, মাছ শিকারে গিয়ে বোথাম নৌকার দড়ির সঙ্গে স্যান্ডেল জড়িয়ে যাওয়ায় নদীতে পড়ে যান। নদীতে কুমির ও হাঙর ছিল বলে ব্যাপারটা বিপজ্জনকই ছিল। তবু দ্রুতই উদ্ধার করা হয় তাঁকে।
রসিকতাপ্রিয় বোথাম ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে হেরাল্ড সানকে মজা করে বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত ক্রোকোডাইল বিফি বেঁচে গেছে।’ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ‘বিফি’ নামে পরিচিত ছিলেন বোথাম। ১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া অস্ট্রেলিয়ান সিনেমা ‘ক্রোকোডাইল ডান্ডি’র রেফারেন্স টেনে নিজেকে বলেছেন ‘ক্রোকোডাইল বিফি’।
বোথাম আরও বলেছেন, ‘পড়ে যাওয়ার চেয়েও দ্রুতগতিতে (নদীর) পানি থেকে উঠে এসেছি। বেশ কিছু কুমির আমার দিকে উঁকি দিচ্ছিল। সৌভাগ্যবশত পানিতে কী আছে, সেটা ভাবার মতো সময় আমার ছিল না।’
ময়েল নদী অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলের রাজধানী ডারউইন থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। হিউজকে নিয়ে সেখানে বারামুন্ডি (ভেটকি প্রজাতির বড় মাছ) শিকারে গিয়েছিলেন বোথাম। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানিয়েছে, ছোট নৌকা থেকে অপেক্ষাকৃত বড় জলযানে ওঠার সময় দড়ির সঙ্গে স্যান্ডেল পেঁচিয়ে যাওয়ায় নদীতে উবু হয়ে (মাথাটা আগে পড়েছে) পড়ে যান বোথাম।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ কর্প’ জানিয়েছে, নৌকার নিচে তখন কয়েকটি বুল শার্ক (হাঙর) ছিল। ক্ষুধার্ত হাঙরগুলো কুমিরদের ফেলে যাওয়া মাংস খাচ্ছিল।
২০২০ সালে ইয়ান বোথামকে অস্ট্রেলিয়ায় যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত করা হয়। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায়ই পা পড়ে সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডারের। এবারের সফরে ক্রিকেট মাঠে ‘চিরশত্রু’ মার্ভ হিউজের সঙ্গে মাছ ধরতে চার দিনের জন্য বেরিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাটা দ্রুতই ঘটে গেছে জানিয়ে বোথাম বলেছেন, ‘এটা একটা দুর্ঘটনা মাত্র। সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে গেছে। এখন আমি একদম ঠিক আছি।’
ইয়ান বোথাম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচবার অ্যাশেজ জিতেছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের কাছে তিনি খুব জনপ্রিয়। ২০০৭ সালে তিনি ‘নাইটহুড’ উপাধি পান।
খেলোয়াড়ি–জীবনে মুখোমুখি লড়াইয়ে একাধিকবার স্লেজিংয়ে জড়িয়েছেন বোথাম ও হিউজ। সেই তাঁরাই এখন বন্ধু। দুঃসময়ের বন্ধুই যে প্রকৃত বন্ধু, বোথামকে নদী থেকে তুলে কুমির–হাঙরদের কবল থেকে বাঁচিয়ে যেন সেটাই প্রমাণ করেছেন হিউজ।