সাকিব এখন সবই খেলতে চান
ভারত বিশ্বকাপ থেকে নিয়ে আসা চোখের সমস্যায় ভুগেছেন বিপিএলের শুরুতেও। তবে বিপিএলের মধ্যেই সেটা অনেকটা কাটিয়ে উঠে সাকিব আল হাসান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন তিনটি ম্যাচ। চট্টগ্রামে আজ থেকে তো খেলতে নেমে যাচ্ছেন টেস্ট ক্রিকেটই।
সাকিবের এই ফেরা বাংলাদেশ দল এবং বিসিবির জন্য বড় এক স্বস্তি। বিশেষ করে তিনি যখন বিসিবিকে এই বলে নিশ্চিত করেছেন যে এখন থেকে বাংলাদেশ দলের হয়ে তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই নিয়মিত খেলতে চান। আসছে জিম্বাবুয়ে সফর এবং টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ–পরবর্তী বাংলাদেশ দলের ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সূচিতেও সাকিবকে পাওয়া যাবে বলে আশ্বস্ত হয়েছে বিসিবি।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুস কাল মুঠোফোনে সেটাই নিশ্চত করেছেন এই প্রতিবেদককে, ‘সাকিবের সঙ্গে বোর্ডের যে কথা হয়েছে, সে অনুযায়ী বলতে পারি, ও আমাদের আসন্ন সিরিজগুলোতে তিন সংস্করণেই খেলার জন্য অ্যাভেইলেবল আছে বলে জানিয়েছে। সে সবই খেলতে চায়।’
চোখের সমস্যার কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজ দুটি সাকিব নিজ থেকেই খেলেননি। তিনি চেয়েছিলেন প্রিমিয়ার লিগে খেলে আরও ভালোভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে। লিগে শেখ জামালের হয়ে তিন ম্যাচে ১৯, ৩৪ ও ৫৩ রানের সঙ্গে নিয়েছেন ৩টি, ১টি ও ২টি উইকেট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে খেলার সিদ্ধান্তও সেই ধারাবাহিকতায়ই আসা। চোখের সমস্যা এখন আর তাঁর খেলায় কোনো বাধা নয় বলে বোর্ডকে জানিয়েছেন সাকিব।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০২৪ সালটা দারুণ ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাবে বাংলাদেশ দলের। বিশ্বকাপের পর এ বছর টেস্ট ম্যাচই আছে ৮টি, সঙ্গে সীমিত ওভারের ক্রিকেট তো আছেই। বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন আশাবাদী, অন্তত এ বছরের বাকি সব ম্যাচের জন্যই সাকিবকে তাঁরা বিবেচনায় রাখতে পারবেন, ‘আশা করি, তিন সংস্করণেই সামনের আন্তর্জাতিক সিরিজ ও টুর্নামেন্টগুলোতে আমরা সাকিবকে নিয়মিত দলে রাখার কথা ভাবতে পারব।’
ভারত বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চান। তবে ফর্ম ভালো থাকলে খেলা চালিয়ে যেতে পারেন তারপরও। বিসিবি অবশ্য এখনই অত দূর ভাবছে না। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত সাকিব নিরবচ্ছিন্নভাবে খেলে যান, আপাতত এটাই তাঁদের আশা।
টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এ বছর বাংলাদেশ দলের শুধু টেস্ট ম্যাচই ছিল ১০টি। বিশ্বকাপের পরপর জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজটি দুই বোর্ডের সম্মতিতে পিছিয়ে যাওয়ায় দুটি টেস্ট কমে যাবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী কাল জানিয়েছেন, দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি–টোয়েন্টির সিরিজটি পরবর্তী কোনো সুবিধাজনক সময়ে আয়োজন করবে আফগান ক্রিকেট বোর্ড।
বিশ্বকাপের পর এখন তাই বাংলাদেশের প্রথম খেলা আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাটিতে দুটি টেস্ট। পরের মাসেই দুই টেস্ট ও তিন টি–টোয়েন্টির ভারত সফর। অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশে আসবে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে। নভেম্বর–ডিসেম্বরে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি–টোয়েন্টির সফরে বাংলাদেশ দল যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
সাকিব এই সব ম্যাচেই নিজেকে ‘অ্যাভেইলেবল’ বলে জানালেও ফিটনেস ধরে রাখার চ্যালেঞ্জটা তাঁর জন্য থাকবে। আর তিনি হয়তো বেছে বেছে সিরিজ খেলবেন না, কিন্তু টানা খেলার ধকল এড়াতে কোনো একটি সিরিজ চাইলে না–ও খেলতে পারেন বা টিম ম্যানেজমেন্টেরও সুযোগ থাকবে প্রয়োজনবোধে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার। বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সাকিবের কাছ থেকে আরও বিস্তারিত জানতে চাইবে বিসিবি।