বাবরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এড়িয়ে চলতে বললেন রমিজ রাজা
প্রথম ইনিংসে শূন্য, দ্বিতীয় ইনিংসে ২২। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম টেস্টে এই ছিল বাবর আজমের রান। শুধু চলতি সিরিজই নয়, বাবর ব্যাট হাতে ব্যর্থ অনেক দিন ধরেই। সর্বশেষ ৭ টেস্টেই তাঁর ফিফটি নেই। আবার তিন সংস্করণ মিলিয়েই গত এক বছরে সেঞ্চুরি মাত্র একটি। একই সময়ের গড়ও তাঁর ক্যারিয়ার গড়ের চেয়ে বেশ কম।
ব্যাট হাতে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া বাবরকে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও সাবেক পিসিবি প্রধান রমিজ রাজা। এর মধ্যে প্রথম পরামর্শই হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এড়িয়ে চলা। ভালো খেলতে না পারলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স, ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হয়, যা বাবরের সামনে পড়াটা তাঁর জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন রমিজ।
গত এক দশকের মধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান ধরা হয় বাবরকে। কিন্তু বছরখানেক ধরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ও টুর্নামেন্টের কোনোটিতেই ধারাবাহিক নন তিনি। ক্যারিয়ার গড় ৪৭.৭৩ হলেও গত এক বছরে খেলা ৩৭ ম্যাচে গড় ৩৬.০৮। একই সময়ে পাকিস্তান দলও ছিল ব্যর্থতার চোরাবালিতে। এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলতে পারেনি, ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা করতে পারেনি সেমিফাইনালে। আর জুনে হওয়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে পাকিস্তান। ম্যাচে দুই দলের তিনজন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি করলেও বাবর তুলতে পেরেছেন মোটে ২২ রান। সব মিলিয়ে বাবর ও পাকিস্তানের ব্যর্থতা চলছে সমান্তরালে। রাওয়ালপিন্ডিতে আজ থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্টের আগে পুরো পাকিস্তান দলেরই সমালোচনা হয়েছে।
তবে দলগত ব্যর্থতায় অনেকে জড়িত থাকলেও বাবরই সবচেয়ে বেশি ভুগছেন বলে মনে করেন রমিজ, ‘মনে হচ্ছে, বাবর ছাড়া পুরো জাতির আর কোথাও সমস্যা নেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যাপারটা এমন হয়ে গেছে যে দল হেরেছে, আপনিও রান পাননি আর আপনি মানুষটি বাবর আজম—তাহলেই শিরোনাম হয়ে যায় ‘‘আমরা কীভাবে হারলাম? সে কী করল? তাঁর অবদান কী?’’ এর সঙ্গে আছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এখানে যে কেউই সমালোচনা করতে পারেন, হাসাহাসি করতে পারেন। এগুলো যতটা সম্ভব নিরুৎসাহিত করতে হবে।’
রমিজ এখনো বাবরকেই পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখেন, ‘ক্রিকেট আমাদের রক্তে মিশে আছে। জানি না, টেস্ট ক্রিকেটে এভাবে কত দিন হারতে হবে। একটা দলের ভক্ত–সমর্থক বাড়ে জয়ের মাধ্যমে। কারণ, সমর্থকেরা সফল গল্পের অংশ হতে চান। বাবরের সাফল্যের গল্প আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তিন সংস্করণেই সে বড় মাপের খেলোয়াড়।’
ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বাবরকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন রমিজ, ‘প্রথমত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এড়িয়ে চলতে হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে মনোযোগ রাখতে হবে। রান না পেলে তখন এটা মানসিক খেলায় পরিণত হয় এবং অন্য ভাবনা শুরু হয়। বাবরের চেহারায় উদ্বেগ ফুটেও উঠেছে। সে ব্যাপক চেষ্টা করে যাচ্ছে, সুতরাং হতাশাও কাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সে কীভাবে ব্যাটিং করছে।’
এ ক্ষেত্রে বাবরের জন্য ক্রিকেটীয় পরামর্শও তুলে ধরেছেন রমিজ, ‘ক্রিজে বেশি সময় কাটাতে পারছো না বলে মনোযোগ সরে যাচ্ছে। যদি পা সামনে নিয়ে খেলতে চাও, ওভাবেই খেলো। যদি পা পেছনে নিয়ে খেলতে চাও, তাহলে ক্রিজ ব্যবহার করো। অনুশীলনে হুক আর পুল শট চর্চা করো। তাহলেই বলে মনোযোগ বাড়াতে পারবে।’