প্রথম সেশনটা শেষ হয়েছিল দুটি সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে। সাকিব আল হাসান খেলছিলেন ৭৪ রানে, মুশফিকুর রহিমের নামের পাশে তখন ৫৩ রান। আয়ারল্যান্ডের বোলিং, মিরপুরের কন্ডিশন— সবই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিল ব্যাটসম্যানদের দিকে। সুযোগটা একজন নিলেন, আরেকজন নিলেন না।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই সাকিব আউট ৮৭ রানে। তবে মুশফিক হতাশ করেননি। ক্যারিয়ারের দশম টেস্টে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে তিনি দ্বিতীয় সেশন শেষে অপরাজিত ১৫৯ বলে ১২৪ রানে। সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ খেলছেন ২০ বলে ১৮ রান নিয়ে। মাঝে ৪১ বলে ৪৩ রান যোগ করা লিটন দাসের অবদানও যোগ হয় বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৩১৬ রান, লিড ১০২ রানের।
সেঞ্চুরির সম্ভাবনার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সাকিবই। সকালের সেশনে মুমিনুল হক আউট হওয়ার পর ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন সাকিব। তাতে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটিটি এসেছে মাত্র ৪৫ বলে, বাউন্ডারি ৯টি। পেসারদের বলে একের পর এক ড্রাইভ খেলে গেছেন, স্পিনারদের করেছেন লেট কাট। আর বাজে বলে খেলেছেন স্লগ সুইপ আর পুল শট।
আইরিশ বোলাররা যেন সাকিবকে থামানোর উপায়ই খুঁজে পাচ্ছিল না। উইকেটে আরেকটু সময় কাটাতে পারলেই হয়তো ছয় বছরের টেস্ট সেঞ্চুরির খরাটা আজ কাটাতে পারতেন সাকিব। কিন্তু অফ স্পিনার অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে অদ্ভুতভাবে কট বিহাইন্ড হয়ে গেলেন সাকিব। আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৯৪ বলে ৮৭ রান।
মুশফিক অবশ্য সাকিবের ভুলটা করেননি। দ্রুত রান তুলেছেন তিনিও, তবে সাকিবের গতিতে নয়। সকালের সেশনে মুশফিকের ব্যাটিং টেস্টসুলভই ছিল। তবে পরে আইরিশদের বাজে বলগুলোতে চড়াও হয়েছেন। তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আইরিশদের বাজে ফিল্ডিংও। ইনিংসের ৫৫তম ওভারে এডেয়ারের বলেই চার মেরে ১৩৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল তাঁর ৭৫.৫৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে। মুশফিকের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। এখনো দ্রুততম সেঞ্চুরি হয়ে আছে ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে করা ৮৮.৫৯ স্ট্রাইক রেটের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটিই।
মুশফিকের সঙ্গে লিটন দাসের জুটিতেও ছিল ওয়ানডের মেজাজ। দুজন মিলে ৮৭ রান যোগ করেন মাত্র ৮৪ বলে। ইনিংস বড় করার সুযোগ ছিল লিটনেরও। কিন্তু অতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে আউট হয়ে গেলেন ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়েও। বেন হোয়াইটের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। আউট হওয়ার ঠিক আগের বলেই বেঁচেছেন রান আউট থেকে।