হ্যাজলউডের দিনে লিলিকে ছাড়িয়ে গেলেন স্টার্ক
নিউজিল্যান্ড: ১ম ইনিংসে ১৬২ অস্ট্রেলিয়া: ১ম ইনিংসে ১২৪/৪
প্রথম দিনে সকালে পিচের সবুজ ঘাসের সুবিধা তুলতে টসে জিতেই বোলিং বেছে নিয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের সিদ্ধান্তটা যে ভুল ছিল না, বল হাতে নিয়ে সেটাই প্রমাণ করেছেন জশ হ্যাজলউড–মিচেল স্টার্করা। দুই পেসারের তোপে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ ১৬২ রানেই। হ্যাজলউড নিলেন ৫ উইকেট আর ৩ উইকেট নেওয়ার পথে স্টার্ক হয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের মধ্যে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
বোলারদের নৈপুণ্যে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দিন শেষে সুবিধাজনক অবস্থানে। মারনাস লাবুশেনের অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংসে দ্বিতীয় দিন ৪ উইকেটে ১২৪ রান নিয়ে নামবে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের রান ছুঁতে লাবুশেনদের দরকার আর ৩৮ রান।
ওয়েলিংটনে হেরে ক্রাইস্টচার্চে নামা নিউজিল্যান্ড দিনের শুরুতে অভিনন্দন জানায় কেইন উইলিয়ামসন ও টিম সাউদিকে। বর্তমান অধিনায়ক সাউদি ও সাবেক অধিনায়ক উইলিয়ামসন এই ম্যাচ দিয়ে শততম টেস্টের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। তবে দুজনের কারও জন্যই প্রথম দিনটা ভালো যায়নি। উইলিয়ামসন ৩৭ বলে ১৭ রান করে এলবিডব্লু হয়েছেন হ্যাজলউডের বলে। আর ৮ ওভার বল করে উইকেটের দেখা পাননি সাউদি। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পারফরম্যান্সই কিউইদের প্রথম দিনের খেলার প্রতীকী চিত্র।
উদ্বোধনী জুটিতে টম ল্যাথাম–উইল ইয়াং জুটি দেড় ঘণ্টা উইকেটে টিকেছিলেন। কিন্তু ৪৭ রানের জুটি ভাঙতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। এর মধ্যে ১৪ রান করা ইয়াংকে তৃতীয় স্লিপে মার্শের ক্যাচ বানিয়ে স্টার্ক লিলির উইকেট–সংখ্যায় ভাগ বসান। এরপর গ্লেন ফিলিপসকে অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচে ফিরিয়ে তাঁকে ছাড়িয়েও যান। ১৯৮৪ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলা লিলি ৭০ টেস্টে ৩৫৫ উইকেট নিয়ে এত দিন অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ছিলেন। স্টার্ক তাঁকে ছাড়িয়েছেন ৮৯তম টেস্টে। অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট গ্লেন ম্যাকগ্রার (৫৬৩)।
স্টার্কের লিলিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দিনে সবচেয়ে সফল অবশ্য হ্যাজলউড। নিউজিল্যান্ডের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনকেই ফেরানো এই পেসার ইনিংস শেষ করেছেন ৩১ রানে ৫ উইকেটে। এটি টেস্টে তাঁর ১২তম ৫ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস ল্যাথামের ৩৮ রানের।
কিউইদের ৪৫.২ ওভারের মধ্যে গুটিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াও ব্যাটিংয়ের শুরুতে খুব একটা স্বস্তি পায়নি। দুই ওপেনার স্টিভেন স্মিথ ও উসমান খাজা ফেরেন ৩২ রানের মধ্যে। এর মধ্যে ওপেনিংয়ে ছন্দের খোঁজে থাকা স্মিথ (১১) অভিষিক্ত পেসার বেন সিয়ার্সের তৃতীয় বলেই এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন, রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়াকে দিনের বাকি অংশে টেনেছেন তিনে নামা লাবুশেন। ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান ৮০ বলের ইনিংসে ৮ চারে ৪৫ রান করে অপরাজিত আছেন। কিউইদের হয়ে ৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন ম্যাট হেনরি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে):
নিউজিল্যান্ড: ১ম ইনিংসে ৪৫.২ ওভারে ১৬২ (ল্যাথাম ৩৮, ইয়ং ১৪, উইলিয়ামসন ১৭, রবীন্দ্র ৪, মিচেল ৪, ব্লান্ডেল ২২, ফিলিপস ২, কুগেলিয়েন ০, হেনরি ২৯, সাউদি ২৬, সিয়ার্স ০*; স্টার্ক ৩/৫৯, হ্যাজলউড ৫/৩১, কামিন্স ১/৩৫, লায়ন ০/৬, মার্শ ০/১০, গ্রিন ১/২১)।
অস্ট্রেলিয়া: ১ম ইনিংসে ৩৬ ওভারে ১২৪/৪ (স্মিথ ১১, খাজা ১৬, লাবুশেন ৪৫*, গ্রিন ২৫, হেড ২১, লায়ন ১*; সাউদি ০/২৯, হেনরি ৩/৩৯, সিয়ার্স ১/৩৮, কুগেলিয়েন ০/১৩)।