চলে গেলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটে চোখ ছিল হাথুরুসিংহের
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ফিরলেন। ঢাকায় এসেছেন ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে। কাল মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এসেছিলেন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। আজ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হলেন সংবাদমাধ্যমেরও।
প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর দূরে থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটে বরাবরই চোখ ছিল, তাদেরকে অনুসরণ করেছেন—হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন এমন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি আলাদা একটা ‘সফট কর্নার’ থাকার কথাও বলেছেন।
২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে চিঠি পাঠিয়ে বিদায় নেওয়া, এবার রাসেল ডমিঙ্গোর জায়গায় আবার ফিরে আসা—কীভাবে ব্যাপারটি হলো, হাথুরুসিংহে আজ নিজের মুখেই খুলে বললেন সেটি, ‘চলে যাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করছি আমি। সময়ে–সময়ে অনেক খেলোয়াড় ও কর্মকর্তার সঙ্গে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমার যোগাযোগ হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সব সময়ই আমার একটা “সফট কর্নার” ছিল। এটা ছিল আমার প্রথম আন্তর্জাতিক দায়িত্ব। মনের কোণে সব সময়ই এ ভাবনা ছিল—আমি ফিরে আসতে চাই। তবে এত দ্রুত হবে ভাবিনি।’
তবে, ‘এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (বিসিবি) সভাপতি ও কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা হলো, আমরা কিছু বিষয় আলোচনা করেছি। মনে হয়েছে, এটিই উপযুক্ত সময় ফিরে আসার, যেহেতু ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আসছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের মৌসুম শেষ করে এলে বেশি দেরি হয়ে যেত। এর ফলে এখনই উপযুক্ত সময় মনে হয়েছে। বিগ ব্যাশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কেন আবার আগ্রহী হলেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাথুরুসিংহে বললেন, ‘আমার দিক থেকে এ প্রশ্নের উত্তর দেব। আমার মনে হয়, আগামী দুই–তিন বছর একটা পালাবদলের মধ্য দিয়ে যেতে হবে আমাদের। বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার আসলেই অনেক ভালো করেছে। তাদেরকে দারুণ এক প্রজন্ম হিসেবে মনে রাখা হবে। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে অনেক ভালো খেলোয়াড় উঠে আসছে। এমন চ্যালেঞ্জের অংশ হতে পারাটা আমাকে সব সময়ই প্রেরণা জুগিয়েছে।’
প্রথম দফা পদত্যাগ করে যাওয়ার পর এবার দায়িত্ব নেওয়ার আগে আর কোনোবার প্রস্তাব পেয়েছেন কি না, সেটি সরাসরি বলতে চাননি। তবে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন, একবার-দুবার নয়, এর আগে বেশ কয়েকবারই প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। এর আগে তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। এবার চাপটা আরও বেশি কি না, সেটিরও জবাবেও যা বললেন, সেটির অর্থ—সব জেনেশুনেই তিনি এসেছেন।
হাথুরুসিংহের উত্তরটা ছিল এমন, ‘কোচেরা সব সময়ই চাপে থাকে। আমাদের সবার প্রত্যাশা আছে, এমনকি জাতি হিসেবেও। কারণ, বিশ্বকাপ ভারতে হতে যাচ্ছে। আমরা এ সংস্করণে সব সময়ই ভালো করি। একই সঙ্গে প্রস্তুতি ও সামর্থ্য আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। এখন এটি নিশ্চিত করতে হবে, মূল সব খেলোয়াড় যাতে ফিট ও সুস্থ থাকে। সেটা করতে পারলে আমরা বিশ্বকাপে ভালো একটা সুযোগই নিতে পারব।’
ওয়ানডে বরাবরই বাংলাদেশের স্বচ্ছন্দের জায়গা হলেও বাকি দুটি সংস্করণে পায়ের নিচে মাটি থাকে না প্রায়ই। হাথুরুসিংহের কথা শুনে মনে হলো, টি-টোয়েন্টি নিয়ে আলাদা করেই ভেবেছেন তিনি, ‘তারা টেস্টে ভালো করেছে, নিউজিল্যান্ডে জিতেছে। দেশেও টেস্টে ভালো করেছে। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের পথটা খুঁজে নিতে হবে। অন্যদের অনুসরণ করে হবে না, আমরা তো আর তারা নই। নিজেদের শক্তি দরকার, নিজেদের গেম প্ল্যান দরকার। এই চ্যালেঞ্জ নিতে, দলের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।’