রাহুলের আক্ষেপ—সফল রিভিউর কৃতিত্ব তাঁকে দেন না বুমরা–শামি–সিরাজরা
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার ‘যথেষ্ট রান না করায়’ রাহুলকে সে ম্যাচে শতকের আক্ষেপে (অপরাজিত ৯৭) পুড়তে হয়েছে।
৩১ বছর বয়সী রাহুল যে ছন্দে ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল শিগগিরই শতকের আক্ষেপ ঘুচে যাবে। তবে সেটা হয়নি। পরের সাত ম্যাচের ছয়টিতে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলেও একটি অর্ধশতকও পাননি। অবশ্য এর মধ্যে দুটি ম্যাচে ছিলেন অপরাজিত। তিনটিতে থিতু হওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি।
ভারতের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের ‘সাময়িক রান–খরা’ অবশেষে কেটেছে। জন্মের শহর বেঙ্গালুরুতে পরশু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬৪ বলে করেছেন ১০২ রান। বিধ্বংসী ইনিংসটি খেলার পথে ৬২ বলে শতক ছুঁয়েছেন, যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যানের দ্রুততম।
মুম্বাইয়ে আগামীকাল বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে এই শতক স্বাভাবিকভাবেই রাহুলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। পরশু ম্যাচ শেষে সে কথা জানিয়েছেনও। তবে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেটকিপিংয়েও যে বেশ ভালো করছেন, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাহুল। একই সঙ্গে মজা করে বলেছেন, ডিআরএসে সাফল্যের কৃতিত্ব সতীর্থ বোলাররা তাঁকে দেন না।
বিশ্বকাপে উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে এখন পর্যন্ত ১১টি ক্যাচ নিয়েছেন ও একটি স্টাম্পিং করেছেন রাহুল। ডিসমিসালে তাঁর চেয়ে ওপরে আছেন শুধু দুজন—দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক (১৯) ও নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস (১৫)। আম্পায়ার্স ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) ক্ষেত্রেও ভারতের সাফল্যের পেছনে রাহুলের বড় অবদান আছে। কোনো দল ডিআরএস নেবে কি নেবে না, সেই সিদ্ধান্ত অধিনায়ক নিয়ে থাকলেও ভারতের ক্ষেত্রে রাহুলের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেওয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন রোহিত শর্মা।
উদাহরণ হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের একটি মুহূর্ত সামনে আনা যেতে পারে। মোহাম্মদ শামির বল দুষ্মন্ত চামিরার ব্যাটে হালকা ছোঁয়া লেগে বল রাহুলের গ্লাভসবন্দী হয়। বোলার ও কোনো ফিল্ডার আবেদন না করলেও শুধু রাহুলই রিভিউ নিতে বলেছিলেন। তাঁর কথায় সাড়া দিয়ে রিভিউ নেন রোহিত। ‘আল্ট্রা এজ’ প্রযুক্তিতে ধরা পড়ে, বল চামিরার ব্যাটে আলতো ছোঁয়া দিয়ে রাহুলের গ্লাভসে যায়। তাই শূন্য রানেই আউট হয়ে চামিরাকে মাঠ ছাড়তে হয়।
সেই প্রসঙ্গ টেনেই রাহুল বলেছেন, ‘উইকেটকিপিং করাটা মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু আমি সারাক্ষণ ম্যাচে থাকাটা উপভোগ করি। বোলাররা ডিআরএস আবেদনের সময় আমাকে চ্যালেঞ্জ জানায়। কিন্তু তারা আমাকে যথেষ্ট কৃতিত্ব দেয় না।’