৭৫ ঘণ্টায় দুই মহাদেশে ৪ ম্যাচ: অসম্ভবকে সম্ভব করতে যাচ্ছেন নারাইন
টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা তকমাটা কি ক্যারিবিয়ান স্পিনার সুনীল নারাইন একটু বেশিই সিরিয়াসলি নিলেন? নাকি টম ক্রুজের ‘মিশন: ইমপসিবল-ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’-এর ট্রেলার এরই মধ্যে দেখে ফেলেছেন? যেখানে ৬১ বছর বয়সেও শিউরে ওঠার মতো স্টান্ট দেখিয়ে দর্শকদের মোহাবিষ্ট করেছেন ক্রুজ।
হয়তো নারাইনও এমন অসম্ভব কিছুকে সম্ভব করতেই চাইছেন। নারাইন যেটা করতে যাচ্ছেন, সেটা ক্রিকেটে এর আগে বোধ হয় হয়নি, ভবিষ্যতে যে হবে না, সেই নিশ্চয়তা এখনই দেওয়া যাচ্ছে না—অন্তত ক্রিকেট যেদিকে যাচ্ছে, সেই বিবেচনায়।
মাত্র ৭৫ ঘণ্টার মধ্যে দুই মহাদেশে দুটি ভিন্ন লিগে ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে পারেন নারাইন। ৭৫ ঘণ্টা বলাও কী ভুল হলো! কারণ এর মধ্যে যে ১৮ ঘণ্টাই নারাইন থাকবেন ফ্লাইটে।
বিষয়টা খোলাসা করা যাক। আইপিএল শেষ করে ছয় সপ্তাহ ধরে টি-টোয়েন্টি ব্ল্যাস্টে খেলছেন নারাইন। অংশ নিয়েছেন সারের হয়ে সব কটি ম্যাচে। ক্রিস জর্ডানের নেতৃত্বে খেলা এই দলটির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও (২০) নারাইন। ব্যাট হাতেও ২২.৫৫ গড় আর ১৫৯.৮৪ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন এই অলরাউন্ডার।
কোয়ার্টার ফাইনালে ৭ জুলাই ল্যাঙ্কাশায়ারকে হারানোর পর শুক্রবার রাতেই লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের হয়ে মেজর লিগ ক্রিকেট খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হন নারাইন। লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের অধিনায়কও তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে এই ম্যাচ খেলে শনিবার সকালেই আবার ইংল্যান্ডে ফিরতে হবে তাঁকে। সেখানে দুপুরে সেমিফাইনালে সারের হয়ে সমারসেটের বিপক্ষে খেলবেন।
সেমিফাইনাল জিতে গেলে সেদিন সন্ধ্যাতেই এসেক্স অথবা হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ফাইনালে খেলতে হবে নারাইনকে। ফাইনালে নারাইনের দল জিতুক বা হারুক—এই স্পিনারকে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে রবিবারই খেলতে হবে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের হয়ে। অর্থাৎ এই সময়ে এই ৪ ম্যাচে খেলার জন্য নারাইনকে পাড়ি দিতে হবে ৯০০০ মাইল।
নারাইনের পরিকল্পনাটা যে এমনই, সেটা নিশ্চিত করেছেন সারের অধিনায়ক ক্রিস জর্ডান, ‘এটাই পরিকল্পনা। নারাইনের সূচিটা বেশ ঠাসা, আসলে এটাই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। আমি জানি এভাবে খেলার চ্যালেঞ্জ, কিন্তু আপনি যখন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফেলবেন, সবকিছু সহজ হয়ে যায়। নারাইন অবশ্যই একজন প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার। তাকে আমি “সুইস আর্মি নাইফ” ডাকি—সে সব সময়, সব পরিস্থিতির জন্য।’