ফিল্ডিংয়ে কেন এত আগ্রাসী থাকেন, জানালেন কোহলি

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ইনোভেশন ল্যাব আয়োজিত ইন্ডিয়ান স্পোর্টস সামিট অনুষ্ঠানে বিরাট কোহলিছবি: ইউটিউব ভিডিও থেকে নেওয়া

মাঠের বিরাট কোহলি কতটা আক্রমণাত্মক স্বভাবের, তা সবার জানা। বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ের সময় তাঁকে বরাবরই আগ্রাসী মেজাজে দেখা যায়। প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তিনি মাঠে কম কাণ্ড-কারখানার জন্ম দেননি।

অধিনায়ক না হয়েও কখনো কখনো নিজেই ফিল্ডিং সাজিয়ে দেওয়া, কোনো সতীর্থ বাজে ফিল্ডিং করলে চোখরাঙানি দেওয়া, কখনো ‘ফেক ফিল্ডিং’ করা, উইকেটের পর বুনো উদ্‌যাপন! এ ছাড়া প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে চাপে রাখতে অনবরত স্লেজিং করে যাওয়া, এমনকি বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিংয়ের সময় প্রতিপক্ষ সমর্থকদের সঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করে বিতর্কের জন্ম দেওয়া—কী করেননি কোহলি? সর্বশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে তো অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ওপেনার স্যাম কনস্টাসকে কাঁধ দিয়ে ধাক্কা মেরে জরিমানাও গুনেছেন।

মাঠে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কোহলি যেমন সমালোচিত হয়েছেন, তেমনি যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণে প্রশংসিতও হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মাঠের বাইরে কোহলিকে শান্তশিষ্ট মনে হলেও ফিল্ডিংয়ের সময় কেন এমন আগ্রাসী থাকেন? উত্তরটা ৩৬ বছর বয়সী তারকা নিজেই দিয়েছেন।

মাঠে নামলেই কোহলি আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়ে ওঠেন
ছবি: আইসিসি

আইপিএলের ১৮তম আসর সামনে রেখে বেশির ভাগ খেলোয়াড় নিজ নিজ দলে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি ভারতের হয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতা কোহলিও কয়েক দিন বিশ্রাম নিয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে (আরসিবি) যোগ দিয়েছেন। আরসিবির ইনোভেশন ল্যাব দুই দিনব্যাপী (গত শুক্র ও গতকাল শনিবার) ইন্ডিয়ান স্পোর্টস সামিট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

আরও পড়ুন

সেই অনুষ্ঠানেই কোহলি বলেন, ‘আসলে অতিরিক্ত কিছু করার প্রবণতা থেকেই এমনি এমনটা (আগ্রাসী মনোভাব দেখানো) করি। আমি কখনোই এটা থেকে পিছপা হইনি। অনেকে হয়তো ব্যাপারটি (স্বাভাবিকভাবে) নিতে পারেন না। কিন্তু আমার এই মনোভাব হাল না ছাড়ার মানসিকতা থেকেই আসে।’

কোহলি আরও বলেন, ‘আমার প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব এখনো কমেনি। আপনি চাইলে মনে মনেও আক্রমণাত্মক হতে পারেন। কিন্তু হতাশা থেকে মাঝেমধ্যে তা প্রকাশ করার দরকার নেই, যেটা আমি করে থাকি।’

অতিরিক্ত কিছু করতে চাওয়ার প্রবণতা থেকেই ফিল্ডিংয়ের সময় আগ্রাসী মনোভাব দেখান কোহলি
ছবি: রয়টার্স

কোহলির দাবি, ফিল্ডিংয়ের সময় তাঁর আগ্রাসী আচরণ অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর পছন্দ। এমনকি তাঁর এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সমালোচক ও বিরোধিতাকারীর চেয়ে ভক্তের সংখ্যাই বেশি, ‘আমি বলতে চাইছি, সাম্প্রতিক অতীতেও যা করেছি (কনস্টাসকে ধাক্কা দেওয়া), তা খুব একটা ভালো ব্যাপার নয়। সত্যি বলতে, আমি নিজেও এগুলোকে ভালো মনে করি না। আপনি বলতে পারেন, কিছু লোক তোমার সমালোচনা করছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আরও অনেক মানুষ আছে, যারা এটা দেখে সত্যিই আনন্দ পায়।’

বয়স ৩৭ চলছে। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের সময় হবে ৪০ কাছাকাছি। লস অ্যাঞ্জেলেস দিয়েই ১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরছে

আরও পড়ুন

২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে এই আন্তর্জাতিক সংস্করণকে বিদায় বলে দিলেও অলিম্পিকে সোনার পদক জয়ের আশায় অবসর ভেঙে ফিরতেও পারেন কোহলি, ‘জানি না, আমরা সোনার পদকের জন্য খেলতে যাব কি না। আমি হয়তো এক ম্যাচের জন্য দলে ঢুকে পড়ব, একটা পদক জিতে বাড়ি ফিরে আসব (হাসি...)। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হতে পারা সত্যিই অসাধারণ এক অনুভূতি হবে। কিন্তু আমার মনে হয় সামগ্রিকভাবে খেলাধুলার জন্য এটা দারুণ ব্যাপার হবে।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সফল অভিযান শেষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে যোগ দিয়েছেন কোহলি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অলিম্পিকে আবারও ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে আইপিএলের অবদান দেখছেন কোহলি, ‘আইপিএল অবশ্যই এতে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। আইপিএল আমাদের এমন একপর্যায়ে নিয়ে গেছে যে এখন এটা (টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট) অলিম্পিকের অংশ। আমাদের কিছু খেলোয়াড়ের জন্য এটা সুবর্ণ সুযোগ।’