মায়ের চুমু নিয়ে টেস্ট অভিষেক শ্রীকর ভরতের

অভিষিক্ত শ্রীকর ভরতকে চুমু খাচ্ছেন তাঁর মা। মাঠে নামার আগের মুহূর্তছবি: টুইটার

নাগপুরে বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগের একটি মুহূর্ত। মাঠের এক কোণে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল। দলে একেবারেই নতুন দুজন। তাঁদের একজন, সূর্যকুমার যাদবের হাতে টেস্ট ক্যাপ তুলে দিলেন সাবেক কোচ ও অলরাউন্ডার রবি শাস্ত্রী। গর্বে তাঁর চোখ চিকচিক করছিল। অন্যজন, শ্রীকর ভরত যা পেলেন তাঁর সতীর্থ হয়ে যাওয়া চেতেশ্বর পূজারার কাছ থেকে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

দুর্ঘটনার শিকার ঋষভ পন্ত এখনো হাসপাতালে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান শ্রীকর ভরতের সামনে টেস্ট ক্রিকেটের দরজা খুলে গেল এ কারণেই। হয়ে গেলেন ভারতের ৩০৫তম টেস্ট ক্রিকেটার। টসে হেরে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নেমেছে ভারত। মাঠে নামার আগে আবেগময় এক দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকলেন সবাই। ভরতের মা মাঠে নেমে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান। এই ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। ভরতের পুরো পরিবারই মাঠে ছিলেন এই শুভলগ্নে। মা ছাড়াও বাবা, বোন ও স্ত্রীও ছিলেন গ্যালারিতে।

ছিলেন ৯ বছর বয়স থেকে শ্রীকর ভরতের কোচ কৃষ্ণ রাও-ও। ভরতের টেস্ট অভিষেকের খবরটা যখন পান, কৃষ্ণ তখন গোয়ায়। সিকে নাইড়ু অনূর্ধ্ব-২৫ টুর্নামেন্টে খেলছে তাঁর দল। খবরটা শুনেই চলে এসেছেন নাগপুরে। বিদর্ভ স্টেডিয়ামের নর্থ স্ট্যান্ডে বসে ছাত্রের টেস্ট টুপি পরার দৃশ্য দেখেছেন। ছাত্রের শৈশবের দিনগুলো স্মরণ করেছেন ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে, ‘সে খুব দুষ্টু ছিল। সব সময় অন্য কিছুতে মনোযোগ থাকত। এ জন্য আমার অনেক বকা খেয়েছে ও।’

১৯ বছর বয়সে রাজ্য দলের নিয়মিত উইকেটকিপার হয়ে যান শ্রীকর ভরত। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তখন কিপিংয়ে নিয়মিত হয়েছিলেন কোচের পরামর্শেই। ২০২২ সালের শুরুতে ঋদ্ধিমান সাহা টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর আলোচনায় উঠে আসেন ভরত। কিন্তু ঋষভ পন্তের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কারণে অপেক্ষাটা বেড়েছে। ঋষভ দুর্ঘটনার শিকার না হলে হয়তো আরও অপেক্ষা করতে হতো। আজ টেস্টের প্রথম দিনে রবীন্দ্র জাদেজার বলে মারনাস লাবুশেনকে স্টাম্পিং করে টেস্টে নিজের প্রথম শিকারও তুলে নিয়েছেন ভরত।

আরও পড়ুন

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ভরতের টেস্ট অভিষেকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যাতে ভরত বলেছেন, ‘যে পথটা অতিক্রম করেছি, সেদিকে পেছন ফিরে তাকিয়ে এই জার্সিটা দেখার আনন্দ তুলনাহীন। আমার জন্য খুব গর্বের মুহূর্ত। অনেক আবেগ কাজ করছে। যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা শুরু করি, এমন কিছুর দেখা পাব, তা ভাবিনি। কোচ জয় কৃষ্ণ রাওকে ধন্যবাদ। যখন নিজেরই আমার ওপর বিশ্বাস ছিল না, তখন তিনি আমার সামর্থ্যে আস্থা রেখেছেন।’

ভারতের বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড়কেও ধন্যবাদ দিয়েছেন ভরত, ‘আমি হুট করে এতটা পথ উঠে আসিনি। ছোট ছোট ধাপে এগিয়েছি। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত “এ” দলের সিরিজে রাহুল দ্রাবিড় স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কীভাবে নিজের খেলাকে পরের ধাপে উন্নীত করতে পারি, তা নিয়ে কথা হয়েছিল। তিনি আমার কোনো কিছু তেমন পরিবর্তন করেননি। আমি যেমন, সেভাবে বেড়ে উঠতেই সাহায্য করেছেন।’