‘পাকিস্তানের চেয়ে ভালো খেলেছে আফগানিস্তান’
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উঠতে হলে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩০০ করলে জিততে হতো ২৮৭ রানে, পরে ব্যাট করলে ন্যূনতম ৫১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হতো ২.৩ ওভারে—এমন অসম্ভব সমীকরণ মাথায় রেখে কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল পাকিস্তান।
তবে ইংল্যান্ড টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকুও শেষ হয়ে গেছে। বাবর আজমের দল পরে ম্যাচটাও বড় ব্যবধানে হেরে গেছে। এর মধ্য দিয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচে থেকে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়েছে বাবর–রিজওয়ান–আফ্রিদিদের। ৯ ম্যাচে ৪ জয় ও ৫ হারে আফগানিস্তানও ৮ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করেছে। শুধু নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় আফগানদের অবস্থান ছিল ছয়ে।
পয়েন্ট তালিকায় পাকিস্তানের চেয়ে এক ধাপ পেছনে থাকলেও বাস্তবে আফগানরা বিশ্বকাপজুড়ে দুর্দান্ত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। রশিদ–নবীরা প্রথমবার হারিয়ে দিয়েছেন তিনটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকে—ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা আর বাবর–রিজওয়ানদের পাকিস্তান; অন্য জয়টি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
সেমিফাইনালের দৌড়েও ভালোভাবেই ছিল আফগানিস্তান। দলটি বাংলাদেশ, ভারত আর নিউজিল্যান্ড ছাড়া বাকি সব ম্যাচেই দারুণ লড়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানদের হারকে তো কেউ কেউ এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটনও বলছেন। একটু এদিক–সেদিক হলে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও জিততে পারত আফগানরা।
ওয়াসিম আকরাম ও শোয়েব মালিকেরও মনে হয়েছে, আফগানিস্তান এবারের বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেছে এবং সেটা তাঁদের দেশ পাকিস্তানের চেয়েও ভালো। ক্রীড়াবিষয়ক টেলিভিশন চ্যানেল ‘এ স্পোর্টস’–এর প্যাভিলিয়ন অনুষ্ঠানে আফগানদের খেলা নিয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক দুই অধিনায়ক আকরাম ও মালিক।
মালিক বলেছেন, ‘আমার মতে, শুধু বিশ্বকাপ বিবেচনায় আফগানিস্তান আমাদের চেয়ে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে।’ মালিকের কথার সঙ্গে আকরামও একমত পোষণ করেছেন, ‘আফগানদের দেখে মনে হয়েছে, ওরা (পাকিস্তানের চেয়ে) শক্তিশালী। এ ব্যাপারে কারও মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। আমাদের ছেলেরা অনেক দিন হলো টানা খেলে যাচ্ছে। হতে পারে এ কারণে ওরা ক্লান্ত।’
১০ দলের বিশ্বকাপের ৫টিই এশিয়া মহাদেশের; আরও স্পষ্ট করে বললে দক্ষিণ এশিয়ার। ভারতের মতো পরিচিত কন্ডিশনে তাই ভালো করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল এই অঞ্চলের দলগুলোর। আফগানিস্তান প্রত্যাশার চেয়ে ভালো খেললেও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ধারেকাছেও যেতে পারেনি। তবে ঘরের মাঠে সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ সামলে ঠিকই সেমিফাইনালে উঠতে গেছে ভারত।
মালিক মনে করেন, উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে শুধু ভারতই সেমিফাইনালে ওঠার যোগ্য দাবিদার, ‘ভারতই একমাত্র দল, যারা এই উপমহাদেশ থেকে শেষ চারে পৌঁছে গেছে। এটা ওদেরই প্রাপ্য।’