২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এখন তো ভারতকেও ‘চোকার্স’ বলাই যায়

টানা দুবার খুব কাছে গিয়েও ভারত কিংবদন্তি ছুঁয়ে দেখতে পারলেন না টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের স্মারকটাএএফপি

পুরস্কার বিতরণীতে রানার্সআপ মেডেলটা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন বিরাট কোহলি। পাশে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি। টানা দুবার খুব কাছে গিয়েও ভারত কিংবদন্তি ছুঁয়ে দেখতে পারলেন না টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের স্মারকটা (এ ট্রফি অবশ্য আগে পেয়েছেন, তবে সেটি র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠার সময়)। গতবার নিউজিল্যান্ডের পর এবার তাসমান সাগরপাড়ের আরেক দেশ অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হলো কোহলির

ভারত আরেকবার থামল কোনো বৈশ্বিক ট্রফি জয়ের কাছে গিয়েও। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। এরপর গত এক দশকে আইসিসির আর কোনো ট্রফি জিততে পারেনি দলটি।

সব সংস্করণ মিলিয়ে এ সময়ে ভারত খেলেছে চারটি ফাইনাল। ২০১৪ সালে মিরপুরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত হেরেছিল শ্রীলঙ্কার কাছে। তার আগে শ্রীলঙ্কা হয়ে উঠেছিল ‘রানার্সআপ’ দল, তাদের আক্ষেপ ঘুচেছিল ফাইনালে। আর ওই হার দিয়েই যেন এক সারি আক্ষেপের শুরুটা হয়েছিল ভারতের। এরপর ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের কাছে হেরেছে তারা। টানা দুটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের কথা তো ওপরেই বলা।

আরও পড়ুন

শুধু ফাইনাল নয়, গত ১০ বছরের মধ্যে ভারত হেরেছে চারটি সেমিফাইনালেও। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আটকে গিয়েছিল দলটি। ২০১৬ সালে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর সর্বশেষ গত বছর ইংল্যান্ডের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শেষ চার থেকেই বিদায় নিতে হয় তাদের। একসময় ক্রিকেটে ‘চোকার্স’ অপবাদ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, ছিল কেন, এখনো আছেই বলতে হবে। তবে বৈশ্বিক ট্রফিতে টানা আটটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হেরে প্রত্যাশার চাপে ভেঙে পড়ার অপবাদটা জুটছে ভারতেরও। চারটি সেমিফাইনাল ও চারটি ফাইনাল-কোহলি খেলেছেন সব কটি ম্যাচেই! অবশ্য কোহলির মতো এ আট ম্যাচে খেলছেন এখনকার অধিনায়ক রোহিত শর্মাও।

এবারও ফাইনালে হারল ভারত
রয়টার্স

এই ফাইনালের আগেও ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ১০ বছরের শিরোপা-খরা কাটানোর কোনো চাপ আছে কি না তাঁদের ওপর। সাবেক ভারত অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘না, মোটেও না। মানে আইসিসি ট্রফি জেতার চেষ্টা করার ক্ষেত্রে আমরা চাপ অনুভব করি না। অবশ্যই জিতলে ভালো লাগবে। তবে এ ক্ষেত্রে তাকালে দেখবেন, এটি আসলে দুই বছরের কাজের ফল। দুই বছর ধরে সফল হয়েই আপনি এখানে এসেছেন। ফলে সেখানে অনেক ইতিবাচক ব্যাপার আছে। অস্ট্রেলিয়ায় জেতা আছে, পয়েন্ট তালিকার ওপরের দিকে থাকার ব্যাপার আছে, গত পাঁচ-ছয় বছরজুড়েই বিশ্বের নানা জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার ব্যাপার আছে।’

২০১৩ সালের পর থেকে আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের হার

স্বাভাবিকভাবেই তালিকার শীর্ষ দুটি দলই ফাইনালে এসেছে, মানে এ চক্রের সেরা দুটি দলের একটি ভারত। ফাইনালে ওঠা মানে কার্যত আপনি সেরা দুই দলের একটি, সেমিফাইনালে জায়গা পেলেন মানে সেরা চার দলের একটি। কিন্তু সেরা দুই বা চার এক কথা, সেরা দল তো আরেক কথা। গত ১০ বছরে ভারত আটকে গেছে শেষের দিকের ধাপে গিয়েই।

আরও পড়ুন

এ টেস্টেও দল নির্বাচন থেকেই প্রশ্ন আছে ভারতের পাশে। র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ছাড়াই নামে ভারত। মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে বোলিং নিলেও প্রথম সকালে প্রত্যাশামতো সাফল্য এনে দিতে পারেননি ভারত পেসাররা। প্রথম দিন শেষেই ব্যাকফুটে চলে যায় তারা, এরপর চেষ্টা করলেও অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে যেতে পারেনি আর। অনেক আশা নিয়ে পঞ্চম দিনে এসেও প্রথম সেশনেই শেষ সেটি।

ফাইনাল শেষে অধিনায়ক রোহিত বলেছেন, ‘আমরা চার বছরে কঠোর পরিশ্রম করেছি দুটি ফাইনালে পৌঁছাতে। এটি আমাদের জন্য হতাশার, একটি তো জিততেই চাইতাম। তবে গত দুই বছরে যা করেছি, সেটি তো কেড়ে নিতে পারেন না। এটা দারুণ প্রচেষ্টা। অনেক খেলোয়াড়ই এসব সিরিজে অংশ নিয়েছে। আমরা মাথা উঁচুই রাখছি, পরের চ্যাম্পিয়নশিপেও লড়াই করব।’

একই ধরনের কথা তো দ্রাবিড় ফাইনালের আগেই বলে রেখেছিলেন। ফাইনালের পরও রোহিত বলতে পারলেন না ভিন্ন কিছু। ১০ বছর ধরে বদলাচ্ছে না তো ভারতের ভাগ্যই!