ভেরেইনার সেঞ্চুরিতে ২০২ রানের লিড দক্ষিণ আফ্রিকার
মধ্যাহ্ন বিরতির পরও আরও সোয়া এক ঘণ্টার মতো ব্যাটিং করল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতেই প্রথম ইনিংসে লিড ২০২ রানের। টেস্টে কাইল ভেরেইনার দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সৌজন্য আজ মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ৩০৮ রানে। ডেন পিট আর ভেরেইনাকে ফিরিয়ে তাদের শেষ দুটি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। এক ওভারেই ওপেনার সাদ মান ইসলাম ও ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হককে ফিরিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। বাংলাদেশ চা বিরতিতে গেছে ২ উইকেটে ১৯ রান তুলে।
৮ উইকেটে ২৪৩ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতির পর খেলতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৭ রানে অপরাজিত ভেরেইনা ৯৯ থেকে তিন অঙ্কে পৌঁছেছেন ৮৬তম ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে সুইপ শটে ১ রান নিয়ে। ড্রেসিংরুমের দিকে ফিরে শূন্যে ব্যাট ছুড়ে তাঁর উদ্যাপনটাও হয়েছে দেখার মতো।
পরের ওভারে মিরাজ পিটকে এলবিডব্লু করে দেওয়ার পর কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ভেরেইনা। ৮৮তম ওভারে নাঈম হাসান ও ৮৯তম ওভারে মিরাজকে মেরেছেন দুই ছক্কা। মিরাজকে মারার পরের বলেই অবশ্য স্টাম্পড হয়ে ফিরে যান ভেরেইনা, ওখানেই শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস।
এর আগে প্রথম সেশনটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকারই। বাংলাদেশের বোলারদের সাফল্য বলতে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগানো হাসান মাহমুদের ২ উইকেট। মুল্ডারকে স্লিপে সাদ মান ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে পরের বলেই উড়িয়ে দেন কেশব মহারাজের অফ স্টাম্প।
ইনিংসের ৬৫তম ওভারের শেষ দুই বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যানকে পরপর ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন হাসান। কিন্তু পরের ওভারে এসে প্রথম বলে নতুন ব্যাটসম্যান ডেন পিটকে সামনে পেয়েও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি এই পেসার।
তার আগে রেকর্ড জুটি গড়েছেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুল্ডার ও ভেরেইনা। তাদের ১১৯ রান টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ ৮০ রানের জুটিতেও ছিলেন মুল্ডার। ২০২২ সালে পোর্ট এলিজাবেথে কেশব মহারাজকে নিয়ে ৮০ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে আজ প্রথম দিনের তুলনায় ব্যাটিং কিছুটা সহজ মনে হচ্ছে। তবে সেটা মনে হওয়ার একটা বড় কারণ দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা বুঝে ফেলেছেন এই উইকেটে ব্যাটিংটা আসলে কীভাবে করতে হবে। নইলে স্পিনাররা টার্ন, বাউন্স আজও পেয়েছেন। ব্যাটসম্যানদের সাবধানতা এবং বুঝে খেলার কারণেই সেগুলো তাদের জন্য বিপদের কারণ হয়নি।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ১০৬ রানের পর ৩৪ রানের লিড নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা আজ প্রথম সেশনে ওই ২ উইকেট হারিয়ে যোগ করে ১০৩ রান। ৮ উইকেটে ২৪৩ রান নিয়ে তাদের লিড ছিল এখন ১৩৭ রানের।
দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও ভালো হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। চতুর্থ ওভারে হাসান মাহমুদের প্রথম দুই বলে দুই বাউন্ডারি মেরে ১৫০ রান পার করে প্রোটিয়ারা। টেস্টে নিজের প্রথম ফিফটি করে ৫৪ রানে আউট হওয়া মুল্ডারের ফিফটিতে অবশ্য অবদান আছে বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়েরও। নাঈম হাসানের বলে শর্ট লেগে তাঁর ক্যাচ ছেড়েছেন মুমিনুল হক। মুল্ডারের রান তখন ৪৭।
ভেরেইনা অবশ্য তখন ৭৭ রানে অপরাজিত থেকে আরও বড় কিছুর দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রত্যাশিত সেঞ্চুরিটাও পেয়েছেন। এই উইকেটে স্পিনারদের কীভাবে খেলতে হয়, সেটাই তিনি দেখিয়েছেন তাঁর ১৪৪ বলে ১১৪ রানের ইনিংসে, যাতে ৮ বাউন্ডারির সঙ্গে আছে ওই দুটি ছক্কাও। আগের দিন ৫ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, মিরাজদের উইকেট তো দেনইনি, উল্টো স্পিনের বিপক্ষে সুইপ, রিভার্স সুইপগুলো খেলেছেন নির্ভুলভাবে।