তিন রাতের তিন ফাইনাল—কার পকেটে কত টাকা
২০২৫ সালের শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে একসঙ্গে চলেছে পাঁচ–পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি–টোয়েন্টি লিগ—বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ, দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ২০, নিউজিল্যান্ডের সুপার স্ম্যাশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ (আইএলটি২০)। গত রাতে দুবাই ক্যাপিটালসের আইএলটি২০ শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে আপাতত শেষ হয়েছে টি–টোয়েন্টি উৎসব।
বিগ ব্যাশ গত জানুয়ারিতে শেষ হলেও অন্য চারটির ফাইনাল হয়েছে এ মাসেই। সুপার স্ম্যাশ শেষ হয়েছে ২ ফেব্রুয়ারি। অন্য তিনটির ফাইনাল হয়েছে টানা তিন দিনে—৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে বিপিএল ফাইনাল খেলেছে ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংস; ৮ ফেব্রুয়ারি জোহানেসবার্গে এসটি২০–এর ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে এমআই কেপটাউন ও সানরাইজার্স ইস্টার্ন কেপ আর গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে আইএলটি২০–এর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দুবাই ক্যাপিটালসের প্রতিপক্ষ ছিল ডেজার্ট ভাইপার্স।
এ মাসে শেষ হওয়া চার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের আয়োজক বোর্ডগুলোর মধ্যে বিসিবিই সবচেয়ে ধনী। অথচ অর্থ পুরস্কারের (প্রাইজমানি) দিক থেকে বিপিএল সবচেয়ে পিছিয়ে!
গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ বিপিএল ফাইনালের আগের দিন এবারের আসরের অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করে বিসিবি। আগেরবারের চেয়ে অর্থ পুরস্কার ২ কোটি ৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫ কোটি ৩১ লাখ। তবু তা সুপার স্ম্যাশের তুলনায় নগণ্য। আইএলটি২০ ও এসএ২০–এর তো ধারেকাছেও নেই। এমনকি বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও এই লিগগুলোর চ্যাম্পিয়ন দলের চেয়ে কম টাকা পেয়েছে।
সুপার স্ম্যাশে এবার মোট অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ১২ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। চ্যাম্পিয়ন সেন্ট্রাল স্ট্যাগস পেয়েছে ৪ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার, টাকার অঙ্কে যা ২ কোটি ৭৭ লাখ।
ফরচুন বরিশাল অবশ্য এটা ভেবে সান্ত্বনা খুঁজে নিতে পারে যে তারা অন্তত সেন্ট্রাল স্ট্যাগসের কাছাকাছি অর্থ পুরস্কার পেয়েছে—২ কোটি ৫০ লাখ। কিন্তু টাকার এই পরিমাণ আইএলটি২০ চ্যাম্পিয়ন দুবাই ক্যাপিটালস ও এসএ২০ চ্যাম্পিয়ন এমআই কেপটাউনের চেয়ে কয়েক গুণ কম।
এ বছর এসএ২০–তে মোট ৭ কোটি র্যান্ড (৪৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা) অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, যা এই টুর্নামেন্টকে আইপিএলের পর সবচেয়ে দামি টি–টোয়েন্টি লিগে পরিণত করেছে।
এসএ২০-এর মোট অর্থ পুরস্কার বিপিএলের প্রায় ৯ গুণ বেশি। আবার এই লিগের চ্যাম্পিয়ন এমআই কেপটাউন পেয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ র্যান্ড (২২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা), যা বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের চেয়ে ৯ গুণ বেশি।
আইএলটি২০–তে এবার মোট অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার (১৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা)। চ্যাম্পিয়ন দল দুবাই ক্যাপিটালস পেয়েছে ৭ লাখ ডলার (৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা)। অর্থাৎ আরব আমিরাতের এই লিগের অর্থ পুরস্কার বিপিএলের ৩ গুণ বেশি আর শিরোপাজয়ী দুবাই ক্যাপিটালসের প্রাপ্তি ফরচুন বরিশালের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩ গুণ বেশি।
জনপ্রিয়তা, ব্র্যান্ড ভ্যালু, চাকচিক্য তো বটেই, অর্থ পুরস্কারেও আইপিএল সবকিছুর ঊর্ধ্বে, তা সবার জানা। আইপিএলের গত মৌসুমে মোট অর্থ পুরস্কার ছিল ৪৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি (৬৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা), চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স পেয়েছিল ২০ কোটি রুপি (২৮ কোটি ৬ লাখ টাকা)।