রিভার্স সুইং ও স্পিন মিশিয়ে রাবাদা–মহারাজদের অনুশীলন
বাংলাদেশ, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম—দুটোই কাগিসো রাবাদার জন্য বিশেষ কিছু। ২০১৫ সালে এ মাঠেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক দক্ষিণ আফ্রিকার এই ফাস্ট বোলারের। শুধু কি অভিষেক? দেশের হয়ে প্রথমবার খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক করে বসেন।
২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতানোর পর থেকেই রাবাদাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ‘ভবিষ্যৎ তারকা’ বলা হচ্ছিল। অভিষেকে তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহকে পরপর তিন বলে আউট করার পর সে তকমাটা স্থায়ী হয়ে যায়।
২০১৫ সালের সেই সফরের ৯ বছর পর গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম অনুশীলন সেশনে সেই মিরপুরে এলেন রাবাদা। প্রায় এক দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে রাবাদা নিজেকে নিয়ে গেছেন টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরাদের তালিকায়।
কমপক্ষে ২০০ টেস্ট উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে রাবাদা একমাত্র, যাঁর স্ট্রাইক রেট ৩০-এর ঘরে (৩৯.৪)—যা এককথায় অবিশ্বাস্য। তিনি এই তালিকায় যাঁদের পেছনে ফেলে এসেছেন, সেই নামগুলো দেখুন—স্বদেশি ডেল স্টেইন (৪২.৩), পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস (৪৩.৪), ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যালকম মার্শাল (৪৬.৭)।
আজ মিরপুরে বিসিবি একাডেমি মাঠের নেটে ২৯ বছরেই ‘কিংবদন্তি’ রাবাদাকে পুরোদমে অনুশীলন করতে দেখা গেল। এই রাবাদা এখন শুধু গতিতারকা নন; অভিজ্ঞতা, নিয়ন্ত্রণ, সিম-সুইং মুভমেন্ট—সব এখন তাঁর শক্তি।
তবে উপমহাদেশে ভালো করতে রিভার্স সুইংও কার্যকর। আজ একাডেমি মাঠে পেস বোলিং কোচ পিট বোথার সঙ্গে রিভার্স সুইংয়ের অনুশীলনই করছিলেন। তাঁর জন্য নেটের পাশে ঘষে পুরোনো করা বল তৈরি করে রেখেছিলেন বোথা। সে বল দিয়েই বোলিং অনুশীলন করলেন টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট থেকে ১ উইকেট দূরে থাকা রাবাদা। পরে অলরাউন্ডার উইয়ান মুল্ডারকেও রিভার্স সুইংয়ের জন্য বানানো বল দিয়ে অনুশীলন করান বোথা।
মিরপুরে টেস্ট মানেই স্পিনারদের দাপট। দক্ষিণ আফ্রিকার নেটেও স্পিনারদের ছড়াছড়ি দেখা গেল। দেশটির টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি স্পিনার কেশব মহারাজ তো ছিলেনই। সেনরুয়ান মুথুসামি, ডেন পিট—এই সিরিজের দলে থাকা বাকি দুই স্পিনারকেও ঘাম ঝরাতে দেখা গেল। বোলিং করেছেন পার্টটাইমার এইডেন মার্করাম, ট্রিস্টান স্টাবসরাও। স্থানীয় নেট বোলারদের মধ্যে ছিলেন আরও চার-পাঁচজন স্পিনার।
মিরপুরে জিততে হলে কী দরকার, তা প্রোটিয়াদের অজানা থাকার কথা নয়। অল্প রানের টেস্ট ম্যাচের জন্য পরিচিত এ মাঠটাকে আরও ভালোভাবে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য সফরকারীদের কোচিং স্টাফে আছেন অ্যাশওয়েল প্রিন্স।
সাবেক এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন। প্রোটিয়া প্রধান কোচ শুকরি কনরাড আজ অনুশীলনে প্রিন্সের সঙ্গে আলাপ করেই অনেকটা সময় কাটালেন। রণকৌশলটা কেমন হবে, তা প্রিন্সেরই সবচেয়ে ভালো জানার কথা!