পিএসএলে কেমন ছিল সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহদের পারফরম্যান্স
১১ এপ্রিল শুরু হচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগটিতে এবার খেলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের তিন খেলোয়াড়। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাস করাচি কিংসে, লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন লাহোর কালান্দার্সে ও ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা পেশোয়ার জালমিতে খেলবেন।
এই ত্রয়ীর আগে পিএসএলে খেলেছেন বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটার। সবচেয়ে বেশি চার মৌসুম খেলেছেন তামিম ইকবাল। সবচেয়ে বেশি ম্যাচও খেলেছেন বাংলাদেশের এই সাবেক অধিনায়ক। আরেক সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলেছেন তিনটি আসরে। মাহমুদউল্লাহ দুই মৌসুম খেলেছেন। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান ও এনামুল হক একবার করে খেলেছেন পিএসএলে।
২০১৭ ও ২০১৮ সালে পরপর দুই বছর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চারজন খেলেছেন পাকিস্তানের শীর্ষ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে। এরপর নানা কারণে বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা অনিয়মিত হয়ে পড়েন পিএসএলে। ২০১৯, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৪—এই চার মৌসুমে বাংলাদেশের কেউ খেলেননি সেখানে।
লিটন-রিশাদ-রানারা এবার কী করতে পারবেন কে জানে। তাঁদের আগে বাংলাদেশের যাঁরা পিএসএলে খেলেছেন, তাঁরা কেমন করেছেন জানেন কী?
ম্যাচ ২০, রান ৬০৫, সর্বোচ্চ ৮০*, স্ট্রাইক রেট ১১৩.০৮
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে পিএসএলে সবচেয়ে বেশি খেলেছেন তামিম ইকবাল। লাহোর কালান্দার্স ও পেশোয়ার জালমির হয়ে চার মৌসুমে ২০টি ম্যাচ খেলেছেন তামিম। ২০১৬ সালে পিএসএলের প্রথম আসরে জালমির হয়ে খেলা প্রথম দুই ম্যাচেই ফিফটি করেন তামিম (৫১ বলে ৫১ ও ৪৭ বলে ৫৫)। ওই দুই ম্যাচই জেতে জালমি। পিএসএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটিটা তামিম পেয়ে যান দুই ম্যাচ পরেই। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৫৮ বলে ৮০ রান করে অপরাজিত ছিলেন তামিম। ওই ম্যাচটিও জেতে তামিমের দল, বাংলাদেশের ওপেনার পান ম্যাচসেরার স্বীকৃতি।
তামিম পরের মৌসুমটা শুরু করেছিলেন ফিফটি দিয়ে। জালমির হয়েই কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ৬২ রান। তখন কে জানত, পিএসএলে সেটিই হয়ে থাকবে তামিমের শেষ ফিফটি। এরপর আরও ১৩ ম্যাচ খেলে একবারও ৪০-ও ছুঁতে পারেননি এই বাঁহাতি। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তামিমের জালমি, ফাইনালে অবশ্য ছিলেন না তিনি।
ম্যাচ ১৪, রান ১৮১, সর্বোচ্চ ৫১, উইকেট ৮, সেরা ২/১৪
তামিমের মতো সাকিবেরও পিএসএল অভিষেক ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। তামিমের মতোই অভিষেকে করাচি কিংসের হয়ে লাহোর কালান্দার্সের বিপক্ষে ৫১ রান করেছিলেন সাকিব (৩৫ বলে)। পরে বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এই বাঁহাতি। এরপর খেলা ১৩ ম্যাচে সাকিব ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৩০ রানই করতে পেরেছেন, বল হাতে নিতে পেরেছেন ৭ উইকেট। ২০১৭ সালে তামিমের সঙ্গে পেশোয়ার জালমিতে খেলা সাকিব এরপর আবার পিএসএলে ফেরেন ২০২৩ সালে। প্রত্যাবর্তনে মাত্র একটি ম্যাচই খেলেন সাকিব, ব্যাটিংয়ে ১ রানে অপরাজিত থাকা অলরাউন্ডার ৩২ রান খরচায় উইকেট পাননি।
ম্যাচ ৩, রান ৪৯, সর্বোচ্চ ৩৩, স্ট্রাইক রেট ১২৫.৬৪
২০১৬ সালে করাচি কিংসের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন মুশফিক। প্রথম ম্যাচে ১০ রানে অপরাজিত মুশফিক তৃতীয় ম্যাচে ২৭ বলে করেন সর্বোচ্চ ৩৩ রান।
ম্যাচ ৯, রান ৭১, সর্বোচ্চ ২৯, উইকেট ৮, সেরা ৩/২১
২০১৭ ও ২০১৮ মৌসুমে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে ৯টি ম্যাচ খেলেন মাহমুদউল্লাহ। অভিষেক ম্যাচে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে ২০ বলে খেলা অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংসটিই পিএসএলে মাহমুদউল্লাহর সর্বোচ্চ। বল হাতে দুবার ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনে।
ম্যাচ ৫, উইকেট ৪, সেরা ২/২২
পিএসএলে একটি মৌসুমই খেলেছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার। ২০১৮ সালে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে অভিষেকে ম্যাচে ২ উইকেট পেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। এরপর খেলা চার ম্যাচে আর মাত্র ২টি উইকেট নিতে পারেন কাটার মাস্টার।
ম্যাচ ১, রান ৩, সর্বোচ্চ ৩, স্ট্রাইক রেট ৩৩.৩৩
পিএসএল ক্যারিয়ারের একমাত্র ম্যাচটি এনামুল খেলেন ২০১৭ সালে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে। সেবারের ফাইনালে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ৯ বলে মাত্র ৩ রানই করতে পারেন।
ম্যাচ ২, রান ১১, সর্বোচ্চ ১১, স্ট্রাইক রেট ১০০.০০
২০১৮ সালে পিএসএলে দুটি ম্যাচ খেলা সাব্বির ব্যাট করেছেন একবার। পেশোয়ার জালমির হয়ে কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ১১ বলে ১১ রান করে আউট হয়ে যান সাব্বির।