সূর্যকুমার–ঝড়ের পর কোহলির ব্যাটে সিরিজ ভারতের
প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে একটি করে ম্যাচ জেতায় ভারত-অস্ট্রেলিয়ার শেষ ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল অলিখিত ফাইনালে। যে দল জিতবে, সিরিজ তাদের। সিরিজ নির্ধারণী সেই ম্যাচে সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটিং-ঝড়ের পর কোহলির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত।
শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। প্রথম বলে ৬ মেরে লক্ষ্যটাকে ৫ বলে ৫ রানে নামিয়ে আনেন কোহলি। পরের বলে কোহলি (৬৩) আউট হয়ে যাওয়ার পর একটু নাটকীয়তার সম্ভাবনা জেগেছিল।
এক বল বাকি থাকতে চার মেরে যেটির সমাপ্তি টেনে দেন হার্দিক পান্ডিয়া। এর আগে হায়দরাবাদে ক্যামেরন গ্রিন ও টিম ডেভিডের দারুণ ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া করে ৭ উইকেটে ১৮৬।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ভারত। ড্যানিয়েল স্যামসের বলে ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লোকেশ রাহুল (১)। ১৭ রানে রোহিত শর্মা আউট হয়ে যাওয়ায় কোহলির সঙ্গে তাঁর জুটিটাও বেশি বড় হয়নি। কামিন্সের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে স্যামসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভারত অধিনায়ক।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়েও অবশ্য পথ হারায়নি ভারত। সূর্যকুমারকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন কোহলি। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন এ দুজন। ৯ ওভারে ভারতের রান ছিল ২ উইকেটে ৮১।
১০ ওভার শেষে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছায় স্বাগতিকেরা। ২৯ বলে নিজের ফিফটি তুলে নিয়ে দলকে জয়ের পথে আরেকটু এগিয়ে দেন সূর্যকুমার। ভারতকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দিয়ে ফেরেন সূর্যকুমার। কোহলির সঙ্গে ৬২ বলে ১০৪ রানের জুটি গড়েন এই ব্যাটসম্যান।
৩৬ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় করেছেন ৬৯ রান, স্ট্রাইকরেট ১৯১.৬৬। সূর্যকুমার তাঁর কাজ করে গেছেন। বাকিটুকু সেরেছেন কোহলি–পান্ডিয়া। শেষ ২৪ বলে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান। শেষ ১২ বলে কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়ার জুটির সামনে এই লক্ষ্য নেমে আসে ২১ রানে। কোহলি ৪৮ বলে ৬৩ রান করে ফেরেন। ১৬ বলে ২৫ রান করে দলকের জয় নিশ্চিত করেন পান্ডিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে প্রথম ওভারেই ১২ রান তুলেছিলেন ক্যামেরন গ্রিন। দ্বিতীয় ওভারে স্পিনার অক্ষর প্যাটেলকে আসেন রোহিত শর্মা। চিত্রটা বদলাতে পারেননি অক্ষর। এই ওভারে অস্ট্রেলিয়া যোগ করে আরও ১১ রান। পরের ওভারেও একই রকম প্রলয় মূর্তি গ্রিনের। ৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪০।
এরপর অবশ্য অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ফিরিয়ে দেন অক্ষর। তুলে মারতে গিয়ে পান্ডিয়ার তালুবন্দী হন ফিঞ্চ। এরপরও অবশ্য থামানো যায়নি গ্রিন-ঝড়। ফিঞ্চ আউট হয়ে যাওয়ার পরের তিন বলেই মারেন তিন চার।
তবে ১৯ বলে ফিফটি করার পর বেশি সময় আর টিকতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ২১ বলে ৫২ রান করেছেন গ্রিন।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর জুটি গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টিভেন স্মিথ। ৬ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৬৬। পরের ওভারে পান্ডিয়ার বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে স্টিভেন স্মিথের ক্যাচ ফেলেন অক্ষর।
এ সময় রানের গতিও কিছুটা কমে আসে। ৮ম ওভারে ম্যাক্সওয়েল কাটা পড়েন রানআউটের ফাঁদে। জীবন পেয়েও বেশি দূর যেতে পারেননি স্মিথ (৯)। যুজবেন্দ্র চাহালের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। টিম ডেভিড ও জস ইংলিসের জুটিতে ১২তম ওভারে এক শ রান পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
১৩ ওভার শেষে যা ৪ উইকেটে ১১৫ রান। পরের ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ২২ বলে ২৪ রান করে ইংলিস ফিরেছেন অক্ষরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। একই ওভারে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরের পথ দেখান ম্যাথু ওয়েডকে। প্রান্ত আগলে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নিতে থাকেন ডেভিড।
১৮তম ওভার শেষে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলের রান ৬ উইকেটে ১৬১-তে পৌঁছে দেন এই ব্যাটসম্যান। ডেভিডকে দারুণ সঙ্গ দেন ড্যানিয়েল স্যামস। ২৫ বলে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ফিফটিও পূরণ করে নেন ডেভিড। এক বলে পরেই অবশ্য হার্শাল প্যাটেলের বলে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৪ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়া থামে ৭ উইকেটে ১৮৬ রানে।