রোহিত বললেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ জেতার পর আতশবাজি ফোটাও’
কথা শুরু করেও থেমে যেতে হলো রোহিত শর্মাকে। না থেমে উপায় কী! বাইরে ওই রকম ক্রমাগত আতশবাজি ফুটতে থাকলে নিজের কথাই যে নিজে শুনতে পাবেন না! বাজি ফোটা যখন থামছিলই না, রোহিত এবার মজা করে বললেন, ‘আরে এখন ফোটাচ্ছ কেন, আমরা বিশ্বকাপ জেতার পর আতশবাজি ফোটাও।’
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে লজ্জার হারই হারতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। ভারতের বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ৫০ রানে অলআউট, যেটা কিনা এশিয়া কাপের ইতিহাসেই সর্বনিম্ন রান। জবাবে ৬.১ ওভারেই ১০ উইকেটের জয় ভারতের।
খেলাটা শ্রীলঙ্কায় হলেও ফাইনালের পর প্রেমাদাসায় ফোটা সব আতশবাজিই ভারতের শিরোপা জয়কে উৎসর্গ করে। উৎসব তো আর পরাজিতদের জন্য হয় না! প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ফোটা আতশবাজিতে তাই নিজদের অধিকারটা পুরোপুরিই দেখলেন ভারত অধিনায়ক। আর সেই অধিকার থেকেই হয়তো তাঁর ওই রসিকতা, ‘এই আতশবাজি ভারত বিশ্বকাপ জিতলেই ফোটাও। আপাতত থাক।’
বাইরে আতশবাজির শব্দটা অবশ্য এরপর এমনিতেই কমে আসে। এরপর রোহিত শর্মা নিজেই সতীর্থদের উদ্দেশে একে একে ফোটাতে লাগলেন প্রশংসার আতশবাজি।
ফাইনালে অভাবনীয় বোলিংয়ের জন্য আলাদা করেই বলেছেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজের কথা। ভারত অধিনায়ক খুব খুশি যে সিরাজ উইকেটের সুবিধাটা নিতে পেরেছেন, ‘একেক দিন একেকজন নায়ক হবে, এটাই স্বাভাবিক। আজ সিরাজ হয়েছে।’
শ্রেয়াস আইয়ারের চোটের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র ৫ মিনিট আগে লোকেশ রাহুল জানতে পারেন, তাঁকে খেলতে হবে। এরপর তো নেমেই সেঞ্চুরি। তাঁর নামটা আলাদা করে উল্লেখ করে রোহিত বলেছেন, এ রকম কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশন বুঝে খেলতে পারা, বিশেষ করে দলের ব্যাটিং পারফরম্যান্সটা ভালো হওয়া এবং শেষে এশিয়া কাপ জয়— সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্ট তাঁদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে ভুগেছে সব দলই। রোহিতের গর্বটাও যেন বোলারদের নিয়েই বেশি, ‘দলে যদি এ রকম চার-পাঁচজন পেসার থাকে, যাদের মধ্যে অনেক রকম স্কিলের সমন্বয়, একজন অধিনায়কের জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না। কেউ হয়তো অনেক জোরে বল করছে, কেউ খুব ভালো সুইং করাচ্ছে, কেউবা অনেক ওপর থেকে বল ছাড়ছে—এগুলো মিলেই একটা বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। আমাদের বোলিংয়ে সেটা আছে।’
স্পিনারদের মধ্যে রোহিত বাঁহাতি কুলদীপ যাদবের কথাও বলেছেন আলাদা করেই, ‘টুর্নামেন্টে চাপের মধ্যেও সে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছে।’
প্রেমাদাসার উইকেট সব সময় কিছুটা অপ্রত্যাশিত আচরণ করে। সে তুলনায় আজ যে সেখানে ব্যাটিং করা খুব কঠিন ছিল, তা নয়; অন্তত ৫০ রানে অলআউট হওয়ার উইকেট তো এটা নয়–ই।
শ্রীলঙ্কার এমন ব্যাটিং নিয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে চাননি ভারত অধিনায়ক। তবে উইকেটের আচরণে নাকি একটু বিস্মিতই হয়েছেন, ‘আমি তাদের ব্যাটিং নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না। তবে উইকেট দেখে অবাক হয়েছি। আশা করিনি উইকেট এ রকম আচরণ করবে। তবে এটাই এ মাঠের বৈশিষ্ট্য। আমাদের তাই সব সময় অপ্রত্যাশিত কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার হয়তো সেই প্রস্তুতিটাই ছিল না।