রশিদকে চুপ করতে বলা ফারুকির বৃহস্পতি তুঙ্গে
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে টপকে সুপার এইট নিশ্চিত করা মোটেও ছোটখাটো অর্জন নয়। এমন কিছুর পর আফগানিস্তান দলে সুখের বাতাবরণ ভর করাই স্বাভাবিক। সময়টা যে আফগান ক্রিকেটারদের দারুণ যাচ্ছে, সেটা তাঁদের কাজকর্মেই বোঝা যাচ্ছে।
আজকের ঘটনাটির কথাই ধরুন। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয়ের পর ম্যাচসেরা ফজলহক ফারুকি ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সে সময় ক্যামেরার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে হাসানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক রশিদ খান। ওদিকে ফারুকি যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ! কোনোভাবেই হাসবেন না। বাধ্য হয়ে অধিনায়ককে ক্যামেরার সামনেই ফারুকি বলেছেন—চুপ করো! এমন বলেই ফারুকি অবশ্য মুখের হাসি আটকে রাখতে পারলেন না।
ফারুকির মুখে হাসি লেগে আছে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই। বল হাতে দলকে হাসির উপলক্ষ এনে দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে মাত্র ১১.২ ওভার বোলিং করে উইকেট নিয়েছেন ১২টি। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৩.৭০ গড়ে। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন্য কোনো বোলার এখন পর্যন্ত ১০ উইকেটও নিতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা পেসার আনরিখ নর্কিয়া।
পাওয়ারপ্লেতেই বেশি বিধ্বংসী ফারুকী। ৭টি উইকেটই পেয়েছেন এ সময়ে। পাওয়ারপ্লেতে তাঁর বেশি উইকেট আর কেউ নিতে পারেননি। নতুন বলে ফারুকির বিশেষত্ব হচ্ছে তিনি দুই দিকেই সুইং করাতে পারেন।
আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুইং শেখার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেছেন ফারুকি, ‘আমার ভাবনা সরল। যখন অনূর্ধ্ব-১৯ বা অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলতাম, ভাবতাম, আমি তো বিশালদেহী মানুষ নই। আমি এমন কেউও নই যে অনেক লম্বা ও দ্রুতগতিতে বোলিং করতে পারি। তখন অন্যদের থেকে আলাদা কিছু করার জন্য নিজের দক্ষতা বাড়ানোর কথা ভাবি…আমি সুইং বোলিং শেখা শুরু করে দিই। আর এখন এটা আমার কাছে সহজ ব্যাপার।’
এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বোলিং পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো। দুটি বিশ্বকাপজয়ী ব্রাভোর কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ পেয়ে আসছেন ফারুকি। তাঁর ভাষায়, ‘ডিজে ব্রাভো, তার সঙ্গে চার বছর ধরে আছি। প্রতিবারই একই দলে তার সঙ্গে খেলেছি। ডেথ ওভারে আমরা কীভাবে বোলিং করব, গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে কীভাবে বোলিং করব, সে বিষয়ে তিনি আমাদের কিছু পরামর্শ দেন। তিনি সবার পরামর্শক।’
ফারুকি আরও বলছেন, ‘তিনি (ব্রাভো) পুরোনো বলের বোলার, ডেথ ওভারের। তবে নতুন বলে আমি যা–ই করি, সেটা আমার দক্ষতা। তিনি শুধু আমার পাশে থাকেন এবং বলেন, “তুমি ভালো করছ” এবং এটাই মূল বিষয়, যদি আপনি সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কিছু সমর্থন পান...তিনি আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন, বিশেষ করে ডেথ ওভারে, চাপের পরিস্থিতিতে কীভাবে বোলিং করব, স্লোয়ার বল কীভাবে ব্যবহার করব, লেংথ বলটা কীভাবে ব্যবহার করব।’