মেয়েদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) প্রথম রাউন্ডের ম্যাচেই ইতিহাস গড়েন নিগার সুলতানা। রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে গত সোমবার সেঞ্চুরি করেন মধ্যাঞ্চলের অধিনায়ক নিগার, যা মেয়েদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি। নিগারের মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষেই সেদিন সেঞ্চুরির দেখা পান উত্তরাঞ্চলের ফারজানা হক।
একই মাঠে এবার তিন অঙ্কের দেখা পেলেন দিলারা আক্তার। পূর্বাঞ্চলের এই ওপেনার আজ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মধ্যাঞ্চলের নাহিদা আক্তারের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে করেন ১০২ রান। ২০ বছর বয়সী দিলারার এই ইনিংস তাঁর ওপর থেকে যেন পাহাড়সম চাপও কমিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচের দুই ইনিংসেই যে তিনি ডাক মেরেছিলেন!
ব্যাট হাতে দিলারার ছন্দে ফেরার সুবাদে পূর্বাঞ্চল ১০০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৬ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে। ফারজানা আক্তার ৬ ও সুরাইয়া ছন্দা ১৩ রানে অপরাজিত। মধ্যাঞ্চলের হয়ে নাহিদা ৩ ও লতা মণ্ডল ২ উইকেট নিয়েছেন।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৫ রানেই সম্পার উইকেট হারায় পূর্বাঞ্চল। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে ১৫৪ রানের জুটি গড়েন দিলারা। জুটিটি ভাঙে দিলারার আউটে। এর পর জান্নাতুলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। স্বর্ণা আক্তারের বলে নাহিদাকে ক্যাচ দেওয়ার আগে জান্নাতুল করেন ৬৫ রান।
ফিফটির দেখা পেয়েছেন চারে নামা শারমিন আক্তারও (৬২)। তাঁর সঙ্গে অধিনায়ক ফাহিমা খাতুন ৭০ রানের জুটি পূর্বাঞ্চলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। দলটি একপর্যায়ে ৩ উইকেটে ২৫০ রান করে ফেলেছিল।
কিন্তু এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মধ্যাঞ্চল। নাহিদা-লতা-সুবর্ণাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৯ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে পূর্বাঞ্চল। শেষ বিকেলটা ভালোভাবেই পার করে দেন ফারাজানা আক্তার ও সুরাইয়া ছন্দা।
‘হাড়কিপটে’ সালমার ৩ উইকেট
রাজশাহীর আরেক ভেন্যু বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমি গ্রাউন্ডে সালমা খাতুনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৮০.৩ ওভারে ২৩৮ রানে অলআউট হয়েছে উত্তরাঞ্চল। এরপর ১৮ ওভারে ২ উইকেটে ৫১ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে রাবেয়া খাতুনের দল পিছিয়ে আছে ১৮৭ রানে।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সালমার বোলিং বিশ্লেষণ এমন—১৭ ওভার-১০ মেডেন-২২ রান-৩ উইকেট। উত্তরাঞ্চলের ব্যাটাররা তাঁর ১০৩ বলের মধ্যে ৯৪টিতেই কোনো রান নিতে পারেননি। ১.২৯ ইকোনমি রেটকে তাই ‘হাড়কিপটে’ বলাই যায়।
উত্তরাঞ্চলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন মিষ্টি রানি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান এসেছে অধিনায়ক সোবহানা মোস্তারির ব্যাট থেকে। রিতু মনি (২৬), ইশমা তানজিম (২৪), ফারজানা হক (২২) থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি।