২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এই অ্যাশেজ কেন বিশেষ...

এই ভষ্মাধারের জন্য লড়বে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াছবি: টুইটার

‘আমরা কেমন ক্রিকেট খেলব, তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই, এমনকি সেটা প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া হলেও।’

কথাটা বেন স্টোকসের। এজবাস্টনে অনুশীলনের ফাঁকে ঘর্মাক্ত দেহে ও পায়ে ব্যান্ডেজ জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেছেন। স্টোকসকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল মর্যাদার লড়াই জিততে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখছেন না। তবে সেই মানসিকতাটা ‘অস্ট্রেলিয়াকে মাঠে দেখিয়ে দেব’ ধরনের নয়। স্টোকস খুব সরল ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ‘বাজবল’ ক্রিকেট খেলতেই মাঠে নামবেন তাঁরা। ওহ, বলাই হয়নি, অ্যাশেজ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। এজবাস্টনে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট।

আরও পড়ুন

ক্রিকেটের দুই কুলীন দলের শত বছরের বেশি প্রাচীন দ্বৈরথে এবারের লড়াই নিয়েও বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেটিও প্রায় মাসখানেক আগে থেকে। অবাক হওয়ার কিছুই নেই। অ্যাশেজ মানেই মাঠের বাইরে কথার লড়াই। আর মাঠের ভেতর?

কিছু বিষয় এবারের অ্যাশেজকে বিশেষত্ব দিয়েছে। সবশেষ ২০১৫ সালে ঘরে অ্যাশেজ জিতেছে ইংল্যান্ড। এরপর তিনটি অ্যাশেজ সিরিজে আর সেই ছাইভষ্ম পুনরুদ্ধার করতে পারেনি ইংল্যান্ড। ‘বাজবল’ ক্রিকেটের কারণেই এবার আশাবাদী স্টোকস। অ্যাশেজ জিততে এটাই তাঁর ‘ব্রহ্মাস্ত্র।’ আর তা হবে না-ই বা কেন?

লড়াই হবে সমানে সমান। নাকি ইংল্যান্ড মানসিকভাবে এগিয়ে, তা বোঝা যাবে আজ মাঠের লড়াই শুরু হলে
ছবি: এএফপি

গত বছর মে মাসে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কোচ ও স্টোকস অধিনায়ক হয়ে আসার পর এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট (বাজবল) খেলে ১৩ টেস্টের ১১টিতেই জিতেছে ইংল্যান্ড। খেলার এই ধরন পাল্টে ফেলার আগে সবশেষ ১৭ টেস্টে ১ জয় পেয়েছিলেন স্টোকসরা। অস্ট্রেলিয়াকে ঘায়েল করতে ‘বাজবল’ ক্রিকেটের বাইরে ইংল্যান্ড যে আর কিছু ভাবছে না, তা বলাই বাহুল্য। আর ইংল্যান্ড ‘বাজবল’ ক্রিকেট খেলা শুরুর পর অস্ট্রেলিয়া দল ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে ৬টি।

ভাবতে পারেন, প্যাট কামিন্সের দল মানসিকভাবে হয়তো একটু পিছিয়ে। সে খবর তো আর জানার উপায় নেই। তবে দলটার নাম কিন্তু অস্ট্রেলিয়া, যারা এই মুহূর্তে টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।

আরও পড়ুন

পৃথিবীর যেকোনো ক্রিকেটার কিংবা দল নিজের সামর্থ্য বুঝতে বা দেখাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো করতে চায়। কারণ একটাই—‘অস্ট্রেলিয়া দলের বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যাগ্র মেদীনি’ মানসিকতা। আর সিরিজটাও যেহেতু অ্যাশেজ, তাই সামর্থ্যের পুরোটাই দেবে অস্ট্রেলিয়া।

যদিও মাঠে অস্ট্রেলিয়া দলের মুখের সেই ধারটা কয়েক বছর ধরেই অনুপস্থিত। যে অস্ট্রেলিয়া আগে শুধু ‘স্লেজিং’ করেই প্রতিপক্ষের মানসিক জোরকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারত, এখন সেসব আর দেখা যায় না। বরং অস্ট্রেলিয়ার সেই ‘ওষুধ’ অস্ট্রেলিয়ার ওপরই প্রয়োগ করতে পারে ইংল্যান্ড। এ নিয়ে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে ভালোই কথা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ২০০৫ সালের সেই মহাকাব্যিক অ্যাশেজের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে এবারের অ্যাশেজ। ১৮ বছর আগের সেই অ্যাশেজ নিয়ে পুরো ম্যানিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। এবার কিন্তু তেমন সুযোগ আছে।

পাঁচ টেস্টের এই সিরিজ আজ থেকে শুরু হয়ে চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। এ সময় ইংল্যান্ডে কোনো বড় ফুটবল প্রতিযোগিতা নেই। প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম শুরু হবে অ্যাশেজ শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পর। অর্থাৎ ক্রীড়াপাগল ইংরেজদের পুরো মনোযোগটাই পাচ্ছে অ্যাশেজ। ‘বাজবল’ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটা দেখতে মুখিয়ে থাকবেন ইংলিশরা।

আরও পড়ুন

এজবাস্টনে আজ শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের টিকিট আগেই শেষ হয়ে গেছে। বিক্রি হওয়া টিকিট ‘রিসেল সাইট’গুলোয় বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ৬৫০ পাউন্ডের মধ্যে। ইংলিশদের আগ্রহটা তাই পরিষ্কার।

কারণ, ১৮ মাসে আগে সবশেষ অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ ব্যবধানে হারের পর ম্যাককালামকে এনে ইংল্যান্ড দল আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যে পসরা সাজিয়ে বসেছে, সেটাই আগ্রহের নেপথ্য কারণ। এই সংস্করণের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে স্টোকসদের পরীক্ষাটা কেমন হয়, সেটা শুধু ইংল্যান্ড কেন, ক্রিকেটবিশ্বেরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।

প্যাট কামিন্স যেমন বলেছেন, অ্যাশেজ এলে ‘গোটা ক্রিকেটবিশ্বই থেমে যায়।’