২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

পাকিস্তানের হারে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জয় মনে পড়ল শোয়েবের

ছবিটি গতকাল পাকিস্তান–যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচের আগে তোলা। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে বিষ্ময়ের জন্ম দিয়েছে পাকিস্তানপাকিস্তান ক্রিকেট এক্স

ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রঙ্গরসিকতা খুব পছন্দ করেন। পাকিস্তানের ‘ডালাস বিপর্যয়’ এর পর তাঁর মস্তিষ্কের সৃষ্টিশীল স্নায়ুগুলোর আরও তৎপর হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। হাজার হোক ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী তো! জাফরের পোস্টে তাই খোঁচাটা থাকল, ‘ভেবেছিলাম পাকিস্তান বনাম যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ, কিন্তু সেটাই হয়ে গেল প্যানিকস্তান বনাম যুক্তরাষ্ট্র।’

আরও পড়ুন

খোঁচাটা ধরতে না পারলে একটু বুঝিয়ে বলা যায়। পাকিস্তান নামটা পাল্টে ‘প্যানিকস্তান’—অর্থাৎ ইংরেজি ‘প্যানিক’ শব্দটি জাফর ইচ্ছা করেই জুড়ে দিয়েছেন। বাংলায় শব্দটির অর্থ ‘আতঙ্ক’ ‘উদ্বেগ’ হতে পারে। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সুপার ওভারে পাকিস্তানের অবিশ্বাস্য হারের পর পোস্টটি করেন ভারতের হয়ে ৩১টি টেস্ট খেলা সাবেক এই ব্যাটসম্যান। যুক্তরাষ্ট্রের দারুণ ক্রিকেটের সামনে পাকিস্তান আতঙ্কে ভুগে ভুলভাল খেলে হেরেছে—জাফরের পোস্ট হয়তো সেটিই বুঝিয়েছে।

পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার অবশ্য রুপক–খোঁচার ধারকাছ দিয়েও যাননি। মনের হতাশাটা সরাসরি বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ নিজের হ্যান্ডলে পোস্ট করা ভিডিওতে শোয়েব বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে জয়টা পাকিস্তানের প্রাপ্য ছিল না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল সব সময়। আমির ম্যাচটা বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। আমির–শাহিন সবাই চেষ্টা করেছে। কিন্তু ম্যাচের ৩৭ ওভার (দুই দলের ইনিংস মিলিয়ে) পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রই এগিয়ে ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ম্যাচটা বের করতে পারিনি।’

আরও পড়ুন

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারে পাকিস্তানের শুরুটা মোটেও ভালো হলো না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ডেলিভারির রেকর্ডগড়া শোয়েব এ প্রসঙ্গে টানলেন ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের হারের উদাহরণ, ‘পাকিস্তানের জন্য হতাশার হার। শুরুটা ভালো হলো না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে আমরা ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি করলাম, যেমনটা করেছিলাম ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে।’

বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯৯ সালের সেই আসরে। পুল ‘বি’ থেকে দুটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ—স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। স্কটল্যান্ডকে ২২ রানে হারানোর পর নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়াকার ইউনিস, ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে শোয়েবও ছিলেন সেই ম্যাচে।

১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ
এএফপি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার ও ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ পাকিস্তান–যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে চোখ রাখতে পারেননি। এক্সে তাঁর পোস্ট, ‘মায়ামি থেকে ফ্লাইটে এই মাত্র নামলাম। ডালাসে কী হয়েছে, বলুন তো!’ আরেক জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের পোস্ট, ‘মুম্বাইয়ে সরদার প্যাটেল টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে উদ্‌যাপন করছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে তোমাদেরই (ভারতীয়) একজন সুপার ওভারে দারুণ বল করেছে।’

আরও পড়ুন

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও বিশ্লেষক মাইকেল ভন এক্সে পোস্ট করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স...পাকিস্তান ক্রিকেটের পারফরম্যান্স আগের মতোই গতানুগতিক।’ ভারতের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং প্রশ্ন তুলেছেন সুপার ওভারে পাকিস্তানের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে।

সুপার ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে বোলিং করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পেসার সৌরভ নেত্রবালকার। আর ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ফখর জামান ও ইফতিখার আহমেদ। ডানহাতি ইফতিখার স্ট্রাইক নিয়ে প্রথম ৩ বলে ৫ রান (১টি ওয়াইড) নিয়ে আউট হন। বাঁ হাতি ফখর তখন অন্য প্রান্তে। যুবরাজ এক্সে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বুঝতে পারছি না, ফখর জামান কেন বাঁহাতি পেসারের বিপক্ষে স্ট্রাইক নিল না। কারণ, (বাঁহাতি) বোলার অ্যাঙ্গেল ব্যবহারের চেষ্টা করায় বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে মারতে সুবিধা হতো।’

একই পোস্টে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি পাকিস্তানকে পরবর্তী করণীয়ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যুবরাজ, ‘যা–ই হোক, চাপের মধ্যে অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল স্মার্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে অভিনন্দন জানাতেই হবে। এখন পাকিস্তানকে ভারতের বিপক্ষে জিততেই হবে। ব্যাটিংয়ে ও ফিল্ডিংয়ে ভালো করতে হবে। ভারত ভালো শুরু পাওয়ায় আমাদের হারানো কঠিন হবে।’
৯ জুন নিউইয়র্কে ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।